৬ বছরেও তাহিরপুরে পর্যটন শিল্প স্থাপন হয় নি

প্রকাশিত: ৯:০৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০১৬

তাহিরপুর থেকে সংবাদদাতা: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় বিপুল পরিমান কয়লা,চুনাপাথর,আমদানী ও বালি,পাথর,ধান রফতানীর মধ্যে দিয়ে সরকার পাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজ্যস্ব। আর পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুধু অবহেলা আর প্রতিশ্রুতির মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে তাহিরপুরের পর্যটন শিল্প স্থাপনের কর্যক্রম। আমলাতান্ত্রিক জটিলাতা ও চিঠি আদান-প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে তাহিরপুরে সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যত্ব।
প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ৬বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কোন প্রকার উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। অথছ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন টাংগুয়ার হাওর,টেকেরঘাট ও বারেক টিলায় দেশের বিভিন স্থানের হাজার হাজার পর্যটক আসছে সারা বছরেই। জীববৈচিত্র্যে ও বিপুল সম্পদে,সুন্দর্যে ভরপুর টাংগুয়ার হাওর,ভারতীয় মেঘালয়ের সীমান্ত ঘের্সা বারেকটিলা,রুপের নদী,সম্পদের নদী,সৌন্দর্যের নদী যাদুকাটা থাকা সত্ত্বেও পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ না নেওয়ার কারনে ক্ষুব প্রকাশ করছেন উপজেলার সর্বস্থরের জনগন। পর্যটন কেন্দ্র বাস্তবায়ন হলে সরকার যেমন লাভবান হবে সেই সাথে এলাকার শিক্ষিত বেকার লোকজনের র্কমসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হত।
১৯৯৪ সালে বিএনপির প্রয়াত সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী সাইফুর রহমান টেকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পে এক জনসভায় তাহিরপুরে একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরী,একটি কাচঁ শিল্প ও টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলায় একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলার প্রতিশ্রুতিদেন। কিন্তু ২১বছরেও তা পূরন হয় নি। জোট সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য শত কোটি টাকার পরিকল্পনা করা হয়। কোন কাজেই আসে নি এসব কার্যক্রমের। চিঠি আদান-প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে তাহিরপুরে সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যত্ব।
অন্য দিকে ২০১০সালের ১০নভেম্বর বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তাহিরপুর উপজেলা সদরে এক বিশাল জনসভায় টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলা,যাদুকাটা নদী,টেকেরঘাট কে ঘিরে পর্যটন শিল্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতিদেন। সেই প্রতিশ্রুতির পরে পর্যটন করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। সীমান্ত এলাকার প্রায় ৫০একর জায়গায় এই পর্যটন কেন্দ্রের অবকাঠামো গড়ে তোলার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ভূমি প্রত্যয়নের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে ২০১১সালে ১৫মে একটি পত্রে মতামত চাওয়া হয়। ভূমিতে অনাপত্তি জানিয়ে প্রত্যয়ন করে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসন কে ঐ পত্রে নিদের্শনা দেওয়া হয়। ২০১১সালের ৩০ জুন মন্ত্রণালয় ১৮৪৮নং স্মারকে আরেকটি পত্র জেলা প্রশাসনকে পাঠায়। জেলা প্রশাসন উক্ত ভূমিতে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য অনাপত্তি জানিয়ে আরেকটি প্রত্যয়ন পত্র ও প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এভাবেই একের পর এক প্রতিশ্রুতি আর ফাইল ও প্রস্তবনা আদান-প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তাহিরপুরে পর্যটন শিল্পের কর্যক্রম।
যার ফলে তাহিরপুর উপজেলা সহ সুনামগঞ্জ জেলা বাসীর মাঝে এক প্রশ্ন জন্ম নিয়েছে প্রধান মন্ত্রী কি তাহিরপুর উপজেলাবাসীর কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করবেন নাকি প্রতিশ্রুতির মাঝে সীমাদ্ধ থাকবেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান-নিবার্চন আসলে ও কোন বড় ধরনের সমাবেশ হলেই নেতা-নেত্রীদের মুখে শুধু আশার বানী শুনতে পাই কাজের বেলায় কিছুই নাই। আমরা তাহিরপুর বাসী শুধু কি আশার বানী শুনতেই বেচেঁ আছি,আমরা প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই।
তাহিরপুর বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম,সাদেক আলী,শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জনমেজর ভূঁইয়া,চিকিৎসক কৌষিক পাল,বেড়াতে আসা বিভিন্ন পর্যটকগন সহ অনেকেই জানান-টাংগুয়ার হাওর,টেকেরঘাট ও বারেকটিলায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা এখন সময়ের দাবী। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হওয়ায় পর্যটকদের এখানে বেড়াতে আসা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল জানান-টাংগুয়ার হাওর,টেকেরঘাট ও বারেকটিলা তাহিরপুর উপজেলার আকর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উপযোগী স্থান বিবেচনা করে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ৬বছর পূর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি কেবল প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে এর কোন কার্যক্রম আমরা দেখতে পারছি না। ফলে এলাকাবাসীর মনে চরম ক্ষোবের সঞ্চার হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান-তাহিরপুরের টাংগুয়ার হাওর,টেকেরঘাট,বারেকটিলা ঘিড়ে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাছিনা পর্যটন শিল্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতির সে লক্ষ্যে আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বাতœক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন হলে স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে ও এলাকার মান উন্নয়ন হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ