স্কুলে যেতে চায় চা বিক্রেতা সুমাইয়া

প্রকাশিত: ৮:২৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩

স্কুলে যেতে চায় চা বিক্রেতা সুমাইয়া

প্রভাতবেলা ডেস্ক:

যেই বয়সে বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে চা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়া শিশু সুমাইয়া (১৩)। সে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়নের গাড়াদহ পূর্বের হাটখোলা এলাকার যক্ষা রোগে আক্রান্ত সায়েম আলী ফকিরের ৪র্থ মেয়ে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছর ধরে যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে সায়েম আলী ফকির শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন। তার ৪ মেয়ে, কোনো ছেলে সন্তান নেই। এর মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। তিনি গার্মেন্টস শ্রমিক স্বামী-সন্তান নিয়ে ঢাকায় থাকেন। মেজো মেয়ে মারা গেছেন। ৩য় মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী। ৪র্থ মেয়ে সুমাইয়া ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে।

৫ম শ্রেণিতে ওঠার পর গত এক বছর আগে বাবা সায়েম আলী ফকির কঠিন অসুখে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। অনেক চিকিৎসা করেও ভালো হয়নি। এদিকে সংসারে আয় উপার্জনের আর কোনো পুরুষ মানুষ না থাকায় সুমাইয়া স্কুল ছেড়ে তার বাবার চায়ের দোকানে চা বিক্রি করে সংসার চালানো শুরু করে। গত তিন মাস আগে তার বাবার যক্ষা রোগ শনাক্ত হয়। শেষ সময়ে রোগ ধরা পড়ায় চিকিৎসা খরচ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে সুমাইয়া।

আরও পড়ুন  শুদ্ধাচার পুরস্কার পাচ্ছেন জৈন্তার ইউএনও মৌরিন

সোমবার সকালে কথা হয় শিশু সুমাইয়ার সঙ্গে। সে বলে- চা বিক্রি না করলে খাব কী? বাবার ওষুধ কিনব কীভাবে? তাই স্কুল ছেড়ে চায়ের দোকানে চা বিক্রি করি। সারাদিনে ১৫০-২০০ কাপ চা বিক্রি করে ২০০-৩০০ টাকা আয় হয়। এ দিয়ে চাল-ডাল কেনার পর অবশিষ্ট টাকা দিয়ে বাবার ওষুধ কিনি। এভাবেই গত এক বছর ধরে চলছে আমাদের কষ্টের সংসার।

সে আরো বলে, আমি আবার স্কুলে যেতে চাই। পড়ালেখা করতে চাই। তাই আমাকে বিত্তবানরা আর্থিক সহযোগিতা করলে আমি আবার স্কুলে যেতে পারতাম। পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারতাম।

সুমাইয়ার বাবা সায়েম আলী ফকির বলেন, আমার কোনো বাড়িঘর নেই। সরকারি খাস জায়গায় এলাকাবাসীর দানের টাকায় একটি দোচালা ঘর তুলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকি। এর উপর যক্ষা রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছি। সংসার চালানোর মত আর কোনো উপায় না থাকায় শিশু মেয়ে সুমাইয়াকে চা বিক্রি করে সংসার চালাতে হচ্ছে। তিনি এ বিষয়ে হৃদয়বানদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে অনুরোধ করেছেন।

আরও পড়ুন  দেশের প্রথম নারী ইউরোলজিস্ট তাজকেরা সুলতানা চৌধুরী

এ বিষয়ে শাহজাদপুরের ইউএনও কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করা হবে। বাড়িঘর না থাকলে বাড়িঘরে ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া সুমাইয়াকে আবারো স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ