সিলেট ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ২:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২০
এম, এ আজিজ: বিগত ১৬ মার্চ ২০২০ তারিখটা আমার মতো অনেকেই হয়তো কখনো ভুলবে না৷ প্রখর দুপুর গড়িয়ে যখন মিষ্টি বিকেল, তখন ‘ টক অব দ্যা কান্ট্রি ‘ হয়ে ওঠলেন ডা. দিপু মনি, আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী । কভিড -১৯ আতংকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা ভাইরাল হয়ে গেলো মুহূর্তেই। সেই বন্ধ ধাপে ধাপে বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং কবে শেষ হবে তা আসলে অনিশ্চিত। এই প্রেক্ষাপটে জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থীরা নিজের চেষ্টায় পড়ালেখা চালিয়ে গেলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। তাদের বেশিরভাগের হাতে নেই ইন্টারনেট এক্সেস করার মতো দামী দামী মোবাইল। যে সকল শিক্ষক ভিডিও আপলোড দিয়ে বা অন- লাইনে ক্লাস নিয়ে সহযোগিতা করছেন, নেটওয়ার্ক সমস্যা ও ইন্টারনেটের চওড়া মূল্যের কারণে তা আশানুরূপ সাফল্য বয়ে আনতে পারছে না। এমতাবস্থায় আমি কিছু পরামর্শ শেয়ার করার চেষ্টা করবো।
এসএসসি পরীক্ষায় সদ্য উত্তীর্ণ ছেলেমেয়েদের স্বপ্নের কলেজগুলোতে এখন ঘোর অমানিশা । শীঘ্রই এটা কেটে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে কিছুদিন পরে। টেলিভিশন বা ভার্চুয়াল জগতের মাধ্যমে তোমরা তা জেনে যাবে। ভর্তি নিয়ে খুব মন খারাপ না করে বরং যেকোনো রকমের ভালো বই পড়ে মনকে ভালো রাখতে পারো।
জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড নির্ধারিত বইগুলো তোমরা এখন কিনে নিতে পারো বা অনধিক এক বছর আগের পুরাতন বই সংগ্রহ করে নিতে পারো। যেকোনো বিশ্বস্ত লাইব্রেরিতে গিয়ে ‘মেইন বই’ বললেই তুমি উল্লিখিত বোর্ড বইগুলো পেয়ে যাবে। বোর্ড নির্ধারিত বইগুলোর সাইজ যেমন ছোট, দামও তেমনি কম। আর হ্যাঁ, এই মুহূর্তে টাকা দিয়ে গাইড বই কেনার দরকার নেই। গাইড /নোট বইয়ের দাম যেহেতু বেশি আর কোনো কারণে যদি সিলেবাস পরিবর্তন হয়ে যায় ! অবশ্য বর্তমান প্রেক্ষিতে সিলেবাস পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। একটা অমূল্য পরামর্শ – নিচের দুটি বই অবশ্যই কিনে নেবেঃ
১. বাংলা অভিধান ( বাংলা টু বাংলা)
– বাংলা একাডেমি / সংসদ
২. ENGLISH DICTIONARY
( Eng to Bengali) -Bangla Academy
ঘরে ঘরে এই দুটি dictionary থাকা আবশ্যক। অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ন্যায় তোমাদেরও পড়াশোনা শুরু করে দিতে হবে এখনই আর সব শ্রেণির বাংলা – ইংরেজি পড়তে সহযোগিতা করবে এই অভিধান দুটি।
সকল শ্রেণির সব ছাত্র-ছাত্রী একমত হয়ে স্বীকার করবে যে সব বিষয় তো আর গণিত, রসায়ন বা পদার্থের মতো জটিল নয়। আবার এই বিষয়গুলোর সব পাঠও কিন্তু খুব কঠিন নয়। তাই সহজ ও বোধগম্য বিষয় ও পাঠ যেগুলো, সেগুলো এখন পড়তে থাকো আর পড়তে গিয়ে যা বুঝতে পারবে না তা শিক্ষকমণ্ডলীর জন্য বাকীর খাতায় লিখে রেখো।
on line / VDO / TV /internet/ virtual প্রভৃতি মাধ্যমে পড়ালেখা করা ডিজিটাল প্রজন্মের তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই সহজ এবং উপভোগ্য। ফেইসবুকে তোমরা যত বেশি সময় দেবে পড়ালেখায় ততো বেশি ক্ষতি হবে। হ্যাঁ, ইন্টারনেটেই থাকো কিন্তু ভিডিও গেম সহ সময় অপচয়ের জন্য অপ্রতিদ্বন্দ্বী যত খারাপ দিক আছে তা বর্জন করে ইন্টারনেটের ভালো দিক গ্রহণ করো। মনে রেখো, Google -এর চাইতে বেশি জ্ঞানী শিক্ষক বর্তমান পৃথিবীতে আর নাই।
উন্নত বিশ্বে কিন্তু গাদা গাদা বই, এত এত ক্লাস বা কঠিন কঠিন সিলেবাস বা পড়াশোনায় বেশি বেশি চাপ নেই। আমরা না হয় কয়েক মাস চাপ না নিয়ে কিছুটা ওদের মতো পড়ালেখা চালিয়ে যাই।
একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চলার কথা ছিলো। তোমাদের প্রতি পরামর্শ হলোঃ
ক। প্রত্যেক শিক্ষক প্রতিটি বিষয়ে যা যা পড়িয়েছেন তা খুব ভালো করে রিভিশন দিয়ে পরিপূর্ণরূপে দখলে রাখো। মনে রেখো, যখনই পরীক্ষা হোক না কেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কিন্তু এখান থেকেই প্রশ্ন করবেন।
খ। যে সব পাঠ শিক্ষক/ শিক্ষিকা পড়ান নি,সে সব পাঠের মধ্যে যেগুলো সহজবোধ্য সেগুলো পড়ার চেষ্টা করবে।
গ। দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাস দেখে পড়ালেখা (যতটুকু সম্ভব ততোটুকু) চালিয়ে যাও।
এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মনোকষ্ট আসলে সবচেয়ে বেশি। বারে বারে রিভিশন দিতে দিতে একটু বিরক্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সবকিছু ঠিকঠাক মতো চললে তোমাদের তো এখন মেডিকেল / বুয়েট / ভার্সিটি ভর্তির প্রস্তুতি নিতে মহাব্যস্ত থাকার কথা ছিলো। কাজেই তোমরা এখন তাই করো । হ্যাঁ, একদম তাই। পাঠ্যবইয়ের খুঁটিনাটি সব নিয়ে আসো আয়ত্তে। মনে রেখো,যারা এই ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে ভুল করবে তারা সারা জীবন সাফার করবে । তোমরা এখন একটি ভর্তি গাইড সংগ্রহ করো এবং স্বপ্নের ক্যম্পাসে ভর্তির জন্য নিজেকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে এখনই ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করো।
সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা অন্তত একটা এসাইনমেন্ট করে রাখো। বাংলা ১ম পত্রের প্রত্যেক পাঠের ১ নম্বর প্রশ্নোত্তর লিখে রাখো।অন্যান্য বিষয়েও এভাবে এসাইনমেন্ট সম্পন্ন করে রাখো। ছুটি বাড়তে থাকলে এসাইনমেন্ট বাড়াতে থাকো। পর্যায়ক্রমে ২,৩,৪,৫… নম্বর প্রশ্নোত্তর লিখতে থাকবে । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে তা দেখাবে।
সরকার নিশ্চয়ই শিক্ষা বর্ষ বাড়িয়ে বা সিলেবাস কমিয়ে বা ভিন্ন কোনো উপায়ে তোমাদের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সচেষ্ট ।
সবাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে সচেতনতার সাথে পড়ালেখা চালিয়ে যাও। নিজ নিজ পরিবারকে আরও বেশি সচেতন করে তুলো। জীবন বাঁচলে পড়ালেখা হবে আগের মতো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থতার সাথে বাঁচিয়ে রাখুন – এই দোয়া করি।
এম, এ আজিজ: সহকারী অধ্যাপক, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, নুরজাহান মহিলা ডিগ্রি কলেজ, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি