এরশাদের জন্য আজমিরে গেছেন বিদিশা

প্রকাশিত: ৮:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০১৯

এরশাদের জন্য আজমিরে গেছেন বিদিশা
বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা: মন ভালো নেই এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশার। প্রিয় মানুষ এরশাদের অসুস্থতায় ভীষণ ভেঙে পড়েছেন তিনি। বিষণ্নতা গ্রাস করেছে বিদিশাকে। তাই এরশাদের সুস্থতা কামনায় ভারতের আজমির শরিফে দোয়া করেছেন।

 

গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে বিদিশা জানান, তার মনটা এখন খুব খারাপ। তিনি এখন আজমির শরিফে রয়েছেন। দোয়া চেয়েছেন দেশবাসীর জন্য, দোয়া চেয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্য।

 

এইচ এম এরশাদ সম্পর্কে বিদিশা বলেন, উনি (এরশাদ) আমার ছেলের বাবা। উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় উনি আমার সন্তান এরিকের পিতা। উনি ভালো না থাকলে আমার ছেলে ভালো থাকবে না। আর ছেলে ভালো না থাকলে আমি ভালো থাকবো না।

 

বিদিশা বলেন, একদিন দুনিয়া থেকে আমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে। উনার (এরশাদ) সঙ্গে আগে আমার আগে কী হয়েছে না-হয়েছে সেই বিচার তো এখন আমি করবো না। উনি উনার সন্তানকে ভীষণ ভালবাসেন। মা-বাবা দুজনের ভালবাসা দিয়েই তিনি এরিককে আগলে রেখেছিলেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি এরিককে হাতছাড়া করেননি। এটাই আমার জীবনের একটি বড় পাওয়া।

আরও পড়ুন  ব্রিটানিয়া’র স্বত্বাধিকারী নাসির আহমদ আর নেই

 

অসুস্থ এরশাদকে দেখতে সিএমএইচে গিয়েছিলেন বিদিশা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ভারতে আসার আগে উনার সঙ্গে দেখা করে এসেছি। আমি তাকে দেখতে সিএমএইচে গিয়েছিলাম। আমাকে দেখে খুব খুশি হয়েছিলেন তিনি। প্রায় ৪০ মিনিট উনি (এরশাদ) আমার হাত ধরে বসে ছিলেন।

 

এদিকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন এরশাদ। রোববার দুপুর ১২.৪০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। জাপা চেয়ারম্যানের সঙ্গে প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ, ছোট ভাই হুসেইন মোর্শেদ ও তার স্ত্রী রুকসানা খান মোর্শেদ আছেন।

 

সিঙ্গাপুর যাওয়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাপার কেন্দ্রীয় নেতারা এরশাদকে বিদায় জানান। এ সময় তার পাশে ছিলেন জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা। বিদায় বেলায় এরশাদকে এদিক-সেদিক তাকাতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষায় করেন তিনি। একাধিক নেতা জানান, এরশাদ মূলত তার স্ত্রী রওশনকে খুজছিলেন। তবে বিদায় জানাতে আসেননি রওশন।

 

যাকে নিয়ে দীর্ঘ সময় সংসার করেছেন এরশাদ। এমনকি রাজনীতিতে এনে এমপি, মন্ত্রী সবশেষ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতাও বানিয়েছেন। সেই স্ত্রী রওশন এরশাদ বিমানবন্দর গিয়ে স্বামী এরশাদকে বিদায় জানানোর প্রয়োজনবোধ করেননি।

 

আরও পড়ুন  ইউরোপ-আমেরিকার বাইরে বাড়ছে পোশাক রপ্তানি

উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গুরুতর অসুস্থ। গত কয়েকদিন ধরেই এরশাদের ক্ষুধা মন্দা বেড়েই চলেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার (২০ জানুয়ারি) তাকে নেয়া হয়েছে সিঙ্গাপুর। এরশাদের এই অসুস্থতায় জাতীয় পার্টির সকল স্তরের নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের মাঝে নেমেছে শোকের ছায়া। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসক ও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা খুব বেশি কিছু করার নেই বলেই মন্তব্য করেছেন। চিকিৎসার পরিভাষায় এটাকে বলা হয় বার্ধক্যজনিত রোগ।

 

১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি এরশাদ জন্মগ্রহণ করেন। এ বছর তিনি নব্বইয়ে পা দেবেন। নয় বছর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখা এই সামরিক একনায়ককে ‘স্বৈরাচারী শাসক’ হিসেবে অভিহিত করা হতো। ৯০ এর গণ অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত এরশাদ কিছুদিন কারাবরণ করলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এখন পর্যন্ত একজন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ