যেখানে ছাত্রীরা মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে যাতায়াত করে

প্রকাশিত: ১০:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০১৭

সংবাদদাতা, রাজশাহী: দেশের কয়েকটি জেলায় বাইসাইকেল চালিয়ে মেয়েদের স্কুল বা কলেজে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। কিন্ত বাইসাইকেল নয়, পুরোদমে মোটরসাইকেল চালিয়ে এখন কলেজে যাতায়াত করে গ্রামের মেয়েরা।
পাবনার বেড়া উপজেলার কাশীনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের অনেক ছাত্রী নিজেই মোটরসাইকেল চালিয়ে ক্লাসে আসে।
এতে সামান্য নেতিবাচক মন্তব্য করলেও অধিকাংশ মানুষ এটিকে মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার ইতিবাচক ঘটনা বলে মনে করেন।
যমুনা নদীর তীরবর্তী বেড়ার সাতটি ইউনিয়নসহ সুজানগরের কয়েকটি ইউনিয়নের মেয়েদের জন্য বানিজ্যকেন্দ্র কাশিনাথপুরে মহিলা কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে।
প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে অনেক শিক্ষার্থীকে কলেজে যাতায়াত করতে হয়। এতে সময় এবং অর্থ দুই-ই বাধা হয়ে দাঁড়ায় অধিকাংশ ছাত্রীর কাছে।
এ বছরের প্রথম থেকে কয়েকজন ছাত্রী মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে আসা যাওয়া শুরু করে। এতে গ্রামের এবং কলেজ এলাকাসহ পথে অনেকেই টিপ্পনী কাটা শুরু করে।
কিন্ত এসব মেয়েদের অদম্য ইচ্ছা ও ব্যক্তিত্বের কাছে হার মানে ওইসব টিপ্পনীকারীরা।
এ কলেজের শিক্ষার্থী রাফিয়া আক্তার মিম ও বেবী নাজনীন জানান, তারা ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে প্রতিদিন মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে আসে।
এখন আর কেউ কিছু বলতে সাহস পায় না। তাদের দেখাদেখি আরও অনেকেই এখন মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে আসা যাওয়া করেন।
একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বেবী নাজনীন জানায়, ‘সে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার দূর থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে কলেজে যাতায়াত করে। এতে করে তার অনেক সময় বেঁচে যায়।
একাদশ শ্রেণির আরেক ছাত্রী রাফিয়া আক্তার মিম জানান, কলেজ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভাটিকয়া গ্রামে তার বাড়ি। কলেজে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটিও জায়গায় জায়গায় ভাঙ্গা। তাই যানবাহনে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তাই তার বাবা তাকে মোটরসাইকেল কিনে দেন।
মিম বলে, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা মেয়েরা কেন পিছিয়ে থাকবো? ছেলেরা যদি মোটরসাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করতে পারে, তবে আমরা কেন পারব না?’
ছাত্রীরা জানান, তাদের অনেক সহপাঠীর অভিভাবক তাদের জন্য মোটরসাইকেল কিনে দিচ্ছেন। আগামী বছর থেকে দূর থেকে আসা মেয়েদের অধিকাংশ মেয়েই মোটরসাইকেল চড়ে কলেজে যাতায়াত করবে।
কাশিনাথপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম খান বলেন, ‘প্রথমে কেউ কেউ ব্যাপারটি নিয়ে সমালোচনা করলেও এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এখন আর কেউ কিছু বলে না।’ এটিকে মেয়েদের অগ্রযাত্রা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীরাও এখন মোটরসাইকেলে যাতায়াত করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে। আগামীতে দূর-দূরান্তের অনেক শিক্ষার্থীই বাইক কিনবে বলে জানা গেছে’।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ