তারেকের নির্বাসিত জীবন: বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০১৮

তারেকের নির্বাসিত জীবন: বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ

পাসপোর্ট বিতর্ককে কেন্দ্র করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে নিয়ে রাজনীতিতে এখন বেশ আলোচনা হচ্ছে।

এ বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন বিএনপির তরফ থেকে প্রথমবারের মতো জানানো হলো যে আরো পাঁচ বছর আগেই তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়ে সেখানে বসবাস করছেন।

২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন তারেক রহমান।

কিন্তু বিএনপির তরফ থেকে বরাবরই বলা হয়েছে, তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছেন।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তারেক রহমানের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি বিএনপি এতদিন বিষয়টি প্রকাশ করেনি কেন?

তারেক রহমানের রাজনৈতিক আশ্রয়ের বিষয়টি প্রকাশ পেলে বিএনপি কি রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো?

বিএনপির দিক থেকে এর পরিষ্কার কোন জবাব পাওয়া যাচ্ছে না।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা মনে করেন, রাজনৈতিক আশ্রয়ের থাকার বিষয়টি দলের জন্য কোন চ্যালেঞ্জ নয়।

রুমিন ফারহানা, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বিএনপিছবি: রুমিন ফারহানা, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, বিএনপি

তিনি বলেন, “আমি মনে করি এটা ওনার জন্য নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। উনি অনেক তরুণ বয়সে রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। আমাদের দেশের বহু নামকরা পলিটিশিয়ান এক্সাইলে (নির্বাসনে) ছিলেন। পলিটিশিয়ানদের লাইফে এক্সাইলটা নাথিং নিউ (নির্বাসন নতুন কিছু নয়।)।”

আরও পড়ুন  আফগানিস্তানে তালেবানের হামলায় ৭০ সেনা নিহত

লন্ডনে অবস্থান করেই তারেক রহমান নানাভাবে বিএনপির নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

গবেষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, এর দুটো দিক আছে।

দীর্ঘ দিন নির্বাসনে থাকলে নেতা-কর্মীদের সাথে বিচ্ছিন্নতা তৈরির ঝুঁকি রয়েছে। এটি হচ্ছে প্রথম দিক।

ভিন্ন আরেকটি দিক হচ্ছে, তারেক রহমানের প্রতি তাঁর দলের সমর্থকদের সহানুভূতি আরো বাড়তে পারে।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, “একটা সময় আমাদের দেশে বাম রাজনীতিতে দেখা যেত যে নেতারা পলাতক জীবন-যাপন করতেন। আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যেতেন। সেসব রাজনৈতিকদের নিয়ে নানা মিথ যেমন তৈরি হতো, আবার জন বিচ্ছিন্নতাও তৈরি হতো। … আবার এটাও ঠিক যে এ দলের (বিএনপি) যারা সমর্থক তারা তাকে নেতা হিসেবেই দেখেন।”

মহিউদ্দিন আহমদ, গবেষকছবি:মহিউদ্দিন আহমদ, গবেষক

পাসপোর্ট বিতর্ক তারেক রহমানের জন্য নতুন কোন ‘রাজনৈতিক ঝামেলা’ তৈরি করবে না বলে মি. আহমদের ধারণা।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা এবং দুর্নীতির বেশ কিছু মামলা আছে। একাধিক মামলায় তাঁর সাজাও হয়েছে।

আরও পড়ুন  সুর ,তাল, লয় সব পাল্টে ফেলছেন ডা. সাবরিনা

মূল ধারার গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আছে। একজন ফেরারি আসামীর বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করা যাবে না বলে আদালত উল্লেখ করেছে।

তারেক রহমানের বক্তব্য সংবাদপত্র কিংবা টেলিভিশনে প্রচার না হলেও তারেক রহমানকে নিয়ে আলোচনা থেমে নেই।

প্রতিনিয়ত তাকে ঘিরে নানা তর্ক-বিতর্ক কিংবা অভিযোগ তোলা হচ্ছে শাসক দল আওয়ামী লীগের তরফ থেকে।

সেটিকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা চলছে মূল ধারার গণমাধ্যমে।

বিএনপি মনে করে তারেক রহমানের বক্তব্য কিংবা বিবৃতি মূল ধারার গণমাধ্যমে না আসলে সেটি তেমন কোন সমস্যা তৈরি করছে না।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা বলেন, ” ফেসবুকে কিন্তু তাঁর ছোট্ট একটা বক্তব্যও মুহূর্তের মধ্যে কয়েক লক্ষ ভিউ হচ্ছে, শেয়ার হচ্ছে। এখানেই তাঁর সাকসেস (সাফল্য)।”

তিনি মনে করেন, সরকারের মধ্যে ‘তারেক ভীতি’ কাজ করছে। সেজন্য তাঁকে ঘিরে ক্ষমতাসীনরা নানা ধরনের বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে বলে বিএনপির ধারণা। 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ