সুনামগঞ্জে কৃষকের লাভের টাকা এখন পিঁপড়ায় খাবে !

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, মে ১৯, ২০১৮

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতাঃ সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে গত দু-বছরের কৃষকদের ক্ষতি কথা বিবেচনা করে সরকারী ভাবে ধানের দাম ও ধান সংগ্রহের পরিমান বাড়ানোর দাবী সর্ব মহলের।

দেনার দায়ে ডুবে আছেন স্থানীয় কৃষকেরা। চলতি বছর ব্যাংক,এনজিও,মহাজনি ঋন নিয়ে কেউ কেউ আবার দার দেনা করে বোরো ফসল রোপন করেছেন। কিন্তু এত ঋণের বোঝা নিয়েও ধান তোলার সময়ে কৃষকের মুখে হাসি নেই।

কারন জেলার বিভিন্ন বাজারের মধ্যমত্বভোগী,ফড়িয়া কৃষক,মিল-মালিক ও সুবিধাবাদী ব্যবসায়ীরা ফাঁদ পেতে আছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাবে তারা। জেলার এবার ছত্রাকের আক্রমে কিছুটা ক্ষতি হলেও বোরো ধানের ফলন ভাল হওয়ায় মহা খুশি হাওরাঞ্চলের কৃষকগন। সরকারী ভাবে ধান সংগ্রহের পরিমানে সর্ব নিন্মের নির্দেশনা এ জেলায় আসায় কৃষকের আনন্দ এখন বিষাধে পরিনত হয়েছে। কৃষক ক্ষতির শিকার হবেন।
সেই লাভের টাকা এখন  পিঁপড়ায় খাবে।

সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারন কার্য্যালয় সূত্রে জানাযায়,জেলার আবাদ জমির পরিমান ২লাখ ৭৬হাজার ৪শত ৪৭হেক্টর। এবার ২লাখ,২১হাজার ৭৫০হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। আর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্র ১২লাখ ১৯হাজার ৪১৪মেট্রিকটন ধান। তবে বিভিন্ন কারনে ধান ১০লাখ মেট্রিকটনের বেশী পাওয়া যাবে বলে জানাযায়। যার মূল্য ২হাজার ৯২৪কোটি ৬৭লাখ ৩৬হাজার টাকা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে সূত্রে জানাযায়,ধান সংগ্রহ করার জন্য নির্দেশনা আসছে সুনামগঞ্জে ৬হাজার মেট্রিক টন। গত দু বছর পূর্বে ছিল ৩০হাজার মেট্রিকটন। গত দু বছর বন্যার কারনে কোন নির্দেশনা ছিল না। এবার ৬হাজার মেট্রিকটন নির্দেশনা এসেছে।

আরও পড়ুন  সিলেটে করোনা আইসোলেশনে কিশোরীর মৃত্যু

জেলার বিভিন্ন হাওরপাড়েরর কৃষকগন জানান-প্রান্তিক কৃষকদের বিক্রয় যোগ্য ধান কৌশলে কিনে নিয়ে শুভংকরের ফাকি দেয় আমাদের (কৃষকদের) গোদাম কর্মকর্তা যোগ সাজোসে জেলার বিভিন্ন বাজারের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী চক্র। সরকার ভুতুর্কি দিয়ে থাকেন তা জাতীয় ভাবে কৃষি ও কৃষকের মঙ্গলের জন্যই। সুবিধা দেবার বেলায় এবার কৃষকদের সাথে ভিন্ন রুপ কেন। কৃষি নির্ভর জাতীয় অর্থনীতিতে এবার কেন কৃষকদের সাথে বৈরী আচরণ। সরকার ধান কিনবে কম আর চাল কিনবে বেশী।

ক্ষোভের সাথে অনেক কৃষক বলেন,সরকার কি কৃষক বাচাঁবে না সুবিধা ভুগী আড়ৎদারদের বাচাঁবে। তাহলে চাল কম কিনে ধান ক্রয়ের পরিমান বাড়ানো হউক আর চাল যদি কেনা হয় তা কৃষকদের কাছ থেকেই কেনা হউক আড়ৎদারকেন। মিল-মালিকরা হাওর থেকে কম ধামে ধান কিনে চাল বানিয়ে দ্বিগুন দামে এই কৃষকদের কাছেই বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করবে দ্বিগুন।

ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী চক্রের কাছে কি ক্ষুদ জনগোষ্টীর স্বার্থ দেশের বৃহত্তর কৃষকগনের স্বার্থ আজ গৌন হয়ে উঠেছে। এমন বৈরী আচরন করা হলে হাওরের লাখ লাখ কৃষক কষ্টের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য না পেলে কৃষি ব্যবস্থা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। কৃষি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হলে অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে।

আরও পড়ুন  ছাতকে অস্তিত্বহীন হাওরের উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ !

জানাযায়,এপর্যন্ত সুনামগঞ্জ ১১টি উপজেলায় জেলার তাহিরপুর,জামালগঞ্জ,সুনামাগঞ্জ সদর,ধর্মপাশা, দিরাই,শাল্লা, জগন্নাথপুর,বিশ্বম্ভরপুর,দোয়ারা বাজার,ছাতকসহ প্রতিটি উপজেলায় দু-এক দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।

আবহাওয়ার বৈরী আচরন ও ধান কাটার শ্রমিক সংকট থাকায় ছেলে,মেয়ে,বউসহ সবাই কে নিয়ে আবহাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ শেষ করছেন কৃষকগন। হাওরাঞ্চলে এখন ৬৫০-৭৫০-৮০০টাকা ধরে ধান বিক্রি হচ্ছে। অথছ সরকারী ভাবে ধানের দাম ধরা হয়েছে ১০৪০টাকা।

সামায়ুন,রফিক,খেলু মিয়া,মইনুলসহ হাওরপাড়ের কৃষকগন বলেন,এবারও জেলার এত উৎপাদনের মাঝে মাত্র ৬হাজার মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হবে শুনেছি। তা একেবারেই নগন্য। এখানে ধান সংগ্রহের পরিমান না বাড়ালে আমাদের কৃষকদের স্বার্থই রক্ষা হচ্ছে না। চলতি বছর ব্যাংক,এনজিও,মহাজনি ঋন নিয়ে কেউ কেউ আবার দার দেনা করে বোরো ফসল রোপন করেছিল কৃষক।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান,এবার ধান সংগ্রহের পরিমান ও দাম বাড়ানোর খুবেই যুক্তিযুক্ত দাবী। কেননা পর পর দু বছর অকাল বন্যায় হাওরে কৃষককের কষ্টের ফলানো বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যায়। এই ক্ষতি পোষাতে সরকার এই বিষযটি বিবেচনা করতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকগন উপকৃত হবে।

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ