শাশ্বত প্রেমের উপ্যাখ্যান ইকরামুল কবিরের ‘হৈমন্তির সুখদুখ’

প্রকাশিত: ১২:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০১৮

শাশ্বত প্রেমের উপ্যাখ্যান ইকরামুল কবিরের ‘হৈমন্তির সুখদুখ’

অমর একুশে বইমেলায় ইকরামুল কবিরের উপন্যাস প্রকাশ পেয়েছে। উপন্যাসটির নাম ‘হৈমন্তির সুখদুখ’। এর আগেও বই লিখেছেন তিনি। তবে এটিই তার লেখা প্রথম কোনো উপন্যাস। রোমান্টিক উপন্যাস ‘হৈমন্তির সুখদুখ’ ইতোমধ্যে পাঠকরাজ্যে জায়গা করে নিয়েছেন।

প্রতিশ্রুতিশীল লেখক-সাংবাদিক ইকরামুল কবির। সত্য-নিষ্ঠ, শ্রম আর মননশীল পেশাদারিত্ব তাকে দিয়েছে বিশিষ্টতা। একজন নিষ্ঠাবান সার্বক্ষণিক সাংবাদিক ইকরামুল কবির। সাংবাদিকতায় তিনি এদেশে সফল এক ব্যক্তিত্ব। সাংবাদিকতার মাধ্যমে দেশ সেবার এক মহানব্রত পালন করে চলেছেন যিনি। একালে এমন মানসিকতার সাংবাদিক শুধু দুর্লভই নয়, সত্যিকার অর্থে আর দ্বিতীয় নাম বলা যাবে কিনা সন্দেহ।

সাংবাদিকতায় অনন্য স্বীকৃতি স্বরূপ অর্জন করেছেন ‘পিআইবি প্যানোস ফেলো’। দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি। এছাড়া টেলিভিশন সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং জাতীয় কবিতা পরিষদ, সিলেট-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি। ২০১০ সাল থেকে দেশের জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেল সময় সংবাদের সিনিয়র রিপোর্টার ও সিলেট ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন-ইকরামুল কবির।

বড়ভাই প্রতিথযশা সাংবাদিক ইকবাল কবিরের হাত ধরে সাংবাদিকতায় যুক্ত হলেও সাহিত্যের প্রতি ইকরামুল কবিরের আকর্ষণ লক্ষ্য করা যায় তার অনেক আগে থেকেই। আলোচ্য উপন্যাসগ্রন্থ এধারায় অনন্য সংযোজন।

‘হৈমন্তির সুখদুখ’ উপন্যাসে প্রতিকূল পবিবেশে বেড়ে ওঠা এক অদম্য তরুণীর জীবনকথা বর্ণিত হয়েছে। একই সঙ্গে উঠে এসেছে সমাজের দুর্নীতি-অনিয়মের চিত্র। গভীর জীবনবোধ এবং মানবজীবনের সূক্ষ্ম অনুভূতি সুনিপুণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন লেখক।

আরও পড়ুন  আবারো বড়লেখায় আসছেন আজহারী

কাব্যিক দ্যুতনায় উপন্যাসের শুরু হয়েছে এভাবে-
‘হেমন্তের মাঝামাঝি। শেষ রাতের শীতলতায় ঘুম ঝেঁকে বসেছে। আজকাল স্বপ্ন দেখা ভুলে গেছে হৈমন্তি। স্বপ্ন দেখছে ওকে। স্বপ্ন বুনতে ভালোলাগাটা বিশ্বাস হচ্ছিলো না হৈমন্তির। কুয়াশা ভেজা ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যায় হেমু’র। হঠাৎ মনে পড়ে যায় ভালোলাগা মানুষটার কথা। আদর করে হৈমন্তিকে ডাকে হৈমু। কেনো এমন ভালোবাসার জাল বুনলো কিছু জানেনা। তবে, ভাবনা আর অনুভবের মূহূর্তগলো স্বপ্নের চেয়েও রোমাঞ্চকর মনে হয় হৈমন্তির কাছে।’ …

অনুপম শৈল্পিকতায় প্রথম প্রেমের অনুভূতিগুলো অংকিত হয়েছে…
‘ঘুম ভেঙ্গে প্রতিদিনের মতো আজও বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াতেই মনটা খুশিতে ভরে গেলো হৈমন্তির। বারান্দার একটি টবের গাছে ফুল ফুটেছে। অসম্ভব সুন্দর। নাম কী ফুলটার জানেনা হৈমন্তি। হিমেল কী জানে? দৌড়ে গিয়ে মোবাইল এনে কয়েকটি ছবি তুলে হিমেলকে পাঠােেলা।’…

রোমান্টিক উপন্যাস ‘হৈমন্তির সুখদুখ’। এমবিএ পাস করা তরুণী হৈমন্তি। জীবনযুদ্ধে আসে দুজন প্রেমিক পুরুষ। ব্যবসায়ী হিমেল, অন্যজন সহপাঠী নয়ন। হিমেল হৈমন্তির মন হরণ করে কানাডা চলে যায়। নয়ন বিয়ে করে আরেকজনকে।

আরও পড়ুন  পাকিস্তান-ভারতের পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার

এমন বিরহ-বেদনা, অপেক্ষা আর শাশ্বত প্রেমের উপ্যাখ্যান ‘হৈমন্তির সুখদুখ’। প্রেম-ভালোবাসার আকুলতায় উপন্যাসের চরিত্রগুলো হয়ে উঠেছে অনন্য। তবে ভালোবাসার দুর্বলতা নায়িকার নৈতিকতাকে অবনত করেনি।

বাংলাদেশে কাহিনী নির্ভর চলচ্চিত্রের আকাল চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে ‘হৈমন্তির সুখদুখ’ উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হলে- হবে মাইলস্টোন।

চমৎকার এ উপন্যাসগ্রন্থের প্রচ্ছদ এঁকেছেন চারু পিন্টু, প্রকাশ করেছে চৈতন্য প্রকাশনী। বইটির প্রচ্ছদ, বাঁধাই, মুদ্রণ, বিন্যাস বেশ দৃষ্টিনন্দন ও রুচিকর হলেও মুদ্রণপ্রমাদের প্রকোপ রয়েছে যথেষ্ট, যা রচনার রসাস্বাদনে বিঘ্ন ঘটায়।

যেমন- গ্রন্থের ১৯ পৃষ্টায় ‘হিলেলের’ শব্দটি হবে হিমেলের। ২৬ পৃষ্ঠায় ‘কিভাব’ শব্দটি কিভাবে, ২৪ পৃষ্ঠায় ‘পঞ্চার্ধো’ হবে পঞ্চাশোর্ধ, ৩৮ পৃষ্ঠায় ‘জাননি’ বানান হবে যাননি, ৫০ পৃষ্ঠায় ‘থোকো’ হবে থেকো, ৭১ পৃষ্ঠায় ‘খালাম্বা’ শব্দটি হবে খালাম্মা, একই পৃষ্ঠায় নিচের অংশে ‘হেমিন্ত’ হবে হৈমন্তি, ৭২ পৃষ্ঠায় ‘শতি’ হবে শীত, ‘বেরিযে’ হবে বেরিয়ে, ‘কোনো’ হবে কেনো, ৭৩ পৃষ্ঠায় ‘তোমকে’ হবে তোমাকে, ‘থেকে’ হবে থেকো, ‘তোক’ হবে তোকে, ৭৬ পৃষ্ঠায় ‘কোনো’ হবে কেনো, ৭৭ পৃষ্ঠায় ‘কওে’ হবে করে।

– আহমদ মারুফ

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ