মানবপাচারের ভয়ংকর ছোবলে আক্রান্ত ৩ পরিবার

প্রকাশিত: ৪:৩২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০১৭

সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের চন্ডিপুরে মানবপাচারের ভয়ংকর ছোবলে আক্রান্ত তিনটি পরিবার। প্রভাবশালী দালালের বাড়িতে বারংবার তাগাদা দেওয়া সত্বেও মুক্তি নেই এ তিনটি পরিবারের। জানাগেছে, ঝিনাইদহের গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুরের প্রভাবশালী আলোচিত মানবপাচারকারী দালাল আব্দুস ছাত্তারের ছেলে সিরাজের মাধ্যমে একই গ্রামের নজরুল হুজুরের ছেলে আলামিন তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা, কুতুব মীরের ছেলে বাবু তিন লাখ ষাট হাজার টাকা ও আবু তাহেরের ছেলে কামাল-তিন লাখ পচাঁত্তর হাজার) টাকা দিয়ে প্রতিমাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা বেতনে মালয়েশিয়া চাকুরিতে যাবে মর্মে চুক্তিতে গত মাসের ৩ জুন রওয়ানা হয়।

বেশ কিছুদিন ছেলেদের খোঁজ খবর না পেয়ে দালাল সিরাজের বাড়িতে উক্ত পরিবার গুলো ধর্না দেয়া শুরু করে। একপর্যায়ে দালাল সিরাজ ইন্দনেশিয়ায় আটকে রেখে তাদের বাড়িতে ফোন করার ব্যাবস্থা করে। ছেলেরা মোবাইল ফোনে বাড়িতে জানায়, তারা ইন্দোনেশিয়ায় একটি বদ্ধ ঘরে আটকা আছে। তাদের খাওয়া দাওয়া প্রাই বন্ধ বলে জানান উক্ত তিন পরিবারের অভিভাবকগন। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আটকা ছেলেরা ১৫/২০ দিন প্রায় না খাওয়া অবস্থায় আছে, তাদের দেখার কেউই নেই। ২/৩দিন পর পর সামান্য কিছু খাবার দালালে জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে পালিয়ে যায়। আলামিন, বাবু ও কামাল এখন বদ্ধ ঘরে মৃত্যুর প্রহর গুনছে বলে জানিয়েছেন তাদের অভিভাবক ।

আরও পড়ুন  করোনায় দেশে নতুন আক্রান্ত ১০৪১, মৃত্যু ১৪

ভুক্তভুগি নজরুল, কুতুবমীর ও কামালের পিতা সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে বেশ কিছুদিন ইন্দোনেশিয়ায় উপোশ থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনছে এবং মোবাইল ফোনে বলছে ভিটেবাড়ি বেঁচে হলেও আমাকে এখান থেকে উদ্ধার করো। নইলে আমি ২/৩দিনের মধ্যেই মারা যাব। নজরুল, কুতুব মীর ও আবু তাহের সাংবাদিকদের মাধ্যমে তাদের ছেলেদেরকে ফিরিয়ে পেতে ও দালাল সিরাজ ও তার সহযোগিদের উপযুক্ত শাস্তি দাবী করেছেন ।

এদিকে, চন্ডিপুর বাজারের জনৈক স্কুলের ছাত্র, মশিয়ার, বিল্লাল ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামবাসী, স্থানীয়রা, চা দোকানের মালিক জানান, তাদের চুক্তি অনুযায়ি মালয়েশিয়া না নিয়ে কেন ইন্দনেশিয়া নিয়ে বন্ধ ঘরে আটকে রেখেছে? চুক্তি অনুযায়ি সমস্ত টাকা পরিশোধ করার পরেও কেন তাদের মালয়েশিয়া নিয়ে যাবার কথা বলে ইন্দোনেশিয়া নিয়ে আটকে রাখছে? কি অপরাধ তাদের অপরাধ ? তাছাড়া সিরাজ দালালের কমিশন খাওয়া কিছু প্রভাবশালী স্থানীয় নেতা ও মাস্তানদের জন্য কেউই কথা বলতে সাহস পাচ্ছে না। একই গ্রামের সদ্য শিশু নির্যাতন মামলায় জামিনে থাকা মীর কামরুল সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে সংবাদটি প্রকাশ করতে দিচ্ছেনা। এঘটনায় দালাল সিরাজের বাসায় গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশিরা বলছে সে ঢাকায় আছে। তার মোবাইল (০১৭২৬-২৭৮০৭৫) বন্ধ রাখার কারণে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ