শোকাবহ ১৫ আগষ্ট : জাতির জনকের শাহাদাৎবার্ষিকী

প্রকাশিত: ৯:৩৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০১৬

প্রভাতবেলা প্রতিবেদক : আজ রক্তাক্ত ১৫ আগষ্ট। জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে কলঙ্কের কালিমালিপ্ত একটি দিন আজ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতীয় স্বাধীনতাসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কয়েকজন চক্রান্তকারী সেনাসদস্য সপরিবারে হত্যা করেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হচ্ছে আজ জাতির জনকের শাহাদাৎবার্ষিকী।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই দিনে বাঙালির ইতিহাসে এক কালিমালিপ্ত অধ্যায় রচিত হয়েছিল। কতিপয় চক্রান্তকারী সেনাসদস্য ১৯৭৫ সালের এই দিনে নৃশংসভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও স্বাধীনতাসংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। তাদের বর্বরতা থেকে শিশু ও নারীরাও রেহাই পাননি। গভীর ও বিন¤্র শ্রদ্ধায় জাতি আজ তার শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধুসহ সেদিনের শহীদদের স্মরণ করবে। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
ইতিহাসের নৃশংস ও মর্মস্পর্শী সেই রাজনৈতিক হত্যাকা-ের আজ ৪০তম বার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও ঘাতকের বুলেটে নিহত হন তাঁর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুননেসা মুজিব, ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিল। দেশের বাইরে থাকায় ঘাতক চক্রের হাত থেকে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত সেসব খুনি দীর্ঘদিন ছিল বিচারের আওতাবহির্ভূত। দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা সচল হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আদালতের চূড়ান্ত রায় কার্যকর হয়। খুনিদের পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হয়। ছয়জন এখনো পলাতক।
কর্মসূচি: ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দুইদিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে আওয়ামী লীগ। কর্মসূচির মধ্যে ১৫ আগস্ট ২০১৬ সোমবার সূর্য উদয়ক্ষণে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৬টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। এই কর্মসূচিতে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীও যোগদান করবেন।
এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং নগরীর প্রতিটি শাখা থেকে শোক মিছিলসহ বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে আগমন এবং শ্রদ্ধা নিবেদন। সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল। সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। সকাল ১০টায় টুঙ্গীপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। টুঙ্গীপাড়ার কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্লাহ, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ ফারুক খান, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আব্দুর রহমান, মির্জা আজম ও এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। টুঙ্গীপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল কর্মসূচিতে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। সুবিধামতো সময়ে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা। দুপুরে অস্বচ্ছল, এতিম ও দুস্থ মানুষদের মাঝে খাদ্য বিতরণ। বাদ আছর মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। দ্বিতীয় দিন ১৬ আগস্ট মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও বুদ্ধিজীবীগণ আলোচনায় অংশ নেবেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আহ্বান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আগামী ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের সকল স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ