সিলেট ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২০
প্রভাতবেলা প্রতিবেদক ♦ প্রকৃতিকন্যা জাফলং-এর পরিবেশ বিপন্ন।পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি দেদারছে চলছে বালু উত্তোলন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় বালু উত্তোলন করে পরিবেশ বিপন্ন করে তুলছে দুর্বৃত্তচক্র। এ নিয়ে পরিবেশবিদদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কার্যকলাপে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে জাফলংকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সিলেটের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ের পরিবেশ রক্ষায় ‘পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা’ (ইসিএ) ঘোষণা করা হয় ২০১২ সালে। আর ২০১৭ সালে জাফলংকে ভূতাত্ত্বিক ঐতিহ্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। কিন্তু এসব ঘোষণা বা উদ্যোগও রক্ষা করতে পারছে না প্রকৃতিকন্যা জাফলংকে। ইসিএভুক্ত এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও এখন রাতদিন যন্ত্র বসিয়ে চলছে বালু উত্তোলন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসিএভুক্ত এলাকায় বালু ও পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।এরপরও প্রায় একমাস ধরে গোয়াইনঘাটের জাফলং নদীতে মেশিন বসিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে বালু উত্তোলন চলছিল। এক সপ্তাহ ধরে জাফলং চা বাগান, নয়াবস্তি ও খাসিয়া পুঞ্জির পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে প্রকাশ্যে রাতদিন চলছে বালু উত্তোলন। উত্তোলিত বালু সড়ক ও নদীপথে নেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। পরিবেশ বিপন্ন করে যন্ত্রের মাধ্যমে ইসিএভুক্ত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন হলেও রহস্যজনক কারণে স্থানীয় প্রশাসন নীরব রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
এলাকার লোকজন জানান, এই বালু উত্তোলনে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। রয়েছে কতিপয় রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়া। শ্রমিক আর ঠিকাদার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করলেও প্রভাবশালীরা থাকেন আড়ালে। এই বালু উত্তোলন চক্রে রয়েছেন শামসুল আলম, ইমরান হোসেন সুমন ওরফে জামাই সুমন, আলিম উদ্দিন, ফিরোজ মিয়া, আলা উদ্দিন, ফয়জুল ইসলাম, আতা্উর রহমান ওরফে আতাউর মেম্বার প্রমূখ। একসময় এরাই জাফলংয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের চক্রটি নিয়ন্ত্রণ করতেন। পরিবেশবাদীদের অভিযোগ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে জাফলংকে একসময় বলা হতো ‘প্রকৃতিকন্যা’। কিন্তু অতিলোভী পাথর ও বালু উত্তোলনকারীদের কারণে জাফলংয়ের পরিবেশ ধ্বংসপ্রায়। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল, কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে এই চক্রটি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। প্রায় একবছর ধরে জেলা প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। তবে, বালু উত্তোলনে বেপরোয়া পরিবেশ বিধ্বংসী চক্রটি।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ওসি জানান, জাফলং থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি তিনি জেনেছেন। উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতরা বালু পরিবহনের অনুমতির কাগজপত্র দেখিয়েছেন। তবে বালু উত্তোলনের কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। বালু উত্তোলন বন্ধে কয়েকদিনের মধ্যে বড় অভিযান হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ শাহিদা আকতার বলছেন, ইসিএভুক্ত এলাকা থেকে বালু-পাথর উত্তোলন ও পরিবহনের কোনো সুযোগ নেই। এরকম কোনো অনুমতি কেউ দিলে সেটা আদালত অবমাননার শামিল হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম. কাজী এমদাদুল ইসলাম জানান, জাফলং থেকে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ জন্য জাফলংয়ের পরিবেশ আগের চেয়ে অনেক ভালো। বালু উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা নেই। এ ব্যাপারে তিনি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি