একজন সাদা মনের মানুষের প্রস্থান

প্রকাশিত: ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০২০

একজন সাদা মনের মানুষের প্রস্থান
সাঈদ চৌধুরী,লন্ডন♦ খুবই ভালো মনের একজন মানুষকে হারালাম আমরা। সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের নন্দির গাও নিবাসী মাস্টার শামসুদ্দিন আজ ইন্তেকাল করেছেন। চলে গেছেন না ফেরার দেশে। ইন্না-লিল্লা-হি ওয়া ইন্না-ইলাইহি রা-জিউ‘ন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শোকাকুল হয়ে ওঠেন উত্তর সিলেটের মানুষ।

 

আমাদের এলাকায় তিনি ছিলেন মানবিক গুণ সম্পন্ন শালিসি ব্যক্তিত্ব। সততা, সত্যনিষ্ঠা ও সত্যবাদিতা সহ অনেক মহৎ গুণের অধিকারী ছিলেন। আমার আব্বা যখন স্যারপঞ্চ ছিলেন, তখন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়ভাজন। এলাকার শিক্ষার প্রসার ও সামাজিক সংহতি যাঁদের পায়ে ভর করে দাঁড়িয়েছে, তিনি তাদের অন্যতম।

 

মাস্টার শামসুদ্দিন ছিলেন একজন ধর্মভীরু। সারাটা জীবন তিনি সত্যকে আঁকড়ে ধরে ছিলেন। প্রতিনিয়ত চলনে-বলনে, আচার-আচরণে, আমানতদারিতায় তিনি ছিলেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মহান আল্লাহ প্রদত্ব ও রাসুল (সা.) পদর্শিত জীবন ব্যবস্থা বাস্তবায়নেও ছিলেন সক্রিয়।

 

মাস্টার শামসুদ্দিন বিশ্বাস করতেন, স্রষ্টার কাছে জীবনের হিসাব দেয়া ও জবাবদিহির ভয় জাগরূক রাখা সততা অবলম্বনের জন্য সহায়ক। ব্যবহারিক জীবনেও সততার প্রয়োগ এবং সামাজিক জীবনে অনুশীলন আবশ্যক। সে ক্ষেত্রে সত্যবাদীদের সঙ্গে ওঠা-বসা, তাদের সাহচর্য, তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা খুবই উপযোগী। সমাজের মুরুব্বীয়ানরা যাতে উপযুক্ত মর্যাদা হতে বঞ্চিত না হন, কেউ যাতে আলেম-ওলামা ও প্রবীন লোকদের উপহাস বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য না করে সে বিষয়ে সরব ও সচেতন ছিলেন।

আরও পড়ুন  শেখঘাট পায়োনিয়ার্সের কাছে শেষ ম্যাচ হারলেও শিরোপা জিতেছে হোয়াইট মোহামেডান!

 

পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নামাজের সময় পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মুখ ফেরানোতেই তোমাদের জন্যে সওয়াব বা পূণ্য নয় বরং পূণ্য তার, যে আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতাগণ ও ঐশী গ্রন্থসমূহ এবং নবীদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। আর সম্পদের প্রতি আসক্ত থাকা সত্ত্বেও যারা আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, পথিক ও ভিক্ষুকদের এবং দাসত্ব মোচনের জন্যে ধন-সম্পদ দান করে ও নামাজ প্রতিষ্ঠাসহ যাকাত দান করে, আর ওয়াদা করলে তা পূরণ করে এবং যারা অভাব, বঞ্চনা ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য ধারণ করে, এরাই ঈমানের দাবিতে কথায়, আচরণে ও বিশ্বাসে সত্যবাদী এবং এরাই ধর্মভীরু।‘ (২:১৭৭)

 

একজন সাদা মনের মানুষ মাস্টার শামসুদ্দিনকে সেই ছোট বেলা থেকে দেখে এসেছি। নন্দিরগাও স্কুল ছিল আমার প্রথম পাঠশালা। সেই থেকে অনেক স্মৃতি। অনেক দিনের হৃদ্যতা। এলাকাবাসী নিশ্চয়ই তাঁর অভাব অনুভব করবেন। মহান আল্লাহর কাছে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ