চীনে করোনা রোগী কমছে, বাড়ছে বাইরের দেশে

প্রকাশিত: ২:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২০

চীনে করোনা রোগী কমছে, বাড়ছে বাইরের দেশে

 

বিশ্বভূবন ডেস্ক:

চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে প্রাণহানি ও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন এই আতঙ্কের কথা জানিয়ে ভয়াবহ রোগটির বিস্তার রোধ কঠিন হয়ে পড়েছে বলে শনিবার হুশিয়ার করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

 

কভিড-১৯ (করোনাভাইরাসের নতুন নাম) মহামারীতে ইতিমধ্যে ইউরোপেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত ডিসেম্বরে চীনের উহানের একটি সামুদ্রিক প্রাণি বেচাকেনার বাজার থেকে প্রথম ছড়ায় এই ভাইরাস। ইতিমধ্যে তা চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরেও ২৫টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ডজনেরও বেশি লোকের। খবর এএফপির।

 

ভাইরাস পজেটিভ প্রমাণিত হওয়ার পর ইতালির ভেনেতো শহরে ৭৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। এতে ১০টি শহর বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইতালি। এছাড়া অর্ধলাখের বেশি লোককে তাদের ঘরেই অবস্থান করতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

 

মহামারী বিস্তারের শুরুতে চীনের হুবেই প্রদেশেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।

 

হুবেইয়ের বাইরেও চীনের কয়েক লাখ লোককে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হয়েছে। দেশটিতে ভাইরাসের সংক্রমণ কমতির দিকে হলেও শুক্রবার কয়েকটি কারাগার ও হাসপাতালেও কয়েকশ’ লোক আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবরে দাবি করা হয়।

 

শনিবার হুবেই প্রদেশের বাইরে নতুন করে ৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬ হাজারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আর চীনের সরকারিভাবে দেয়া তথ্যের ওপর নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুন  মিয়ানমারে ফেসবুক বন্ধ

 

হুবেই কর্মকর্তারা রোগী শনাক্তের পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছেন, হতাহতের সংখ্যায়ও সংস্কার করেছেন।

 

এদিকে শনিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ দল উহান সফরে যাচ্ছেন। এদিকে সংস্থাটির প্রধান টেডরোস আদহানোম গেবরিয়াসুস শনিবার হুশিয়ার করে বলেছেন, আন্তর্জাতিকভাবে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধের সুযোগ ছোট হয়ে আসছে। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ভাইরাসটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে।

 

ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশগুলো যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে তা যেকোনো গতিপথ ধারণ করতে পারে। শুক্রবারে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে করোনায় সংক্রমণের খবর এসেছে। ইসরাইল ও লেবাননের নাগরিকদের প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।

 

ইরান বলছে, করোনায় তাদের চার ব্যক্তি মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১৮। দক্ষিণ কোরিয়ায় সাড়ে তিনশ’ আক্রান্ত ও দুই মৃত্যু ঘটেছে। চীনের বাইরে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছে করোনা।

 

ক্রুজ শিপযোগে এশিয়া সফরে মার্কিন নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই নৌযান ভাইরাসটির বিস্তারের সহায়তা করছে।

আরও পড়ুন  প্রণব মুখার্জী করোনায় আক্রান্ত

 

প্রমোদতরী ডায়ামন্ড প্রিন্সেস থেকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া কয়েকজন অস্ট্রেলীয় ও এক ইসরাইলির শরীরে করোনার পজেটিভ ধরা পড়েছে।

 

জাহাজ থেকে উদ্ধার করে প্রথমে তাদের জাপানে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে পরীক্ষায় ভাইরাস ধরা না পড়ার পরে ডায়ামন্ড প্রিন্সেসের যাত্রীদের ঘরে ফিরতে সুযোগ দেয়ার জাপানি নীতির সমালোচনা বাড়ছে।

 

বৃহস্পতিবার জাহাজের দুই অশীতিপর যাত্রী মারা গেছেন। তারা দুজনই জাপানের নাগরিক।

 

টুইটারে যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, ৩২ ব্রিটিশ ও ইউরোপীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে শনিবার তাদের একটি ফ্লাইট ও চিকিৎসাকর্মীরা জাপানে পৌঁছেছে।

 

করোনাভাইরাস বিস্তারের কারণে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর প্রশিক্ষণ স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ২০২০ অলিম্পিক আয়োজক দেশ জাপান। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বাতিলের কথাও ভাবতে হচ্ছে দেশটিকে।

 

শনিবার চীনে নতুন চারশ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের দিনের তুলনায় যা অর্ধেকেরও কম।

 

নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা পড়ে যাওয়ায় সন্দেহ থেকে তা নতুন করে পর্যালোচনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

 

প্রভাতবেলা/এমএ

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ