সিলেট ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৩
সম্প্রতি নাটোর শহরের সদরের দিঘাপতিয়ায় ঐতিহাসিক উত্তরা গণভবনের পাশে গিয়ে দেখা গেল, একটি বিয়ে বাড়িতে আনন্দ, উচ্ছ্বাস, হৈ, হুল্লোর চলছিল। এরই মাঝেই কনে সুকৃতি আদিত্য ও বর নাবিন আদনান গাছের চারা রোপন করে তা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পূর্ব পরিচয় থাকলেও দুই পরিবারের সম্মতিতে ঘরোয়া পরিবেশেই বিয়ে সম্পন্ন হয় সুকৃতি-নাবিনের। আর বিয়ের অন্যতম আকর্ষন ছিল দেনমোহর হিসাবে পরিবেশ বান্ধব গাছ। দেনমোহর হিসাবে আপাতত বরের কাছ থেকে ৫টি ফলদ ও বনজ গাছ নেন কনে সুকৃতি। এমন ব্যতিক্রম বিয়েতে প্রশংসায় ভাসছেন সুকৃতি ও নাবিন দম্পতি।
কনে সুকৃতি আদিত্য বলেন, বর্তমানে অনেক বিয়েতে দেনমোহর নিয়ে যে অসুস্থ প্রতিযোগিতাটা চলছে। আমার মনে হয় তা থেকে বেড়িয়ে আসা উচিত। কারণ বিয়ে মানেই আর্থিক লেনদেনটা মুখ্য না। দু’টি মানুষের মনের মিল হওয়াটাই বড় ব্যাপার। সেখান থেকে মনে হলো যে যদি এমন কিছু করা যায় যা আমাদের প্রকৃতিকেও সুস্থ রাখবে। সেই সাথে আমাদের সম্পর্কটাও সুস্থ রাখবে। তাই নতুন জীবন শুরু করার পূর্বে আমার মনে হয়েছে, গাছ একটা দারুণ উপকরণ হতে পারে, যেটার মাধ্যমে পরিবেশটাও সুস্থ থাকলো, আমরাও খুশি থাকলাম পরিবেশের সুস্থতা দেখে।
কনের বাবা এম. আসলাম লিটন জানান, তার মেয়ে সুকৃতি আদিত্য সিন্ধান্ত নিয়েছিল যে, বিয়েতে সে মোহরানা নেবে না। নিলেও সে একটা টোকেন নিতে চায়। অভিভাবক হিসাবে তারা সুকৃতির সেই সিন্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার মেয়ে মনে করে মোহরানা নিয়ে টাকার অংক বাড়িয়ে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেই প্রতিযোগিতায় সুকৃতি থাকবে না। সমাজকে সে একটা বার্তা দিতে চায় যে, মোহরানাটা মুল নয়। মুলটা হচ্ছে দু’টি মানুষের বন্ধন। দু’টি মানুষের হৃদয় মন এক হয় বিয়ের মধ্য দিয়ে। এই বন্ধনটাই আসল। কোন অর্থনৈতিক বা সম্পদের জায়গায় গিয়ে চুক্তিবন্ধ হওয়ার চাইতে আত্মার চুক্তিবন্ধ হওয়া বেশী জরুরী। সেই জায়গাটা সুকৃতি অনুভব করেছে। বাবা হিসাবে তিনি গর্বিত যে তার মেয়ে এমন ব্যতিক্রম একটা সিন্ধান্ত নিয়েছে।
এ ঘটনায় প্রথমে বরযাত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশী রীতিমতো অবাক হয়ে গেলেও পরে সকলেই প্রসংশায় ভাসিয়েছেন নব দম্পতিকে। জীবনের প্রথম এমন বিয়ে দেখে রীতিমতো হতবাক তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা গুলজান বেগম জানান, তিনি তার জীবনে এমন ব্যতিক্রম বিয়ে দেখেননি। বিয়ে বাড়িতে এসে বর কনের গাছ লাগানো দেখে তার খুবই ভাল লেগেছে। নতুন দম্পতি সুখে শান্তিতে থাকুক এমন শুভকামনা জানান তিনি।
সৈয়দ মাসুম রেজা নামে এক সাংস্কৃতিকর্মী বলেন, দেনমোহরে সবসময় কনেদের বা কনেপক্ষকে টাকার অংক বাড়াতে দেখেছি। কিন্তু সুকৃতির বিয়েতে ব্যতিক্রম দেখলাম। তার চিন্তা চেনতা অবশ্যই সাধুবাদ প্রাপ্য।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি