সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ১:৫৪ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২০
 
                                                                          
মাসুদ আহমেদ:
পৃথিবীর সবচেয়ে সুমধুর ডাক ‘মা’। আনন্দ, বেদনা আর কল্পরাজ্যের যতসব অনুভূতির আলোড়ন— সবই মাকে ঘিরে। ‘মা’ শব্দটি নিজেই একটি অসমাপ্ত গল্প, শ্রেষ্ঠ কবিতা, সময়ের সেরা উপন্যাস….
‘মা’ – ছোট্ট একটা শব্দ, কিন্তু কি বিশাল তার পরিধি! সৃষ্টির সেই আদিলগ্ন থেকে মধুর এই শব্দটা শুধু মমতার নয়, ক্ষমতারও যেন সর্বোচ্চ আধার৷ মার অনুগ্রহ ছাড়া কোনো প্রাণীরই প্রাণ ধারণ করা সম্ভব নয়৷ তিনি আমাদের গর্ভধারিনী, জননী৷
কবি নজরুলের ভাষায়— ‘‘যেখানেতে দেখি যাহা/ মা-এর মতন আহা/ একটি কথায় এত সুধা নাই/ মায়ের মতন এত/ আদর সোহাগ সে তো/ আর কোনখানে কেহ পাইবে ভাই।’’
অথবা কামিনী রায়ের— ‘‘জড়ায়ে মায়ের গলা, শিশু কহে হাসি/ মা তোমারে কত ভালবাসি/ কত ভালোবাস ধন? জননী শুধায়/ “এ-ত” বলি দুই হাত প্রসারি দেখায়? তুমি মা আমায় ভালোবাস কতখানি? মা বলে মাপ তার আমি নাহি জানি/ তবু কতখানি বল, যতখানি ধরে তোমার মায়ের বুকে নহে তার পরে।’’
উপনিষদে পড়েছিলাম, ‘‘মাতৃ দেব ভব”৷ অর্থাৎ মা দেবী স্বরূপিনী, জীবন্ত ঈশ্বরী৷ তাছাড়া হিন্দুধর্মে মহাশক্তি, আদিশক্তি, রক্ষাকর্ত্রীর ভূমিকায় আমরা যাঁদের পেয়েছি, তাঁদের কিন্তু আমরা মাতৃরূপেই চিনেছি৷ এ জন্য কুসন্তান বলা হলেও, কুমাতা কখনও বলা হয় না৷
কোন মা, তা তিনি যে পেশাতেই থাকুন না কেন, যত কুশ্রীই হন না কেন, সন্তানের কাছে তিনি কিন্তু দেবীর মতোই৷ আর শুধু হিন্দু ধর্মে কেন? ইসলামে ‘মায়ের পায়ের নীচে বেহেস্ত’ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে৷ খ্রিষ্টধর্মেও রয়েছে ‘মাদার মেরির’ বিশেষ তাৎপর্য৷
আসলে কেন জানি না লোক দেখানো, অহেতুক আড়ম্বর, ঘটা করে কিছু করা তেমন ভালো লাগে না আমার, বিশেষ করে সেটা যদি নিজের জন্মদাত্রী মায়ের জন্য হয়৷ আজকাল কত ছেলে-মেয়ে, পুত্রবধুকে দেখি মায়েদের অযত্ন করতে, তাঁদের অবহেলা করতে৷ তখন খুব খারাপ লাগে৷ যে মা-বাবা আমাদের আঙুল ধরে হাঁটতে শিখিয়েছে, কথা বলতে শিখিয়েছে, মুখে তুলে দিয়েছে অন্ন, সেই বাবা-মা বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লে, তাঁদের হাতে গড়া সন্তানটি ছোটবেলার কথা ভুলে বাবা-মা কে পাঠিয়ে দিচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে৷
আমরা তো দেশকেও ‘মা’ বলে ডাকি৷ দেশের মাটিকে মা জ্ঞান করে তাঁর পায়ে মাথা ঠেকাই আমরা৷ বড় গলায় গর্ব করি দেশমাতৃকার জন্য৷ কিন্তু নিজের মায়ের বেলায়? বেঁচে থাকতে কতদিন, কতবার তাঁকে আদর করেছি আমরা? কতবার বলেছি ‘মা, তোমায় ভালোবাসি’? জীবনচক্রের ঘূর্ণন শুরু হয় সেই জন্মলগ্ন থেকে৷ এরপর ছোটবেলা কাটিয়ে উঠে কৈশোর, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব, বার্ধক্য, আর সবশেষে অনিবার্য মৃত্যু৷ এই ধ্রুব সত্য শুধু আপনার-আমার নয়, সবার জন্য৷ তাই যতদিন ‘মা’ বেঁচে আছেন, ততদিন, প্রতিটি দিন পালন করুন ‘মা দিবস’ হিসেবে৷

সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি
