সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ২:০৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
 
                                                                          সুমাইয়া জান্নাত: আজ ঋতুরাজ বসন্ত। পহেলা ফাল্গুন। বসন্ত মানে পূর্ণতা। বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। পাতার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহুকুহু ডাক, প্রকৃতির সবুজ অঙ্গন ছেয়ে যাবে রঙিন ফুলে ফুলে। মাঘের শেষ দিক থেকেই গাছে গাছে ফুটছে আমের মুকুল।
বসন্তের স্পর্শে জেগে উঠেছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, নাগলিঙ্গম। বাতাসে ভেসে আসা ফুলের গন্ধে বসন্ত জানিয়ে দিচ্ছে, সত্যি সত্যি সে ঋতুর রাজা। মন তাই গেয়ে উঠবে ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে/ ডালে ডালে ফুলে ফুলে পাতায় পাতায় রে……….’।
বসন্ত শুধু অশোক-পলাশ-শিমুলেই উচ্ছ্বাসের রং ছড়ায় না, আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্তরঙিন পুষ্পিত রক্তের স্মৃতির ওপরও রং ছড়ায়। বায়ান্ন সালের আট ফাল্গুন বা একুশের পলাশরাঙা দিনের সঙ্গে তারুণ্যের সাহসী উচ্ছ্বাস আর বাধভাঙা আবেগের জোয়ার যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে।
বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে পালন করি ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে। এ উৎসব এখন পরিণত হয়েছে বাঙালির নিজস্ব সার্বজনীন প্রাণের উৎসবে। বসন্তের প্রথম মুহূর্তকে ধরে রাখতে তাইতো সবাই মেতে ওঠে নানা উৎসব ও সাজে। বাসন্তী রঙের শাড়িতে বাঙালি নারীকে অপরূপ দেখায়। এতে পিছিয়ে নেই পুরুষেরাও।
বসন্ত অনেক ফুলের বাহারে সজ্জিত হলেও গাঁদা ফুলের রঙকেই এদিনে তাদের পোশাকে ধারণ করে তরুণ-তরুণীরা। খোঁপায় শোভা পায় গাঁদা ফুলের মালা। বসন্তের আনন্দযজ্ঞ থেকে বাদ যায় না গ্রাম্যজীবনও। আমের মুকুলের সৌরভে আর পিঠাপুলির মৌতাতে গ্রামে বসন্তের আমেজ একটু বেশিই ধরা পড়ে। বসন্তকে তারা বরণ করে আরও নিবিড়ভাবে।
বাংলায় বসন্ত উৎসব এখন প্রাণের উৎসবে পরিণত হলেও এর শুরুর একটা ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে, যা অনেকের অজানা। মোগল সম্রাট আকবর প্রথম বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন ১৫৮৫ সালে। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব।
তখন অবশ্য ঋতুর নাম এবং উৎসবের ধরনটা এখনকার মতো ছিল না। কিন্তু অন্য ঋতুর চেয়ে এই ঋতুকে পালন করা হতো আলাদাভাবে। তাই পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব কেবল উৎসবে মেতে ওঠার সময় নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য, বাঙালিসত্তা।
সে ঐতিহ্যের ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারলেই বসন্ত উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে পারবে বাঙালি চেতনাকে। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। এছাড়া তরুণ-তরুণীরা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ধানমন্ডি লেক, বলধা গার্ডেন মাতিয়ে রাখবে সারাদিন।
ফোন, ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে বসন্তের শুভেচ্ছা বিনিময়। আজ দিনভর চলবে বসন্ত বন্দনায়। প্রতিবছরের মতো এবারেও জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষৎ এর উদ্যোগে ঢাকা শহরে বিভিন্ন মঞ্চে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ বকুল তলায় দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শুরু হবে সকালে। এছাড়াও শিল্পকলা একাডেমী, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন বসন্তবরণে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি
