আলপনার রঙে রঙিন হাওরের সবুজ প্রকৃতি

প্রকাশিত: ১:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০২৪

আলপনার রঙে রঙিন হাওরের সবুজ প্রকৃতি
প্রভাতবেলা ডেস্ক: বর্ষবরণে এবার আলপনার রঙে রঙিন হয়েছে কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়ক পথ। যা বিশ্বের দীর্ঘতম আলপনা অঙ্কন বলে দাবি করেছেন আয়োজকরা। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে নাম লেখানোর জন্যও আবেদন করবেন তার। যার নাম দেওয়া হয়েছে আলপনায় বৈশাখ-১৪৩১ উৎসব।

রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখে সকাল সাড়ে ১০টায় মিঠামইন জিরো পয়েন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তুলির আঁচড়ের মাধ্যমে আলপনায় বৈশাখ উৎসবের সমাপ্তি করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

অনুষ্ঠানে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় এশিয়াটিক এক্সপেরিয়েনশিয়াল মর্কেটং লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন জিরোপয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়কে আলপনা অঙ্কনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশের সবচেয়ে বড় আলপনা উৎসব ‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’। রোববার সকালে এ আলপনা অঙ্কন শেষ হয়।

আরও পড়ুন  সুলতান মনসুর শপথ নিলেন

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থেকে অষ্টগ্রামের ১৪ কিলোমিটার অলওয়েদার সড়কে প্রায় ৭০০ শিল্পীর তুলিতে বৈশাখের মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং একইসঙ্গে বিশ্বরেকর্ড গড়ার অনবদ্য প্রত্যয় নিয়ে শেষ হলো এ উৎসব।

এ অঞ্চলের মানুষেরা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আল্পনা দেখতে এসেছেন দর্শনার্থীরা।

হাওরের গৃহবধূ নিঝুম আফরোজ জানান, আমাদের বৈশাখ মানে ধান ঘরে তোলার আনন্দ। তবে এবারের বৈশাখে আলপনার রঙে রঙিন হলো আমাদের অলওয়েদার সড়ক। এতে আমাদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।

ঘুরতে আসা ব্যাংকার মাসুদুর রহমান জানান, আসাধারণ অনুভূতি আসলে ভাষায় প্রকাশ করারমতো না। কিশোরগঞ্জের পুলেরঘাট থেকে ঘুরতে আসছি। সকাল ৬ টায় ঘুম থেকে উঠে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি ইতিহাসের সাক্ষী হতে।

মুজাহিদ সরকার নামে আরেক দর্শনার্থী জানান, হাওরের এই অলওয়েদার সড়কটি এমনিতে সারাদেশে ভাইরাল। এবার এখানে আলপনা অঙ্কন করায় হাওরে আরও পর্যটক আসবে। এতে হাওরের সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্রময় সব উৎসব উদযাপনে বাংলালিংক গভীরভাবে দায়বদ্ধ। দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ এ সব উৎসবের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই আয়োজন ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও দেশীয় উৎসবকে তুলে ধরার একটি প্রয়াস।’

আরও পড়ুন  পুণ্যভূমি সিলেটে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুপালী চৌধুরী বলেন ‘আলপনায় বিশ্বরেকর্ড গড়তে এ অংশগ্রহণ নিজেদের সামর্থ্যকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মাধ্যমে ইতিহাস তৈরিতে আমাদের উৎসর্গকে প্রকাশ করে। সামনের দিনগুলোতেও আমরা এমন রঙিন ও স্মরণীয় বৈশাখ পালন করতে আশাবাদী।’

এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইরেশ জাকের আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশব্যপী বৈশাখের এ আয়োজনগুলো বাঙালি সংস্কৃতি ও সৃষ্টিশীলতার বহিঃপ্রকাশ। বাংলালিংক ও বার্জারের সঙ্গে যৌথভাবে ‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’ আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।

আল্পনা উৎসবের সমাপনীতে অংশ নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর বিরতির পর পহেলা বৈশাখের আলপনার উৎসব আবার ফিরে আসায় বাঙ্গালী চেতনার উদযাপন আবার তার চেনা রূপ লাভ করেছে। আয়োজকদের প্রতি আমি শুভকামনা জানাচ্ছি ও আশাবাদ ব্যক্ত করছি যেন তারা ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন করে দেশবাসীকে আনন্দে ভাসাতে পারে। এ আয়োজন ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাবে।’

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ