ইয়ুথ সেন্টারের কাছে শোচনীয়ভাবে হারলো অনির্বাণ!

প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪

ইয়ুথ সেন্টারের কাছে শোচনীয়ভাবে হারলো অনির্বাণ!

 

 

তানজীল শাহরিয়ার

 

মাঘ মাসের মধ্যাহ্ন। শীত শীত ভাব প্রায় উধাও, রোদের আঁচে কিছুটা সময় পুড়লে গায়ে অস্বস্তি শুরু হয়। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে তখন ইয়ুথ সেন্টারের বিপক্ষে ব্যাট করছে অনির্বাণ ক্রীড়া চক্র। লক্ষ্য ছিলো ১৫৫ রান। কিন্তু, অনির্বাণ ব্যাটারদের উইকেটে যাওয়া-আসার যে মিছিল চলছিলো, তা দেখে কেউ যদি ভেবে বসে মধ্য গগনে তেতে ওঠা সূর্যের তাপে ২২ গজ ‘তপ্ত মরুভূমিতে’ পরিণত হয়েছে। যেখানে কিছুসময় পা রাখলেই পা বেয়ে বেয়ে উত্তাপ মস্তিষ্ককে উত্তপ্ত করে দিচ্ছে। তাই অমন কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিং করে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসছেন একের পর এক ব্যাটার। তাকে দোষ দেওয়ার জো ছিলো না।

 

ইয়ুথ সেন্টারের তরুণ ক্রিকেটারদের বিপক্ষে অনির্বাণের ব্যাটারদের ‘আত্মাহুতি’ ১৫৫ রানের লক্ষ্যকে অনতিক্রম্য করে তুলেছে। উদ্বোধনী ব্যাটার রাজু সাদমানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরত যান। ম্যাচের ২য় ইনিংসে উইকেট পতনের এটাই ছিলো সূচনা। কে জানতো, উইকেট পড়ার সংখ্যা অভার সংখ্যার সঙে তুমুল ‘প্রতিদ্বন্দিতা’ উপহার দেবে। অথচ, ম্যাচটা ছিলো দুই দলের লড়াই!

 

আজির এক প্রান্তে কিছুটা সময় ব্যাট করলেও, অন্য ব্যাটারদের মধ্যে উইকেটে থাকার কোনো পণ ছিলো না। যেন অক্রিকেটীয় সব শট খেলে উইকেট ছুঁড়ে দেওয়ার অলিখিত ‘প্রতিযোগিতা’ চলছিলো। সিলেট লিগের অন্যতম সেরা এবং ঐতিহ্যবাহী ক্লাব অনির্বাণ ক্রীড়া চক্রের এমন ব্যাটিং পারফরম্যান্স হতাশাজনক।

আরও পড়ুন  সিলেটের টেষ্ট অভিষেকটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে আশা অলক কাপালীর

 

অবশ্য শেষ পর্যন্ত ‘তপ্ত মরুর’ বুকে দূর্বিষহ ব্যাটিং প্রদর্শনীর যবনিকাপাত ঘটেছে। উইকেট আর অভারের মধ্যে যে ‘লড়াই’ ছিলো এগিয়ে যাওয়ার তাতে ‘জয়’ পেয়েছে উইকেট! ১০ উইকেট যখন পড়েছে তখন অভারের ঘরে ১১.২ লেখা ছিলো। সাকল্যে রান সংখ্যা ছিলো ৪৭!

 

অনির্বাণের.৬ ব্যাটারকে একাই প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়ে দিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার ফাহাদ। পরিস্থিতি বুঝে বল করে আরেক স্পিনার সালমানও তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট।

 

এই লিগে ৮ বার ব্যাট করতে নেমে একশো রানের নিচে ৩য় বার অলআউট হলো অনির্বাণ।

 

সকালে টসে জয়লাভ করে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ইয়ুথ সেন্টার আজুয়াদ আর শাকিলের দারুণ ব্যাটিংয়ের সুবাদে ১৮.২ অভারে ১ উইকেট খুইয়ে ৭৪ রান তুলে ফেলেছিলো। বড়ো রানের সম্ভাবনা জাগিয়েও ইয়ুথ সেন্টারের ব্যাটিং লাইন আপ ধসে যাওয়ার কারণ অফ স্পিনার বাহারের দুর্দান্ত বোলিং। ফর্মের তুঙ্গে থাকা এই স্পিনার আজুয়াদ এবং শাকিলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরত পাঠান।

আরও পড়ুন  হায়দরাবাদের স্বল্প রানের টার্গেটও ছুঁতে পারেনি মুম্বাই

 

এক প্রান্ত থেকে বাহার রায়হান, সালমান, তাহমিদকে আউট করে ইয়ুথ সেন্টারের ভিত নাড়িয়ে দেন। অন্য প্রান্তে মুকুল হিসেবি বোলিং করে রানের চাকাকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। তবে আজুয়াদের দায়িত্বশীল ইনিংসের কারণে ইয়ুথ সেন্টার স্কোরবোর্ডে দেড়শো ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। লোয়ার মিডল অর্ডারে ফাহাদ এবং সানির ব্যাটেও কিছু রান আসায় অলআউট হবার আগে ইয়ুথ সেন্টার ১৫৪ রান তুলতে পেরেছে।

 

তাহমিদকে বোল্ড করে ম্যাচে ৫ উইকেট পাওয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেন বাহার।

 

ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন ইয়ুথ সেন্টারের স্পিনার ফাহাদ।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর: 

 

ইয়ুথ সেন্টার ১৫৪ (৩৫.১ অভার)

আজুয়াদ ৫৮

শাকিল ৩২

সানি ১১

ফাহাদ ১০

 

বাহার ৯-৩-৩৭-৫

মুকুল ১০-০-২৭-২

জয় ৯.১-২-৩৮-২

আসাদ ৬-০-৩৮-১

 

অনির্বাণ ক্রীড়া চক্র ৪৭ (১১.২ অভার)

আজির ২১

শ্রাবণ ১৩

 

ফাহাদ ৫-১-১২-৬

সালমান ২.২-০-৫-২

সাদমান ৩-০-১৮-২

 

ফলাফল: ইয়ুথ সেন্টার ১০৭ রানে জয়ী

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ