বিপিএল : সিলেটে একপেশে ম্যাচের পসরা

প্রকাশিত: ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৮, ২০২৪

বিপিএল : সিলেটে একপেশে ম্যাচের পসরা

আফজল হোসেন: রান পসরার জন্য বিখ্যাত সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবার যেন একপেশে ম্যাচের ‘হাট’ বসেছে। প্রথমে ব্যাট করা দল বড় সংগ্রহ দাঁড় করালেও, রান তাড়ায় যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন ব্যাটাররা। বিপিএল সিলেট পর্বের প্রথম দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ১৩০ রানের জবাবে সিলেট স্ট্রাইকার্স গুটিয়ে যায় মাত্র ৭৮ রানে। শনিবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে যেন একই চিত্র ফিরে এলো রংপুর রাইডার্স ও দুর্দান্ত ঢাকার ম্যাচে। রংপুরের ১৮৩ রানের জবাবে ঢাকা অলআউট হয় মাত্র ১০৪ রানে। ৭৯ রানে বিশাল জয়ে স্বস্তি ফিরেছে রাইডার্স শিবিরে।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে রংপুর রাইডার্সকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় দুর্দান্ত ঢাকা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা তেমন ভাল না হলেও বাবর আজমের (৬৬) ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে রংপুর।

ওপেনিংয়ে নেমে বাবর আজম ৪৬ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬২ রানের ইনিংস খেললেও অপর ওপেনার ব্র‍্যান্ডন কিং ফিরেছেন মাত্র ২০ রান করে। এরপর বাবরের ব্যাটেই এগিয়েছে রংপুর। তৃতীয় উইকেটে নুরুল হাসান সোহানের সঙে ৫০ রান এবং ষষ্ঠ উইকেটে আজমত উল্লাহ ওমজাইয়ের সঙে গড়েন আরও ৩৯ রানের জুটি। সোহান ২৬ রান আর আজমত উল্লাহ করেন ৩২ রান।

ঢাকার হয়ে আরাফাত সানি ৪ ওভারে ৩২ রান খরচায় শিকার করেন ৩ উইকেট। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, আলাউদ্দিন বাবু ও দানুষ্কা গুনাথিলকা।

জবাবে খেলতে নেমে রংপুরের বোলিং তোপে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ঢাকা। রান তাড়ায় মাত্র ৩২ রানের মাথায় প্রথম সারির ৪ ব্যাটারকে হারায় ঢাকা। রংপুরের তিন বোলার আজমত উল্লাহ ওমরজাই, মাহেদী হাসান ও মোহাম্মদ নবী মিলে একে একে ফেরান দানুষ্কা গুনাথিলকা (০), সাইম আইয়ুব (১৭), নাইম শেখ (১), এবং লাসিথ ক্রুফসলে (০)।

আরও পড়ুন  শাবিপ্রবি: আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা

শুরুর সেই বিপর্যয় কাটিয়ে ঢাকা একশো পার করে এলেক্স রসের ফিফটিতে। পাঁচে ব্যাট করতে এসে ঢাকার এই ব্যাটার ৩৫ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় খেলেন ৫১ রানের ইনিংস। এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান। বাকী ব্যাটারদের কেউ দুই অঙ্কের ঘর পার হতে পারেননি। ফলে ঢাকা ইনিংস ১৬.৩ ওভারে থামে মাত্র ১০৪ রানে। ঢাকা ৭৯ রানে হারিয়ে মাঠ ছাড়ে রংপুর।

রংপুর রাইডার্সের হয়ে ৩ টি উইকেট শিকার করেন মাহেদী হাসান। এছাড়া ২টি করে উইকেট পান আজমত উল্লাহ ওমরজাই ও হাসান মাহমুদ। একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ নবী।

৪৫ বলে ৬২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে রংপুরের জয়ের নায়ক বাবর আজম হয়েছেন ম্যাচ সেরা।

দিনের প্রথম ম্যাচে অবশ্যই একপেশে ছিল না, ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে প্রথম ব্যাট করা চট্রগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৯৩ রান। জবাবে খেলতে নেমে বরিশাল থামে ১৮৩ রানে। সিলেট পর্বের জমজমাট এই ম্যাচে চ্যালেঞ্জার্সের শ্বাসরুদ্ধকর ১০ রানের জয়ের নায়ক কার্টিস ক্যাম্ফার। ব্যাট হাতে ৯ বলে অপরাজিত ২৯ রানের মারকাটারি ইনিংস খেলার পাশাপাশি বোলিংয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। একই সাথে ফিল্ডিংয়েও দুর্দান্ত ছিলেন ক্যাম্ফার; ব্যাটিং-বোলিংয়ের মতো তালুবন্দি করেছেন দুর্দান্ত ৪টি ক্যাচ।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম ওপেনার অভিষ্কা ফার্নান্দোর অপরাজিত ৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তুলে ১৯৩ রান৷ ফার্নান্দো ৯১* রানের ইনিংস খেলার পথে তৃতীয় উইকেটে শাহদাত হোসাইন দিপুর (৩১) সাথে গড়েন ৭০ রানের দারুণ এক জুটি। চতুর্থ উইকেটে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে নিয়ে যোগ করেন আরও ৬৮ রান। শেষ দিকে কার্টিস ক্যাম্ফারের সাথে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রান যোগ করলে চট্রগ্রাম ১৯৩ রানের বিশাল পুঁজি পায়। ফার্নান্দো ৯১ রানের অপরাজিত ইনিংসটি সাজান ৭ ছক্কা এবং ৫ চারের সাহায্যে।

আরও পড়ুন  তারেক-জোবাইদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

ফরচুন বরিশালের হয়ে ২৬ রানে ২ উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন কামরুল ইসলাম ও ইয়ানিক ক্যারিয়া।

রান তাড়া করতে নেমে বরিশাল উদ্বোধনী জুটিতে তোলে ৫৫ রান। ওপেনিংয়ে খেলতে নেমে উড়ন্ত সূচনা
করেন আহমেদ শেহজাদ। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৭ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৩৯ রান৷ শেহজাদ হাত খোলে খেললে অপরপ্রান্তে নিষ্প্রভ ছিল তামিম ইকবালের ব্যাট। দলীয় ৯১ রানে তামিম আউট হলেও ৩৩ রান করতে এই ওপেনার বল খরচ করেন ৩০টি। ম্যাচ শেষে তামিমের এই ধীরগতির ব্যাটিংই বরিশালকে ম্যাচ জয়ের রেস থেকে পিছিয়ে দিয়েছে।

শেষদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ১৬ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ রানে ঝড়ো ইনিংস খেললে লড়াইয়ে ফিরে বরিশাল। বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ১০ রানের শ্বাসরুদ্ধকর জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে চট্রগ্রাম।

চট্রগ্রামের হয়ে ৩ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট শিকার করেন কার্টিস ক্যাম্ফার। এছাড়া বিলাল খানের পকেটে যায় ২ উইকেট এবং ১ উইকেট পান আল আমীন হোসাইন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ