সিলেট ২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ১০:২৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২৩
আমাদের সমাজে উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার) নিয়ে বেশ আলোচনা হয়। কিন্তু এর তুলনায় নিম্ন রক্তচাপ (লো ব্লাড প্রেসার) নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না বললেই চলে। যা আমার এই সহকর্মীর সাথে অভিজ্ঞতাও বলে। কিন্তু এই সমস্যাটি অবহেলার সুযোগ নেই। লো ব্লাড প্রেসারকে হাইপোটেনশনও বলা হয়। সমস্যাটি অস্বস্তিকর উপসর্গ সৃষ্টি করে। এমনকি এটি জীবননাশেরও কারণ হতে পারে।
ব্লাড প্রেসারের রিডিং ৯০-৬০ থেকে ১২০-৮০ এর মধ্যে থাকলে স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ব্লাড প্রেসারের রিডিং ৯০/৬০ এর কম হলে সেটি হাইপোটেনশন হিসেবে ধরা হয়। এটি ধীরে ধীরে হার্টের কার্যক্ষমতা ধ্বংস করে দেয়। যে কারণে আপনার ব্লাড প্রেসারের রিডিং ৯০-৬০ এর কম দেখালে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিৎ।
পরিমাণ মেনে লবণ খান:
আমাদের শরীরে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ প্রয়োজন হয়। প্রতিদিন প্রয়োজনের চেয়ে কম লবণ খেলে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে। আবার বেশি লবণ খাওয়াও উচিত নয়। আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস এক গবেষণায় বলছে, দৈনিক ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে অথবা হাইপোটেনশনের উপসর্গে ভুগলে খাবারে লবণ বাড়িয়ে উপকার পেতে পারেন। ব্লাড প্রেসার বাড়াতে স্পোর্টস ড্রিংক, খাবার স্যালাইন অথবা সোডিয়াম-সুগার-পটাশিয়াম রয়েছে এমন পানীয় পান করতে পারেন।
অল্প অল্প খাবার খান:
কিছু লোকের বেশি করে কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পর হঠাৎ করে দ্রুত রক্তচাপ কমে যেতে পারে। বিষয়টি পোস্টপ্রান্ডিয়াল হাইপোটেনশন নামে পরিচিত। এটি লো ব্লাড প্রেসারের একটি ধরন, যা অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশনের ক্যাটাগরিতে পড়ে। এ ধরনের লো ব্লাড প্রেসারের একটি কার্যকরী চিকিৎসা হলো, সারাদিন অল্প অল্প করে লো কার্বোহাইড্রেটের খাবার খাওয়া। এছাড়া একবেলা থেকে অন্যবেলার খাবারের মাঝখানে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার চেষ্টা করুন। সারকথা হলো- যদি বুঝতে পারেন যে বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ার পর ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাহলে নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ঘন ঘন অল্প অল্প খাবার খেতে হবে।
ধীরে ধীরে অবস্থান পরিবর্তন করুন:
বসা বা শোয়া থেকে দাঁড়ানোর পর মাথা ঘুরলে, ঝাপসা দেখলে অথবা জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন মনে হলে এটি সম্ভবত অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন। ডা. জেলবম্যানের মতে, এসব উপসর্গ প্রতিরোধের একটি উপায় হলো অবস্থানের পরিবর্তন ধীরে ধীরে করা। শোয়া থেকে দ্রু বসবেন না বা দাঁড়াবেন না। প্রথমে বিছানায় পা রেখে ধীরে ধীরে বসুন। এভাবে ৬০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। তারপর বিছানা থেকে পা নামিয়ে এক-দুই মিনিট বসে থাকুন। অতঃপর ধীরে ধীরে দাঁড়ান।
অতিরিক্ত বালিশের ব্যবহার:
লো ব্লাড প্রেসার প্রতিরোধের একটি সেরা উপায় হলো অতিরিক্ত বালিশের ব্যবহার। ডা. জেলবম্যান বলেন, ‘একটি বালিশের ওপর আরেকটি বালিশ রেখে ঘুমালে মাথার অবস্থান হার্ট লেভেলের ওপরে থাকে। এটা মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব প্রতিহত করতে সাহায্য করে।
কফি বা পানি পান:
বিশ্বাস করুন অথবা না করুন, এককাপ কফি পান করেই ব্লাড প্রেসার বাড়াতে পারবেন। অথবা এর পরিবর্তে কোলা বা ক্যাফেইনেটেড টি পান করেও একই উপকার পেতে পারেন। গবেষণা অনুসারে, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় রক্তচাপ বাড়াতে ভূমিকা রাখে। অনেক হাইপোটেনশন এপিসোডের কারণ হলো শারীরিক পানিশূন্যতা। তাই লো ব্লাড প্রেসার এড়াতে প্রচুর পানি পানের গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। পানি পানের পরিমাণ বাড়ালে অথবা ডাবের পানির মতো ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় পানে ব্লাড প্রেসার দ্রুত বাড়বে এবং ভবিষ্যতে হাইপোটেনশন প্রতিরোধ হবে।
কাঁচি কৌশল:
যদি উপসর্গ দেখে বুঝতে পারেন হাইপোটেনশন হয়েছে, তাহলে ব্লাড প্রেসার দ্রুত বাড়াতে কাঁচি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমে উরুদ্বয় ক্রস করে কাঁচির মতো করুন, তারপর এ অবস্থায় চেপে ধরুন। এটা ডা. জেলবম্যানের পরামর্শ। এছাড়া সমতলে শুয়ে গোড়ালিদ্বয় কিছুর ওপর রেখে হার্ট লেভেলের ওপর তুললেও ব্লাড প্রেসার বাড়বে।
কিছু পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন:
জেনে রাখুন, মানসিক অবস্থার অবনতিও ব্লাড প্রেসার কমাতে পারে। অমূলক ভয়ভীতি, মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও অন্যান্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে টেম্পোরারি হাইপোটেনশন হতে পারে। তাই ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে জটিল পরিস্থিতিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন বিষয়ে নিজেকে না জড়ানোই ভালো।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি