সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ১২:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২৩
অর্থনীতি ডেস্ক:
এপ্রিল-জুন সময়ে অর্থাৎ এই ৩ মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। ৬ মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) বেড়েছে ৩৫ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। আর ১ বছরে (জুন-২২ থেকে জুন-২০২৩) খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণ সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
অথচ বাংলাদেশ ব্যাংক দেখাচ্ছে মাত্র ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এটা সঠিক নয়। উচ্চ ঋণখেলাপি থেকে বাঁচার উপায় একটাই-সেটা হচ্ছে একটা ঋণখেলাপি ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। সে ট্রাইব্যুনালে প্রত্যেক ব্যাংকের শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির বিচার করতে হবে। খেলাপিদের সব সম্পদ ক্রোক করতে হবে। জেলে পাঠাতে হবে। এ ট্রাইব্যুনালের বিচারে কোনো আপিলের সুযোগ থাকবে না। এ ছাড়া খেলাপি থেকে বাঁচার আর কোনো উপায় নেই।
মহামারি করোনার প্রকোপের কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঋণ পরিশোধে পুরোপুরি ছাড় ছিল। গ্রাহককে ঋণ শোধ না করেও ঋণখেলাপি থেকে মুক্ত রাখার সুযোগ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কম সুদে ঋণ নেওয়া ও ঋণ পরিশোধে কিছুটা ছাড় ছিল ২০২২ সালেও। চলতি বছরও ঋণের কিস্তির অর্ধেক পরিশোধে রয়েছে বিশেষ ছাড়। এমন সব সুযোগের পরও ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না গ্রাহক। যার কারণে নানা উদ্যোগ নিয়েও খেলাপি ঋণ কমাতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে খেলাপিদের বিশেষ ছাড় বন্ধ না হলে খেলাপি ঋণ কমবে না-বলছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে ঢালাওভাবে সুবিধার কারণে ব্যাংকের পাশাপাশি গ্রাহকও বিপদে পড়বে।
৩ মাস আগেও মার্চ প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। প্রথম ৩ (জানুয়ারি-মার্চ) মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। এছাড়া এক বছরে অর্থাৎ গত বছরের জুনের তুলনায় খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। ২০২২ সালের জুনে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা।
খেলাপিদের বিশেষ ছাড় বন্ধ না হলে খেলাপি ঋণ কমবে না বলে জানিয়েছেন অর্থনীতি বিশ্লেষক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, খাতা-কলমে দেখানো হচ্ছে এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবে এই অঙ্ক অনেক বেশি। কারণ এখানে পুনঃতফসিল ও পুনঃগঠন করা ঋণের হিসাব নেই, এগুলো যোগ করলে খেলাপি আরও বাড়বে। তিনি জানান, খেলাপি ঋণ ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা মানে ব্যাংকিং খাতে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে। এতে করে ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা কমবে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাবে। ফলে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে।
করণীয় জানতে চাইলে সাবেক এই অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এখন সুবিধা বন্ধ করে খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, যেন আইনে গিয়ে বছরের পর বছর ঝুলে না থাকে। এছাড়া খেলাপিদের সম্পদ নিয়ে নিতে হবে। কঠোর অবস্থায় যাওয়া ছাড়া এখন আর কোনো বিকল্প উপায় নেই বলে জানান এ অর্থনীতিবিদ।
জানা গেছে, ডলার সংকটে পড়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ঋণের দারস্থ হয় বাংলাদেশ। ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭৬ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। বাকি ছয় কিস্তির মধ্যে নভেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারিত আছে। ধাপে ধাপে ঋণ ছাড়ের ক্ষেত্রে সংস্থাটি ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ধীরে ধীরে কমিয়ে আনার শর্ত দিয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের নিচে নামাতে হবে। সব শেষ প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণের হার ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। আর সরকারি ব্যাংকে খেলাপি ঋণের হারও নির্ধারিত মাত্রার অনেক উপরে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের অন্যতম শর্ত হচ্ছে রাষ্ট্র খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা। অথচ এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি