সিলেট ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ৮:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০২৪
আফজল হোসেন
প্রথম টেস্টের পর দীর্ঘ পাঁচ বছর অপেক্ষার পর দ্বিতীয় টেস্ট খেলার ভেন্যু হয় সিলেট। সেই টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সিলেটের ক্রিকেট প্রেমিদের জয় উপহার দেয় বাংলাদেশ। সে ম্যাচে স্পিনারদের দাপট দেখা গেলেও সিলেটে বাংলাদেশের তৃতীয় টেস্ট ম্যাচে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সবুজাভ উইকেটে বল হাতে অভিষিক্ত নাহিদ রানা ঝড় তুললেও বোলিংয়ে দিনের শুরুর আলো কাড়েন ঘরের ছেলে সৈয়দ খালেদ আহমেদ।
শ্রীলঙ্কার প্রথম সারির তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে দিনের শুরুটা রাঙান খালেদ, শেষটায় লঙ্কান দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ফিরিয়ে অভিষেকেই নিজের আগমনী জানান দেন রানা। শুরুতে অবশ্যই বোলিংয়ে গতির ঝড় তুললেও উইকেটের দেখা পাচ্ছিলেন না ২১ বছর বয়সী এই বোলার, সাথে রানও দিচ্ছিলেন দেদারসে। তবে দলের প্রয়োজনের সময়ই কামিন্দু মেন্ডিস (১০২) ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা (১০২) ফিরিয়ে লঙ্কানদের তিনশো নিচে আটকাতে স্বাগতিকদের সাহায্য করেন রানা। খালেদ-রানার গতির ঝড় সামলিয়ে লঙ্কানরা ২৮০ রান সংগ্রহ করলেও জবাবে খেলতে নেমে স্বাগতিক বাংলাদেশ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ৩২ রানে।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন খালেদ, ওভারের শেষ বলে নিশান মাদুষ্কাকে (২) ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দেন সিলেটের ছেলে। এরপর দিমুথ করুনারত্নে ও কুশল মেন্ডিস মিলে শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চালান, লঙ্কান এই দুই ব্যাটার ছোটখাটো এক জুটিও দাড় করিয়ে দেন। যখন উইকেটে খানিকটা থিতু হয়ে গিয়েছিলেন করুনারত্নে ও মেন্ডিস তখনই আঘাত হানেন খালেদ।
ইনিংসের ১২শ ওভারে জোড়া আঘাতে লঙ্কান এই দুই ব্যাটারকেই ফেরান খালেদ, ওভারের দ্বিতীয় বলে কুশলকে (১৬) জাকির হাসানের ক্যাচ বানিয়ে ব্রেক থ্রু দেন খালেদ। আর ওভারের শেষ বলে করুনারত্নের (১৭) স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলে স্বাগতিকদের স্বস্তি এনে দেন খালেদ। দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পাশাপাশি নাজমুল হোসাইন শান্তর সরাসরি থ্রোতে রান আউট কাটা পড়েন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস (৫)।
খালেদ-শান্তর পর লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন বা হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। শরিফুলের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে অসাধারণ এক ক্যাচ তালুবন্দি করে লঙ্কানদের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার দীনেশ চান্দিমালকে (৯) ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। ফলে ৫৭ রানেই প্রথম ৫ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা।
৫৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া লঙ্কানদের ত্রানকর্তা হিসেবে উইকেটে দাঁড়িয়ে যান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। দুজনের ব্যাটেই স্বস্তি ফেরে লঙ্কান শিবিরে, ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু’র জোড়া শতকে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। দিনের শুরুতে দ্রুত পাঁচ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা লঙ্কান ক্রিকেট এই দুজনের সুবাদেই মাঝের সেশনে কোনো উইকেট হারায়নি।
টেস্ট ক্রিকেটে নিজের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১২৬ বলে ১১ চার এবং ৩ ছয়ে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকান কামিন্দু। অভিষিক্ত রানার বলে দুর্দান্ত স্কোয়ার ড্রাইভে শতক হাঁকিয়ে অবশ্য স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেননি কামিন্দু, রানার করা পরের ডেলিভারিতেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাঁকে।
আউট হওয়ার আগে কাজের কাজ ঠিকই করে দিয়ে এসেছেন কামিন্দু। ২৪৪ বলে ২০০ রানের ইনিংস বাঁচানো জুটিতে লঙ্কানদের কক্ষপথে ফেরান এই ব্যাটার। তাঁকে সঙ্গ দেওয়া ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও এক ওভার পরে রানাকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে করেন সেঞ্চুরি। তার পরিনতিও হয় কামিন্দুর মতই, শতক হাঁকিয়ে তিনিও সাজঘরে ফেরেন রানার বলেই। রানার ১৪৪ কি. মি. গতিতে করা সেই ডেলিভারিতে পুল শট খেলতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগে মিরাজের তাতে ধরা পড়েন সিলভা। লঙ্কান দুই সেঞ্চুরিয়ানকে ফিরিয়ে নিজের অভিষেক স্মরণীয় করে রাখেন রানা।
দ্রুত দুই সেঞ্চুরিয়ানকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে যায় তিনশোর আগেই –– ২৮০ রানে। খালেদ আর রানা –– দুজনেই ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন শরিফুল ও তাইজুল ইসলাম।
নিজেদের ১ম ইনিংসে খেলতে নেমে কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। দলীয় ১১ রানেই ওপেনার জাকিরের উইকেট হারায় টাইগাররা। বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাত্র ৯ রানেই সাজঘরে ফিরেন সিলেটের ছেলে জাকির। এলবিডব্লুর আউটের সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে অবশ্যই রিভিউ নিয়েছিলেন জাকির, তাতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি, ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই সঠিক প্রমাণিত হলে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।
তিনে নামা অধিনায়ক শান্তরও হয় একই পরিনতি। ফার্নান্দোর বলে তিনিও হন এলবিডব্লিউর শিকার, জাকিরের মতো অধিনায়কও রিভিউ নেন। কিন্তু, মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।
এরপর চারে নামা মমিনুল হকও (৫) কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাঁটেন প্যাভিলিয়নের পথে। ১০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দিন শেষ করে মাত্র ৩২ রানে। শ্রীলঙ্কার হয়ে ২টি উইকেট শিকার করেন ফার্নান্দো। এছাড়া একটি উইকেট নেন কাসুন রাজিতা।

সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি