শেখ হাসিনা : সাগা অব অ্যা ফিয়ারলেস লিডার

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২, ২০২৩

শেখ হাসিনা : সাগা অব অ্যা ফিয়ারলেস লিডার

শেখ ফয়সল আমীন

বঙ্গবন্ধুর মেয়ে হিসেবে তিনি ভয়ডরহীন হবেন, এটাই স্বাভাবিক ও সহজাত। কিন্তু কালের পরিক্রমায়, সহস্র প্রতিকূলতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তিনি যে সর্বকালের সর্ব-সাহসী বাঙালি নারী হয়ে উঠবেন তা হয়তো আমরা বা বিশ্ববাসী ভাবেনি কখনো। জীবন সমুদ্রের ছিয়াত্তর ঢেউ তিনি পেরিয়েছেন অসীম সাহস আর শৌর্যে। তাঁর এই সাহসযাত্রার সূচনা সেই বালিকাবেলায়। যে বয়সে আমাদের মেয়েরা একা স্কুল বা বাজারে যেতে ভয় পায়, সেই বয়সে বাবার জন্য তিনি মাড়িয়েছেন জেলখানার চৌকাঠ, হয়েছেন রাজনীতি আর স্বাধিকার আন্দোলনের বার্তা-বাহক। সমর্পিত যৌবনের নানা রঙের দিনগুলো তিনি রাঙিয়েছেন রাজপথে, মিছিলে, স্লোগানে। মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি যাপন করছেন সংসার আর সংগ্রামের এক যুগপৎ জীবন। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে স্বজন ও শরণহারা এক পাখিও তিনি। তবে তিনি ফিনিক্স পাখির মতোই তেজোদীপ্ত; যিনি ঝড় আর মেঘকে হাতের মুঠোয় করে বারবার ফিরে আসেন সূর্যের মুখে হাসি ফোটাবেন বলে; যিনি শাড়ীর আঁচলে জীবন বেঁধে মানুষের জন্য করেন যুদ্ধ; দেশের তরে বিলিয়ে দেন ব্যক্তি-সুখ আর স্বাচ্ছন্দ্য। তিনি সব হারিয়েও সর্বজয়ী হয়ে উঠেন মানুষের মমতা আর ভালোবাসায়। দেশবাসীর প্রতি তাঁর যে দায়বদ্ধতা তা আজ স্বদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববাসীর স্বার্থে এবং সৌজন্যে প্রতিফলিত হচ্ছে। বলছি—শেখ হাসিনার কথা। একটি শান্তি আর সৌহার্দপূর্ণ স্বদেশ ও বিশ্ব নির্মাণের প্রত্যয়ে যিনি হয়ে উঠেছেন মানুষের আশা ও আস্থার অবিকল্প সারথি।

পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার জন্য সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ ছিল মাতৃভূমিতে ফিরে গিয়ে পিতা হত্যার বিচার ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তিনি যখন বাংলাদেশে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন তখনই নানামুখী প্রতিকূল তৎপরতা আরও বেড়ে যায়। তৎকালীন সরকার স্পিকার মির্জা গোলাম হাফিজকে আহ্বায়ক করে ‘শেখ হাসিনা আগমন প্রতিরোধ কমিটি গঠন’ করে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে প্রকাশ্যে বিবৃতি দেয়; এছাড়া পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থা ও তাদের বিদেশি মিত্র শক্তিসমূহের নানামুখী প্রতিবন্ধকতা ও অপচেষ্টার কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিঁড়ে, সহস্র শ্বাপদের বুক মাড়িয়ে প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে রাজনীতিবিদ হিসেবে শেখ হাসিনার প্রথম জন-প্রতিশ্রুতি ছিল—‘বাংলার জনগণের পাশে থাকার জন্য আমি এসেছি, মুক্তির সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য আমি এসেছি; আমি আওয়ামী লীগের নেতা হওয়ার জন্য আসিনি। আমি আপনাদের বোন হিসেবে, কন্যা হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।…বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। বাংলার দুঃখী মানুষের সেবায় আমি আমার এ জীবন দান করতে চাই। পিতা-মাতা, ছোট ভাই রাসেলসহ সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই।…আমি বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থসামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই’ [১৭ই মে ১৯৮১]। সে সংগ্রাম-পথে তাঁর ওপরে একুশবার প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে। তবুও তিনি রণেভঙ্গ দেননি। কারণ তাঁর জীবনদর্শন বলে—‘জীবনের ঝুঁকি নিতেই হয়, মৃত্যুকে ভয় করলে জীবন মহত্ত্ব থেকে বঞ্চিত হয়’ [সাপ্তাহিক নিউজউইক’কে দেওয়া সাক্ষাৎকার, ১৯৮১]। তিনি স্বৈরতন্ত্র আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন; পাশাপাশি বলয়ভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার পরিবর্তে সমতা ও ন্যায্যতাভিত্তিক বিশ্বের রূপরেখা প্রণয়ন করেছেন। বিশ্ব ব্যাংক ও বহুপক্ষীয় বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ শেখ হাসিনার এক অনতিক্রম্য সাহস-সাক্ষর।

স্টেটসম্যান হিসেবে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতার প্রথম সাক্ষ্য মেলে ‘গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তি-১৯৯৬’ এবং ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি ১৯৯৭’ সম্পাদনের মধ্য দিয়ে। এই paradigm shift বাংলাদেশ বিষয়ে বিশ্বকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করেছে। যার ফলে ইউনেস্কো তাঁকে Félix Houphouët-Boigny Peace Prize 1998-এ ভূষিত করে এবং বলে—After the bitter experience of exile, you returned home and won the 1996 elections, becoming Bangladesh’s tenth Prime Minister. No sooner did you take up office at the helm of the nation, than you sought to end the conflict in the region of Chittagong where rebel forces had long since taken up arms. You proceeded in a spirit of understanding and reconciliation, attentive to all the complexities of the situation, building up confidence in order to build peace. Finally, your untiring efforts were repaid: a quarter century of civil war in the region was ended with the signing of a peace accord on 2 December 1997…. Your peace-making efforts within your country’s borders have been matched by your dedication to the cause of a global culture of peace. Your commitment played no small part in furthering international support for a culture of peace. [পুরস্কার প্রদান অভিভাষণ, ২৪শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৯] তবে শেখ হাসিনা শুধু নিজের দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়ে প্রশান্ত হননি, তিনি বিশ্বশান্তি প্রসঙ্গে সর্বদা সজাগ এবং সর্বস্থানে সোচ্চার। তিনি ফিলিস্তিনসহ সারা বিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত ও অধিকার বঞ্চিত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে বিশ্ব দরবারে প্রতিনিধিত্ব করেন। তাইতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৬তম সম্মেলনে বিশ্বশান্তি রক্ষায় শেখ হাসিনা ৬ দফাভিত্তিক একটি শান্তির মডেল উপস্থাপন করেন; যার লক্ষ্য হচ্ছে সকল মানুষকে সমান চোখে দেখা এবং মানবিক সামর্থ্য উন্নয়নের কাজে লাগানো।

আরও পড়ুন  করোনাযুদ্ধ জয়ী যুবকের জবানবন্দি

 

শেখ হাসিনার কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব, রাজনৈতিক গাম্ভীর্য এবং মানবিক ঔদার্য বৈশ্বিক পরিসরে তাঁকে একটি প্রভাবকস্থানীয় মর্যাদা দিয়েছে। তিনি যা বলেন বিশ্ব সেটিকে আমলে নেয়; বিশ্লেষণ করে। যেমন তিনি বলেছেন—‘ন্যায়বিচার হলো শান্তির পূর্বশর্ত যা উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করে এবং একই সাথে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার সংরক্ষণ, বাস্তুসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নিরাপদ পানির ন্যায্য বণ্টনে ভূমিকা রাখে’ [জাতিসংঘের ৬৮তম সাধারণ অধিবেশন, নিউইয়র্ক, ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০১৩]। কথাগুলো তিনি বলেছেন তাদের উদ্দেশে যারা বিশ্বে একক আধিপত্যের স্বপ্ন দেখে এবং যার ফলে বিশ্বব্যবস্থায় সৃষ্টি হয় নৈরাজ্য। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনসহ সর্বজনীন-স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে শক্তিধর দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংঘ ও জোটকেও তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্মরণ করিয়ে দিতে তিনি পিছপা হন না। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে—‘আমাদের সন্তানদের জন্য একটি সমান সুযোগ আর সম্ভাবনাময় পৃথিবী নিশ্চিত করে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি—এমন একটি পৃথিবী যা আমাদের উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পৃথিবীর চেয়ে উন্নততর এবং সজীব’ [‘ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠান, নয়াদিল্লী, ১২ই জানুয়ারি ২০১০]। শেখ হাসিনার চরিত্রের সবচেয়ে বড়ো গুণ হচ্ছে তাঁর বাস্তবমুখিতা ও প্রকৃতি-সংলগ্নতা যা তাঁকে প্রাণ ও প্রকৃতির প্রতিনিধিত্বকারী নেতা হিসেবে চিত্রিত করেছে।

 

বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীর ক্ষমতায়নের সফল রূপকার শেখ হাসিনা। তবে সে-পথেও তাঁকে লড়তে হয়েছে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে নারীকে এগিয়ে নিতে তিনি সকল ধরনের ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। নারীর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা; নিরাপদ পরিবেশ,পরিবার ও সমাজ; উন্মুক্ত কর্মক্ষেত্র তিনি নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আসনসমূহের ক্ষেত্রে নারীর প্রাপ্য মূল্যায়নের মাধ্যমে তিনি পুরুষতান্ত্রিক মনস্তত্ত্বে এক চরম আঘাত হেনেছেন; শুদ্ধাচার এনেছেন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে। দেশের সীমানা পেরিয়ে নারীর জন্য একটি টেকসই এবং ভারসাম্যপূর্ণ বিশ্ব বিনির্মাণেও তিনি সোচ্চার। তাইতো বিশ্বসভায় তিনি বলেন—‘আমি মনে করি টেকসই উন্নয়নের অর্থ হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে নারীর সমান অংশগ্রহণ’ [জাতিসংঘের ৬৯তম সাধারণ অধিবেশন, নিউইয়র্ক, ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০১৪]।

 

একটি সমতাভিত্তিক এবং মানবিক বিশ্ব রূপায়ণে শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি ও প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি এমন একজন ব্যক্তিত্ব যার কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বার্থ। আমরা জানি—জনশক্তি অভিবাসনের অর্থনীতি বর্তমান বিশ্বে একটি বৃহৎ অর্থনীতি। যে কোনো দেশের অভিবাসীরা তাদের দেশের অর্থনীতিতে একটি স্বাস্থ্যকর ভূমিকা রাখে। তবে একটি নির্মম সত্য হচ্ছে, অভিবাসীরা হোস্ট-কান্ট্রিগুলোতে নিয়মিতভাবে নানারকম তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। তাদের বঞ্চনা ও নিগ্রহের অনেক হৃদয়-বিদারক ঘটনা আমরা মাঝে মধ্যেই শুনতে পাই। শেখ হাসিনা তাদের কথা ভাবেন, তাদের জন্য বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলেন—‘অভিবাসীকে শুধু অর্থনৈতিক কার্যক্রম বা উৎপাদনের উপাদান হিসেবে দেখলে চলবে না। তাঁদের মানুষ হিসেবে গণ্য করতে হবে। অন্যান্য নাগরিকের মতো তাঁদের জন্যও সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে [অভিবাসন সংক্রান্ত বৈশ্বিক বিশেষজ্ঞসভা, ঢাকা, ২৮শে এপ্রিল ২০১৪]।

বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় সবচেয়ে গভীর সংকট ও বিষফোঁড়া হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ; যা করোনা পরবর্তী মানবিক পুনর্বিন্যাসকে ব্যাপকভাবে ব্যাহত করেছে। সবাই এ-যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে অবগত, অথচ সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণে নির্লিপ্ত। তবে শেখ হাসিনা এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, তিনি সকল নিরবতার ঊর্ধ্বে উঠে উচ্চকিত কণ্ঠে বলেন—“আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই।…বিশ্ব বিবেকের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, স্যাংশন বন্ধ করুন। শিশুকে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা দিন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।” পাশাপাশি রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি লোকদেখানো আন্তর্জাতিক তৎপরতার মুখোশ উন্মোচন করে বলেন—‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক এবং জাতিসংঘসহ অন্যান্য অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সত্ত্বেও একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের মাতৃভূমিতে ফেরত পাঠানো যায়নি’ [জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশন, নিউইয়র্ক, ২০২২]। একজন শেখ হাসিনা যখন আন্তর্জাতিক সদিচ্ছা ও সদাচার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তখন অপর প্রান্তে থেকে কোনো সদুত্তর থাকে না; এটাই বাস্তবতা। তবে বিশ্ব তাঁর এই মানবিক ও আন্তরিক নেতৃত্বকে সব সময় শ্রদ্ধা ও স্বাগত জানায়। সে কারণে তিনি ‘সাউথ-সাউথ অ্যাওয়ার্ড’, ‘ট্রি অব পিস-২০১৪’, ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ-২০১৫’, ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’, ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’, ‘আইপিএস ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’, ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-সহ নানা পদক এবং ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’-সহ নানা উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন এবং হচ্ছেন।

আরও পড়ুন  করোনা: ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে নারায়ণগঞ্জ

অতিসম্প্রতি ভারতে জি-২০ সম্মেলন হয়ে গেল। সে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুরো আয়োজনে কী এক অসাধারণ মায়াভরা বিচরণ ছিল তাঁর। ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’—প্রতিপাদ্যকে বাস্তবরূপ দেওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি যেটি প্রয়োজন সেটি হলো আন্তরিকতা; শেখ হাসিনা সেই আন্তরিকতারই প্রোজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। বিশ্ব গণমাধ্যমের কল্যাণে সে সম্মেলনের কিছু ছবি আমরা দেখতে পেয়েছি যা একান্ত আন্তরিকতার প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকবে। বলা যেতেই পারে—শেখ হাসিনার মমতাময়ী দৃষ্টিভঙ্গি ও অকৃত্রিম ব্যক্তিত্বের মাঝে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ এক নির্ভরযোগ্য মাতৃছায়া খুঁজে পেয়েছেন। কঠিন ও কোমলে গড়া শেখ হাসিনা তাইতো আজ বিশ্বের কাছে অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় নেতা ও মানুষ। তাঁর ইস্পাত-কঠিন নেতৃত্বের স্ফুরণ ঘটেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮ তম সভাতেও। সেখানে শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছেন, ‘যুদ্ধ ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানব জাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন।’ তিনি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্ম-অক্ষমতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও বৈধতা নিয়ে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। ফলে একটা শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অর্জিত সাফল্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’ সবমিলিয়ে শেখ হাসিনা এক বিপ্লব-উপাখ্যান; যার নাম দেওয়া যেতে পারে—শেখ হাসিনা; সাগা অব অ্যা ফিয়ারলেস লিডার। বঙ্গবন্ধুকন্যাকে তাঁর ৭৭তম জন্মদিনে সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা।

লেখক : কলামিস্ট, বিশ্লেষক

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ