মহিমান্বিত শবে ক্বদর:ফজিলত ও আমল

প্রকাশিত: ৪:৪৭ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০১৭

প্রভাতবেলা ডেস্ক: শবে কদর ২৬ রমজান দিবাগত রাতকে ধরা হয়ে থাকে যদিও এই শবে কদর ২৭ রমজান কিনা এটা একবারে নির্ধারিত নয়। শবে কদরের বিষয়ে রাসুল (সা:) এর বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে।

রাসুল (সা:)লাইলাতুল কদর অনুসন্ধানে উৎসাহ প্রদান করেছেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করার জন্য উৎসাহ প্রদান করতেন। এ ব্যাপারে অনেক হাদিস রয়েছে। রাসূল এ মহান রাত্রিকে গনিমত মনে করে কাজে লাগাতে বলতেন, এর কল্যাণ অর্জনে উদ্বুদ্ধ করতেন সকলকে। একবার তিনি সাহাবিদেরকে এ রাতের ফজিলত বর্ণনা করে বলেন : من قام ليلة القدر إيمانا واحتسابا غفر له ما تقدم من ذنبه.

যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতেসাবের সাথে এ রাত্রি জাগরণ করবে, তার পূর্বের যাবতীয় পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। [বোখারি : ১৮০২।]

ভিন্ন হাদিসে রাসূল এ রাতের সময়ের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন : تحروا ليلة القدر في العشر الأواخر من رمضان. রমজানের শেষ দশ দিনে তোমরা লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর। [বোখারি: ২০২০।]

বেজোড় সংখ্যক রাত্রির প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখার নির্দেশ প্রদান করে বলেন : تحروا ليلة القدر في الوتر من العشر الأواخر من رمضان.

রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় সংখ্যক রাতে তোমরা লাইলাতুর কদর অনুসন্ধান কর। [ বোখারি : ২০১৭।]

আরও পড়ুন  নিবিড় পর্যবেক্ষণে খালেদা জিয়া

তবে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যারা দুর্বল ও অসুস্থ, তাদের ক্ষেত্রে কেবল শেষ সাত রাত্রিতে অনুসন্ধানের আদেশ দিয়েছেন। এক হাদিসে রাসূল বলেছেন,

التمسوها في العشر الأواخر ু يعني ليلة القدر -، فإن ضعف أحدكم أو عجز فلا يغلبن على السبع البواقي.

তোমরা শেষ দশে তা, অর্থাৎ লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান কর। যদি তোমাদের কেউ দুর্বল হয়, কিংবা অক্ষম হয়ে পড়ে, তবে শেষ সাতে যেন পরাভূত হয়ে না পড়ে ( শেষ সাত রাতে অবশ্যই যেন তালাশ করে)।[ মুসলিম : ২৮২২।]

রাসূল, অত:পর শেষ সাত রাত্রির মাঝে লাইলাতুল কদরের জন্য সর্বাধিক সম্ভাবনাময় রাত্রি হিসেবে সাতাশের রাত্রিকে নির্ধারণ করেছেন, তিনি এক হাদিসে এরশাদ করেছেন,

من كان متحريها فليتحرها ليلة سبع وعشرين، وقال: تحروها ليلة سبع وعشرين، يعني: ليلة القدر.

যে তা (লাইলাতুল কদর) অনুসন্ধান করবে, সে যেন অনুসন্ধান করে সাতাশের রাতে। এবং তিনি বলেছেন- তোমরা তা অর্থাৎ লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান কর সাতাশের রাতে।[ আহমদ : ৬৪৭৪।]

এ জাতীয় নানা হাদিস বর্ণিত হওয়ার কারণেই সাহাবি উবাই বিন কাব রা. শপথ করে বলতেন যে, তা সাতাশের রাত্রিতেই ঘটে। তিনি বলেন : والله إني لأعلمها، وأكثر علمي هي الليلة التي أمرنا رسول الله صلى الله عليه وسلم بقيامها، هي ليلة سبع وعشرين.

আরও পড়ুন  হাওরাঞ্চলের ৯০ ভাগ ধান কাটা শেষ

আল্লাহর শপথ ! আমি তার ব্যাপারে অবগত। আমার দৃঢ় ধারণা হচ্ছে, তা হল, সেই রাত্রি, যাতে রাত যাপনের জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশ প্রদান করেছেন। তা হচ্ছে সাতাশের রাত্রি।[মুসলিম : ১৮২২।]

মূলত: কিছু কিছু বছরে সাতাশের রাত্রিতে লাইলাতুল কদর ঘটেছিল, এবং সাহাবিগণ এ রাতের ব্যাপারে দৃঢ় ধারণা পোষণ করতেন। তবে, একুশের রাত ও তেইশের রাতেও লাইলাতুল কদর হয়েছে- এমন প্রমাণও হাদিসে পাওয়া যায়।

শবে কদরের ফযিলত:

লাইলাতুল কদরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো- এ গৌরবময় রজনীতে মানবজাতির পথপ্রদর্শক ও মুক্তির সনদ ঐশীগ্রন্থ ‘আল কোরআন’ অবতীর্ণ হয়েছে। শবেকদর সম্পর্কে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন লাইলাতুল কদর কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। (সুরা কদর : ১-৩) এটি শ্রেষ্ঠতম রাত। এ রাতের ইবাদতে রয়েছে সবিশেষ গুরুত্ব। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ইবাদত করবে তার পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (মুসলিম : ৭৬০; বুখারি : ২০১৪)

এ ছাড়া পবিত্র এ রাতে যেকোনো নফল ইবাদত করা যেতে পারে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ