সিলেট ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ৫:০৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০
বিশ্বভূবন ডেস্ক:
দিল্লির নির্ভয়া ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামির সবাইকে একই দিনে ফাঁসি দিতে হবে, কাউকেই আলাদাভাবে ফাঁসি দেয়া যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে শাস্তি মওকুফের আবেদনসহ আইনত যত ধরনের সুযোগ পাওয়া সম্ভব সবগুলোর আবেদন করার জন্য আদালত এই চারজনকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন।
এক সপ্তাহ পর তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি দিল্লির একটি আদালত ১ ফেব্রুয়ারি এই চার আসামির ফাঁসি কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। পাটিয়ালা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা ফাঁসির রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে বলেছিলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে না।
৩০ জানুয়ারি আদালতে ওই ফাঁসি স্থগিত রাখার আর্জি জানানো হয়েছিল। অপরাধীদের আইনজীবীর যুক্তি ছিল, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত বিনয় শর্মার প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে রাষ্ট্রপতি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। অক্ষয় কুমার সিংহ ও পবন গুপ্তও তাদের সামনে আইনত যেসব সুযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে ইচ্ছুক। তার প্রেক্ষিতেই ৩১ জানুয়ারি রায় কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়।
ওই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আবেদন জানায় ভারতের কেন্দ্র ও দিল্লি রাজ্য সরকার। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার নতুন এই আদেশ দিলেন দিল্লি হাইকোর্ট।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন প্যারা মেডিক্যালের এক শিক্ষার্থী। প্রেমিকের সামনেই গণধর্ষণের শিকার হন ভারতব্যাপী ‘নির্ভয়া’ নামে পরিচিতি পাওয়া ওই নারী। দু’জনকেই মারধরের পর বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়। ওই বছরই ২৯ ডিসেম্বর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নির্ভয়ার।
২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর এ ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ২১ ডিসেম্বর আরও এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। গণধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করা হলে ২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে পাঁচ প্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়। ওই বছরের ১১ মার্চ তিহার জেলে মূল আসামি রাম সিং আত্মহত্যা করে। অপ্রাপ্তবয়স্ক আরেক আসামিকে তিন বছর জেল খাটার পর মুক্তি দেয়া হয়।
পরে ২৩ সেপ্টেম্বর অন্য চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ২০১৪ সালের ১৩ মার্চ নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল রাখেন দিল্লি হাইকোর্ট। পরে সুপ্রিমকোর্টে এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি। ২০১৭ সালের ৫ মে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৯ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় আসামি অক্ষয় কুমার সিং। ১৬ ডিসেম্বর রায় পুর্নবিবেচনার জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন করা হয়।
অবশেষে ১৮ ডিসেম্বর অক্ষয় ঠাকুর সিং, মুকেশ সিং, পবন গুপ্ত ও বিনয় শর্মা – এই চার আসামিরই মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট। এরপর সর্বোচ্চ সাজা থেকে রেহাই পাওয়ার সর্বশেষ উপায় হিসেবে আসামি বিনয় ও মুকেশের দায়ের করা কিউরেটিভ পিটিশন গত ১৪ জানুয়ারি খারিজ হয়ে যায়। তাদের ফাঁসি ২২ জানুয়ারি সকাল ৭টায় তিহার জেলে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু দিল্লি হাইকোর্ট জানান, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অন্তত ১৪ দিন সময় দিতে হয় অপরাধীদের। সেই নিয়মেই ২২ তারিখ চার জনকে ফাঁসি দেয়া যাবে না।
সময় পেয়ে কিউরেটিভ পিটিশনে ব্যর্থ হওয়া মুকেশ আলাদা করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ প্রাণভিক্ষার আবেদন ফিরিয়ে দেন।
এরপরই সাজা কার্যকরের তারিখ পিছিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টা নির্ধারণ করে ১৭ জানুয়ারি মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেন আদালত। নতুন পরোয়ানা অনুযায়ী শুক্রবার থেকে ১৪ দিনের শর্ত কাটায় কাটায় পূরণ হওয়ার কথা। পরে বিনয় শর্মার প্রাণভিক্ষার আবেদনের ইস্যুতে ৩১ জানুয়ারি দণ্ডিতদের ফাঁসির ওপর স্থগিতাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
প্রভাতবেলা/এমএ
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি