করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই হাজার , আক্রান্ত ৭৫ হাজার

প্রকাশিত: ১২:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০

করোনায় মৃতের সংখ্যা দুই হাজার , আক্রান্ত ৭৫ হাজার

 

বিশ্বভূবন ডেস্ক:

দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীন এখন ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন। মানুষের মাধ্যমে ছড়ানো মহামারিতে প্রতিদিন গড়ে শতাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটছে। কেবল তাই নয়, ভাইরাসটির শনাক্তস্থল চীনের সীমানা পেরিয়ে এর প্রাদুর্ভাব আরও অন্তত ২৪টি রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত গত একদিনে করোনা ভাইরাসে আরও ১৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার নয়জনে পৌঁছেছে। তাছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজারের অধিক। এর মধ্যে নতুন করে ১ হাজার ৭৪৯ জন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

 

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, প্রাণঘাতী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলে যোগ দেওয়া নতুনদের মধ্যে অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের। তাছাড়া পর্যবেক্ষণে রয়েছেন আরও তিন লক্ষাধিক মানুষ।

 

বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।

আরও পড়ুন  রাতে সংঘর্ষের পর দিনে ১৪শ জনকে আসামী করে মামলা

 

এমনকি সিঙ্গাপুরেও কয়েকজন বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা সকলেই বর্তমানে দেশটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

 

এ দিকে করোনা আতঙ্কে দেশের সকল কাগুজে নোট পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং সরকার। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ফ্যান ইয়েফেইয়ের বরাতে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

 

ফ্যান ইয়েফেই বলেছেন, ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ব্যবহৃত সকল কাগুজে নোট দ্রুতই নষ্ট করে ফেলা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এরই মধ্যে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, এবার প্রায় ৬০ হাজার কোটি ইউয়ান নষ্ট করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের সব ব্যাংকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনাও পাঠানো হয়েছে।

 

অপরদিকে ভাইরাসটি কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মারাত্মক আকার ধারণ করেছে সেটি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তাছাড়া হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মী কীভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন সেটি নিয়েও অনুসন্ধান শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি। এই দলে ১২ জন আন্তর্জাতিক ও ১২ জন চীনা গবেষক থাকবেন।

আরও পড়ুন  করোনায় আরো ৬ জন আক্রান্ত: আইইডিসিআর

 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।

 

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।

 

প্রভাতবেলা/এমএ

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ