করোনায় দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে : সিপিডি

প্রকাশিত: ১:২৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০২০

করোনায় দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে : সিপিডি

 

অর্থনীতি ডেস্ক:

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে বাংলাদেশে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এটিকে মানব ইতিহাসের ভয়াবহ সঙ্কট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা।

শনিবার (২১ মার্চ) ‘করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্যগত ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয়’ ভার্চুয়াল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সংস্থাটি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

সংস্থাটি বলেছে, উৎপাদন, আমদানি-রপ্তানি, স্বাস্থ্য খাত, অর্থায়ন, পর্যটন, প্রবাসী আয়, রাজস্ব, অনানুষ্ঠানিক খাত, খাদ্য নিরাপত্তা এবং সব শেষে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) করোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, সম্প্রসারণমূখী মুদ্রানীতি, অগ্রাধিকার পুনর্বিবেচনা সাপেক্ষে রাজস্ব ও সরকারি ব্যয় ও খাতভিত্তিক বরাদ্দের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। কোভিড-১৯ এর ফলে যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেগুলোর জন্য সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। একই সঙ্গে চিকিৎসার জন্য বর্তমানে প্রয়োজনীয় ঔষধ, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, মেডিক্যাল যন্ত্রপাতি প্রয়োজন মাফিক দেশের বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

আরও পড়ুন  ঈদের ছুটিতেও খোলা থাকবে কাস্টমস

কোভিড-১৯ এর কারণে নগদ প্রণোদনার বাড়তি চাহিদা বাজেটের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করেছে সংস্থাটি।

মূল প্রতিবেদন উপস্থাপনায় ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতে অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ (জিডিপির ০.৯ শতাংশ) বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘকালীন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার লক্ষ্যমাত্রা (জিডিপির ১.১২ শতাংশ) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লুএইচও) পরামর্শের (জিডিপির ৫ শতাংশ) তুলনায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেটের পরিমাণ অনেক কম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৫ শতাংশের মতো প্রতিষ্ঠানের জরুরি পরিবহন সেবা রয়েছে এবং প্রায় ২২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের অ্যালকোহল ভিত্তিক জীবাণুনাশক ব্যবস্থা রয়েছে। কোভিড-১৯ এর মতো জাতীয় সঙ্কট মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে এসব প্রয়োজনীয় সেবাসমূহের ক্ষেত্রে অর্থসংকুলান ও যন্ত্রপাতির ব্যাপক অপর্যাপ্ততা রয়েছে।

আরও পড়ুন : বিদেশে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের দেশে না ফেরার নির্দেশ

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমান প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে এমনিতেই, ২০১৯ অর্থবছরে মোট রাজস্ব ঘাটতি প্রায় ১০০,০০০ কোটি টাকা হবে বলে অনুমিত হয়, আর এর সঙ্গে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে অতিরিক্ত অর্থের যোগ করলে এই ঘাটতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ মহামারির ফলে তৈরি পোশাক খাত, চামড়া শিল্প, পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়া শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন  তীর, রূপচাঁদা, পুষ্টির তেল নিম্নমানের: ৫২ ব্র্যান্ডের পণ্যে ভেজাল

এসব খাতের উদ্ভূত ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা প্যাকেজ বিবেচনা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এ সময় সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রভাতবেলা/এমএ

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ