রহস্যেঘেরা অভিযোগ রাফা’র

প্রকাশিত: ৯:০৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০১৯

রহস্যেঘেরা অভিযোগ রাফা’র

কানাইঘাটে স্বামী ও তার পরিবারের নির্যাতনে অসহায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েও সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের খালপাড় গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে আলী আহমদ মাসুদের স্ত্রী দাবীকারী আসমাউল হুসনা রাফা। রোববার(২৭ জানুয়ারী) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আসমাউল হুসনা রাফা তার পৈত্রিক নিবাস ঢাকার মিরপুরে বল্লেও পিতার নাম বা সুনির্দ্ধিষ্ট ঠিকানা উল্লেখ করেননি।
সংবাদ সম্মেলনে তার উপস্থাপনা ও অভিযোগ ছিল অগোছালো রহস্যজনক। তার সাথে থাকা একজন মহিলাকে কখনো বোন আবার কখনো বান্ধবী পরিচয় দেন। তাকে নিরাপদ দুরত্বে বসিয়ে রাখেন। ঐ মহিলা নিজেকে ওসমানী হাসপাতালের নার্স দাবী করলেও বিস্তারিত পরিচয় জানতে চাইলে এড়িয়ে যান। আসমাউল হুসনা রাফা নিজেকে অসহায় দাবী করলেও সংবাদ সম্মেলন শেষে সিলেট প্রেসক্লাব ভবনে দুই যুবক এসে তাকে নিয়ে যায়। যুবকদ্বয় খুব সতর্কভাবে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যায়।
রাফা ব্র্যাক হেলথ প্রোগ্রামে চাকুরি করতেন। কানাইঘাট উপজেলার তালবাড়ী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আলী আহমদ মাসুদ তার স্বামী বলে দাবী করেন আসমাউল হুসনা রাফা। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর দু’জনের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। তবে বিয়ের কাবিন বা কোন প্রমানাদি উপস্থাপন করতে পারেননি তিনি।
তিনি বলেন, আমি ও আমার স্বামী ঢাকার রূপনগরে ভাড়া বাসায় থাকতাম। স্বামী তার বাড়িতে না নিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। এ নিয়ে তার সাথে আমার কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তিনি আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে সিলেটে চলে আসেন। আমি বাধ্য হয়ে রূপনগর থানায় একটি মামলা করি। যার নং-১৩, তারিখ ১৪/১/২০১৮।
রাফা জানান, ওই মামলায় ২২ জানুয়ারি পুলিশ স্বামী মাসুদকে তার কর্মস্থল থেকে গ্রেফতার করে ঢাকায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ৩৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জকিগঞ্জের ফয়জুল মনির চৌধুরীর মধ্যস্ততায় সমঝোতা হলে পুনরায় আমাকে বিয়ে করে সিলেটে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছুদিনের মধ্যে মাসুদ তাকে বিদেশ পাঠনোর জন্য টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করে। চাচাতো ভাইকে দিয়ে তাকে স্টুডেন্ট ভিসায় বিদেশ পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এর মধ্যে আমি দুই মাসের অন্তঃস্বত্বা হলে মাসুদ ও তার বাড়ির লোকজন জোরপূর্বক আমার গর্ভপাত ঘটায়।এ বিষয়ে রাফা স্থানীয় ইউপি সদস্যকে ঘটনার বিষয়টি জানিয়ে কানাইঘাট থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দেন। কিন্তু প্রশাসনের যথাযথ সহযোগিতা পাননি বলে তিনি অভিযোগ করেন লিখিত বক্তব্যে।
আসমাউল হুসনা রাফা বলেন, স্বামীর মামার বাড়ির লোকজনের আশ্রয়ে ছিলাম। গত ১০ ডিসেম্বর স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন মামা শশুরের বাড়ি থেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে মারধর করে। এতে আমার বাম পায়ের আঙুল ভেঙ্গে যায়। এ বিষয়ে গত ১২ ডিসেম্বর কানাইঘাট থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন রাফা। তখন আর তাদের বাড়িতে না উঠে পাশর্^বর্তী বীরদল এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া বাড়িতে উঠেন তিনি।
এই গৃহবধু আরো অভিাযোগ করেন, গত ২০ জানুয়ারি আপসের কথা বলে মাসুদের বাড়িতে নিয়ে শ্বাসরোধ ও নির্যাতন করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক জখম করে। সাদা কাগজে দস্তখত করতে স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন হুমকি দেয়। ২২ জানুয়ারি আত্মীয়রা সিলেটে এসে তাকে ওসমানী হাসাপতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন। পাঁচদিন চিকিৎসা শেষে গত শনিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি।
রাফা বলেন, গর্ভপাত, নির্যাতনসহ নানা ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিকার পাইনি। একজন অসহায় নারী স্বামী পরিবারের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে সঠিক বিচার না পাওয়ায় এখন আমার জীবন হুমকির সম্মুখিন। তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলের সুদৃষ্টি কামনা করেন এবং অভিযোগের তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানান। সুত্র; সংবাদ সম্মেলন

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ