এমসি কলেজ শিক্ষার্থীকে অপচিকিৎসায় ‘ হত্যার ব্লু প্রিন্ট ‘

প্রকাশিত: ১১:৫২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫

এমসি কলেজ শিক্ষার্থীকে অপচিকিৎসায় ‘ হত্যার ব্লু প্রিন্ট ‘

 প্রভাতবেলা প্রতিবেদক ♦ ফ্যাসিস্ট খুনী সন্ত্রাসী ‘২৪ এর পরাজিত শক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ, তাদের দোসর,  আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা গোস্টী সিলেট এমসি কলেজে শিক্ষার্থী আহত ঘটনা নিয়ে নীল নকশায় মেতে উঠেছে। পরিস্থিতি নিজেদের অনূকূলে নিতে এবার তারা ‘ লাশের তালাশে’ হত্যার খেলায় মেতে উঠেছে। তাদের এই পাশবিকতায় ‘ বলির পাঠা’ বানানো হচ্ছে আহত শিক্ষার্থী মিজানকে।

গত বুধবার দিবাগত রাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সহপাঠীদের হামলায় আহত হন মিজানুর রহমান মিজান।  তাকে ভর্তি করা হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।  চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার বেলা ২ টায় হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেন।

কিন্তু সন্ধ্যা ৭ টায় তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ৩/৪ জন ও তাদের আশ্রয়দাতা ৩জন মিলে মিজানকে ওসমানীতে ভর্তি করা হয়।

মিজান নিউরো সার্জারি বিভাগের পিও- ৫ নং বেডে চিকিৎসাধীন।

মিজানকে দ্বিতীয় দফা ভর্তি যে অসৎ উদ্দেশ্যে এবং চক্রান্তমূলক তা পরিস্কার হয় আজ শুক্রবার দুপুরে।

দুপুর সাড়ে ১২ টায় রোগীদের অধিকাংশ এটেনডেন্স যখন জুমআার নামাজে। তখনি একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক মিজানের মেডিকেল ফাইল দেখতে আসেন। এসময় মিজানের ট্রিটমেন্ট শীটে কিছু ঔষধ লিখে দেন। জরুরী ভিত্তিতে এগুলো খাওয়ানোর আদেশ দেন। এসময় ঐ ওয়ার্ডে কর্তব্যরত দুইজন মহিলা ইন্টার্ন চিকিৎসক আপত্তি জানান। এগুলো অপ্রয়োজনীয় জীবন বিধ্বংসী ঔষধ বলেও তারা প্রতিবাদ করেন।

আরও পড়ুন   সিলেটের ২৫ ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন

তখন আগন্তুক ঐ ইন্টার্ন চিকিৎসক তাদের ধমক দিয়ে তার কথা শুনতে বলেন। তিনি নিজেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা বলে পরিচয় দেন।

এই প্রতিবেদক খোঁজ নিয়ে জানেন, আগন্তুক ঐ ইন্টার্ন চিকিৎসক এর নাম আল মামুন। তিনি গাইনী ওয়ার্ডে কর্মরত। গাইনী ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিউরো বিভাগীয় ওয়ার্ডে গিয়ে সেবা কার্যক্রমের কোন বিধান নেই।

এ ঘটনায় খোদ চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

সন্ধ্যায় ইন্টার্ন চিকিৎসক আল মামুনের বক্তব্য জানতে এ প্রতিবেদক তার কাছে গেলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় জেনে সটকে পড়েন।

চিকিৎসাধীন মিজান এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

সচেতন মহল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখা দরকার। সংশ্লিষ্ট চক্রান্তকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তারা।

প্রসঙ্গত, বুধবার দিবাগত রাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ব্যক্তিগত ঘটনায় হামলার শিকার হন তালামিযে ইসলাম এমসি কলেজ শাখার সহ তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক মিজানুর রহমান। এক তরুণীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।

মিজান ঘটনাকে আড়াল করতে দায় চাপায় ছাত্রশিবিরের ওপর। এ ঘটনায় জোরালো প্রলেপ দেয় ছাত্রদলের একটা অংশ। কুয়েট এর ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কেন্দ্র ছাত্রদলের একটা নির্দেশনাও আসে সিলেটে।  তবে সিলেট ছাত্রদলের দায়িত্বশীল অংশ মিথ্যাচারের রাজনীতিতে এগুতে আগ্রহী হননি।

আরও পড়ুন  আজিজ আহমদ সেলিমের জানাযা ও দাফন বাদ জোহর

ঘটনার পরপর এমসি কলেজ অধ্যক্ষ ও শিক্ষকমন্ডলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আহত শিক্ষার্থীকে গিয়ে ওসমানী হাসপাতালে দেখে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ঘটনায় এই মারামারি হয়ে। আহত শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর নয়। ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দেবার কথা।

 

এ ঘটনায় ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী গণমাধ্যমে জানান, হৃদয়ের হাত কিছুটা ফুলে গিয়েছিল, তবে এক্স-রেতে কোনো ভাঙা ধরা পড়েনি। আর রিয়াদ সামান্য আহত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, পায়ের রগ কাটার মতো কোনো চিহ্ন আমার চিকিৎসকরা পাননি। রগ কাটার মত বড় ইস্যু নিয়ে কোনো বক্তব্যও আমাদের চিকিৎসকরা দেননি। হৃদয়ের যে পায়ে আঘাত লেগেছে, সেটির যথাযথ চিকিৎসা করা হয়েছে। যদিও সেটি খুব গুরুতর নয়।

এ প্রসঙ্গে ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাঈল খান, এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো নেতা–কর্মীরা জড়িত নন। ছাত্রশিবিরের জনপ্রিয়তা নষ্ট করতে তৃতীয় একটি পক্ষ কলকাঠি নাড়াচ্ছে। মূলত কলেজ ছাত্রাবাসে মিজানুর রহমান নামের ওই শিক্ষার্থী ও একই কলেজের জাকিরুল ইসলাম নামের অন্য একজন শিক্ষার্থী নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছেন। এতে দুজনই আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ