সিলেট ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ৮:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০২৫
প্রভাতবেলা ডেস্ক: বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিল করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-৩) সাইয়েদ এ. জেড. মোরশেদ আলী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা থাকবে কি না সে বিষয়ে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সরকারের বিদ্যমান কোটার নীতিমালা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে অনেক ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন। নারী কোটা বহাল রাখা হলে তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে। এটি হতে দেওয়া যায় না। বিষয়টি অনুধাবন করেই সরকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিল করতে যাচ্ছে।’—মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নারী কোটা বাতিলের বিষয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিল। সেই আবেদনের আলোকে বিষয়টি নিয়ে একাধিক সভা হয়েছে। সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে। এ মতামতের ফলে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেননা কোটার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সেখানে নারী কোটার কথা উল্লেখ করা হয়নি। শুধুমাত্র ৭ শতাংশ কোটা বহাল রাখার কথা বলা হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এনটিআরসিএকে নিয়োগ সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। যে কোনো সময় এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন করা হবে।’
১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার নতুন আদেশ জারি করে তা বাধ্যতামূলক করে। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অনগ্রসর এলাকায় নারী প্রার্থীর চরম সঙ্কট দেখা দেয়। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে অনেক ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছেন। নারী কোটা বহাল রাখা হলে তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে। এটি হতে দেওয়া যায় না। বিষয়টি অনুধাবন করেই সরকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ নারী কোটা বাতিল করতে যাচ্ছে।’
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে ৩০ শতাংশ নারী কোটা চালু করা হয়। কিন্তু পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংকের সুপারিশে ২০০৪ সালে বিএনপি সরকার নতুন আদেশ জারি করে তা বাধ্যতামূলক করে। এ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের অনগ্রসর এলাকায় নারী প্রার্থীর চরম সঙ্কট দেখা দেয়। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলা ও উপজেলায় নারী কোটা শিথিল করে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন ২০২৪ সালের ২৪ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সরকারি চাকরির সব গ্রেডেই (৯ম-২০) ৭ শতাংশে কোটা রেখে বাকি ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার এই মর্মে আদেশ জারি করছে, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রজাতন্ত্রে কর্মে প্রতিনিধিত্ব লাভ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্থাৎ সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে/কর্মে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সব গ্রেডে নিম্নরূপ কোটা নির্ধারণ করা হইল।
ক- মেধাভিত্তিক ৯৩ শতাংশ, খ-মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, গ-ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং ঘ-শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট কোটার শূন্য পদগুলো সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা এবং বিগত ৪ অক্টোবর ২০১৮ তারিখের পরিপত্রটিসহ পূর্বে জারিকৃত এ-সংক্রান্ত সব পরিপত্র/প্রজ্ঞাপন/আদেশ/নির্দেশ/অনুশাসন রহিত করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি