সিলেট ২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৯, ২০২৩
তাদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে না এলে নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এই তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রলোভন, টোপ আর চাপ দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় অনেক নেতাকেই বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বিগত দিনে রাগ-ক্ষোভ-অভিমানে দল থেকে দূরে সরে যাওয়া নেতারা। বিগত দিনের নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদেরও টার্গেট করা হয়েছে এই ভাঙন প্রক্রিয়ায়।
বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় বিএনপিকে ভাঙনের এই তৎপরতা এখন জোরালো হচ্ছে। চাপে ফেলে দলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টাও চলছে। বিএনপি থেকে যাদের বের করে আনা সম্ভব হবে, তাদের সম্প্রতি নিবন্ধন পাওয়া কয়েকটি দলে ভেড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নাম রয়েছে। যদিও এখনও সেই পরিকল্পনায় হালে পানি পায়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতার পাশাপাশি গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগের বিএনপি ভাঙার চেষ্টাও বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এবারও বিএনপির নামধারী কিছু ব্যক্তি নিয়ে কিছু অপপ্রচার করার চেষ্টা করছে; এর বেশি কিছু নয়। সরকার মরিয়া হয়ে গেছে– কীভাবে একটা ভুয়া, সাজানো, একতরফা নির্বাচনকে দেশ-বিদেশে অংশগ্রহণমূলক হিসেবে জাহির করা যায়। কিন্তু সরকারের এসব জারিজুরির গোমর এখন দেশ-বিদেশে ফাঁস হয়েছে।
অবশ্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, তারা পরিষ্কার করে বলতে চান, বিএনপি ভাঙনের কোনো উদ্যোগ আওয়ামী লীগের নেই; বরং বিএনপির ভেতর থেকে ত্যাগী ও মূলধারার নেতারা মনে করেন, বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সঠিক পথে হাঁটছে না।
দলটির নেতারা মনে করছেন, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে রাজপথের আন্দোলনের পাশাপাশি সরকারের ওপর বিদেশি চাপ অব্যাহত রয়েছে। উদ্ভূত এমন পরিস্থিতিতে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে পর্দার অন্তরালে নানা ধরনের তৎপরতা চলছে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় সেটি আরও জোরদার হয়েছে। কিছু নেতাকে বিএনপির বিকল্প বানিয়ে নির্বাচনে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বাদ দিয়েও বিএনপিকে নির্বাচনে নেওয়া যায় কিনা– সে প্রক্রিয়া চলছে।
দলের সিনিয়র নেতাদের কারাগারে আটক করে সেখানেও একটা সমঝোতার চেষ্টা করা হতে পারে বলে বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান। ওই নেতারা বলেন, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করে যেভাবে পুলিশি রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে– তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিরল ঘটনা। একমাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রিমান্ডে নেয়নি। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলমসহ অনেককে রিমান্ডে নিয়েছে। সেখানেও নির্বাচনে যাওয়া, নতুন দলে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হতে পারে; নানা প্রস্তাবও দেওয়া হতে পারে। আন্দোলনে থাকা বিএনপিকে ‘দুর্বল’ করতে এ ধরনের তৎপরতা শুরু হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন দলটির নেতারা।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাফিজ উদ্দিন আহমদ আপাতত বিএনপির রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত তিনি কী করবেন– তা পরিষ্কার নয়। কারণ এরই মধ্যে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরীও প্রথমে দল থেকে পদত্যাগ করে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন। পরে অবশ্য বিকল্পধারায় যোগ দেন। সর্বশেষ তৃণমূল বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব নিলেন। মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনও কী শেষ পর্যন্ত সে পথ অনুসরণ করবেন কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।
সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেন, বিএনপিতে ঐক্যের প্রতীক হচ্ছে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান। শুধু দলের নেতাকর্মী নয়, সারাদেশের জনগণ এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এ সরকারের বিরুদ্ধে। এ অবস্থায় ক্ষমতাসীনদের প্ররোচনায় কেউ ভুল করবে বলে মনে হয় না। দলের মধ্যে কারও রাগ-ক্ষোভ, দুঃখ-কষ্ট থাকতে পারে। সেটাকে পুঁজি করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে যদি তারেক রহমান তাদের সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে সেই আক্ষেপটুকুও উড়ে যাবে বলে তাঁর বিশ্বাস।

সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি