কেন এই বন্যার ভয়াবহতা? কী তার সমাধান?স্বল্প , মাঝারী ও দীর্ঘ মেয়াদী কী পরিকল্পনা আবশ্যক? আমরা কি নিরুপন করতে পেরেছি?
রাজনৈতিক সংকীর্ণতা ও আমলাতান্ত্রিক গোলামী মানসিকতাহীন মানুষমাত্রই বলবে, না। পারিনি। আমরা কেবল বাগাড়ম্বর করতে জানি।
আমাদের সিলেট রাজনৈতিক নেতৃত্ব শূণ্য। ডায়ানেমিক লীডার নেই কোন রাজনৈতিক দলে।
নেতৃত্ব কতটুকু অথর্ব হলে শাসক দল আওয়ামী লীগের সিলেট নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ( ভূয়া অধ্যাপক) প্রধানমন্ত্রীর সামনে বলতে পারে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়নি।এরা সামাদ আজাদ, হুমায়ুন রশীদ, সুরঞ্জিত সেন, ফরীদ গাজী গংদের উত্তরসূরী? ভাবতে ঘেন্না লাগে।
আমাদের একজন কর্মপিপাসু মেয়র আছেন। তিনি কাজ পাগল। কিন্ত তার কাজ কর্ম অনেক সময় সেই ‘ ভালো খেলোয়াড় লাল মিয়ার মত’। খেলোয়াড় লাল মিয়ার গল্প অনেকেরই জানা থাকার কথা।তারপরও বলি। লাল মিয়া ভালো ফুটবলার। তিনি ডিফেন্স, এট্যাকিং, মিড ফিল্ড সব জায়গায় ভালো খেলেন।সারা মাঠ দৌড়ে খেলেন।সমস্যা কী জানেন? অনেক সময় লাল মিয়া নিজের বার দিয়ে গোল পোস্ট করে বসেন।
আমাদের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর অবস্থা অনেক সময় লাল মিয়ার মত। সিসিক’র শত শত কর্মকর্তা কর্মচারী থাকতে তিনি নিজে ঠেলাগাড়ি ঠেলা আর ছবি ভাইরাল করা এ দুঃসময়ে বড় বেমানান।
প্রধানমন্ত্রী শুনতে চাইলেন, জানতে চাইলেন মেয়রের কাছে। মেয়র একটা মোক্ষম সুযোগ পেলেন। কিন্তু বলতে পারলেন না। সিলেট নগরীর বন্যা সমস্যা সমাধান, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন বিষয়ে তার প্রস্তুতি নিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সিটি করপোরেশন এর অভিজ্ঞজন, সাংবাদিক, প্রয়োজনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও নোট নিয়ে যেতে পারতেন।তিনি হযবরল আকারে কিছু বললেন। সাপ মরুক লাটিও থাকুক এ নীতি অসময়ে অপরিপক্ষতার পরিচয়।
পরিবেশ, জলবায়ু ও ভূ- বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আব্দুর রব এর সিলেট নিয়ে ভূ- গবেষণা কাজে লাগাতে পারতেন।
কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওরে ৩০ কি.মি নির্মিত ইটনা- মিঠামাইন- অষ্টগ্রাম সড়কটি সিলেটের বন্যা ভয়াবহতার প্রধান কারণ। কেন বলতে পারলেন না। বুকের পাটা এত দুর্বল নিয়ে কি রাজনীতি করা যায়?
১২০০ কোটি টাকায় নির্মিত এই বিলাসী সড়কটি হাওরের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বিঘ্নিত করছে। এটাই আমাদের প্রধান শত্রু।সুনামগঞ্জ হাওরের পানি এই ৩০ কি মি নিকলী হাওর অতিক্রম করে মেঘনা নদীতে প্রবাহিত হতো।খুবই স্বল্প কয়েকটি কালভার্টের মাধ্যমে এখন পানি প্রবাহিত হচ্ছে যার কারণে সুনামগঞ্জ হাওরে পানি আটকা পড়ে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ করে তুলছে।
অনতিবিলম্বে এই সড়কের ১ কিলোমিটার অন্তর অন্তর ফ্লাইঅভার তৈরি করে হাওরের পানির স্বাভাবিক প্রবাহের সুযোগ করে দিতে হবে। একথাগুলো প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও বলবেন না। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক তারা লোভনীয় পদের গোলামী করেন। তাঁরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মনোরঞ্জন করে চলেন। কোন অবস্থাতেই বিরাগভাজন হতে পারেন এমন কোন কথা বলবেন না।
তাই রাষ্ট্রপতির এলাকার রাষ্ট্রপতির নিজস্ব খায়েসের একটা প্রকল্পের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরার হিম্মত প্রশাসনিক কর্তাদের নেই।