সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ |
প্রকাশিত: ৩:৪০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৮, ২০১৭
অটোমান সাম্রাজ্যের কাহিনী নিয়ে নির্মিত ‘সুলতান সুলেমান’ সিরিয়ালটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইতিহাস-আশ্রয়ি তুর্কি ধারাবাহিক টেলিভিশন নাটকটি বিশে^র প্রায় ৪০টি দেশে সম্প্রচারিত হয় ভিন্ন নামে। সাড়া জাগানো এই সিরিয়ালের বিভিন্ন চরিত্র, অভিনয় শিল্পী ও কন্ঠদাতাদের নিয়ে রয়েছে কৌতুহল। বিশেষ করে বাংলাদেশী কারা এই সিরিয়ালে কন্ঠ দিয়েছেন। কোন দেশের অভিনেতা অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন এসব না জানা তথ্য নিয়েই এই প্রতিবেদন।‘সুলতান সুলেমান’ এর অজানা কথা নিয়ে লিখেছেন সাজনা বেগম ও জলি রানী দাস
সুলতান সুলেমান তুর্কি উচ্চারণ মুহতেশেম ইউযিয়েল ইংরেজি ম্যাগনিফিসেন্ট সেঞ্চুরি, (অর্থঃ জমকালো শতাব্দী) হল মেরাল ওকেয় ও ইয়িল্মায শাহিন রচিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে প্রচারিত একটি ইতিহাস-আশ্রয়ি তুর্কি ধারাবাহিক টেলিভিশন নাটক। প্রাথমিকভাবে তুরস্কের শো টিভিতে নাটকটির সম্প্রচার শুরু হলেও পরবর্তীকালে তুরস্কের স্টার টিভিতে এর সম্প্রচার স্থানান্তর করা হয়। বাংলাদেশের বেসরকারি চ্যানেল দীপ্ত টিভি ২০১৫-র ১৮ নভেম্বর থেকে ধারাবাহিকটি বাংলা ভাষায় সম্প্রচার শুরু করে। নাটকটি নির্মিত হয়েছে উসমানীয়সাম্রাজ্যের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়কালব্যাপী রাজত্ব বিস্তারকারী উসমানীয়সম্রাট প্রথম সুলাইমান এবং তার প্রিয়তম স্ত্রী হুররেম সুলতানের জীবনগাঁথার উপর ভিত্তি করে, যিনি সুলায়মানের কৃতদাসী হয়েও পরবর্তীকালে তার প্রধান স্ত্রী বা সুলতানা হিসেবে সম্মানিত হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন।
দীপ্ত টিভিতে প্রচারিত ভিনদেশি সিরিয়ালটিতে বাংলায় ডাবিং করা হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশি কণ্ঠশিল্পীরা বিভিন্ন চরিত্রের সংলাপগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন।
সিরিয়ালটির অন্যতম প্রধান দুই চরিত্র সুলতান সুলেমান ও তাঁর স্ত্রী হুররাম সুলতানের অভিনয় অনেক প্রশংসিত হয়েছে। চরিত্র দুটিতে অভিনয় করেছেন তুর্কি অভিনয়শিল্পী হেলিট এরজেনস ও মেরিয়ম উজেরেলি।
আর তাঁদের দেওয়া সংলাপগুলো বাংলায় ডাবিং করেছেন দীপক সুমন ও মেহবুবা মিনহাজ। সুলতান সুলেমানের কণ্ঠ দেওয়ার পাশাপাশি সিরিয়ালের সব বাংলাদেশি ডাবিং শিল্পীর কণ্ঠ দেওয়ার বিষয়টি সমন্বয় ও পরিচালনা করেছেন দীপক সুমন নিজেই।
দীপক সুমন মঞ্চ ও টিভি অভিনেতা। অন্যদিকে, মেহবুবা মিনহাজও একজন মঞ্চ নাট্যকর্মী। বেশ কিছু টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি।
সুলতান সুলেমানে কণ্ঠ দেওয়ার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে প্রভাতবেলা’র সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা দুজন।
দীপক সুমন বলেন, “ডাবিংয়ের সময় আমরা বুঝেছিলাম, ‘সুলতান সুলেমান’ বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে। কারণ, সিরিয়ালের গল্পটাই জমে যাওয়ার মতো, মানে অসাধারণ। আমাদের ধারণাই সত্যি হয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধারা পর্যন্ত ‘সুলতান সুলেমান’ দেখছেন। প্রশংসা করছেন। আমাদের কষ্ট সার্থক হয়েছে। খুব আনন্দ নিয়ে কাজটা আমরা করেছিলাম।”
অন্যদিকে মেহবুবা মিনহাজ বলেন, ‘আমি তো মঞ্চনাটকে অভিনয় করি। টিভি নাটকে খুব কম অভিনয় করেছি। কিন্তু হুররাম সুলতানের ডাবিং করা আমার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। আপনি খেয়াল করবেন, হুররাম সুলতানের সংলাপগুলোতে অনেক আপ অ্যান্ড ডাউন রয়েছে। কখনো হুররাম সুলতান কাঁদেন আবার কখনো জোরে জোরে হাসেন। মাঝেমধ্যে তাঁর নিশ্বাস ছাড়ারও অভিনয় রয়েছে। এসব আমি করতে পেরেছি, কারণ কণ্ঠ দেওয়ার আগে হুররাম সুলতানের অভিনয় খুব ভালোভাবে আমি পর্যবেক্ষণ করেছি। খেয়াল করতাম, সে কীভাবে কথা বলছে, হাঁটছে, সবকিছুই। যদিও তুর্কি ভাষার আমি কিছুই বুঝি না। ’
এদিকে, সুলতান সুলেমানের কণ্ঠশিল্পী হওয়ার পর অনেক মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে দীপক সুমন ও মেহবুবা মিনহাজের। দীপক সুমন জানান, তাঁর সাত বছর বয়সী মেয়ে ও তার বন্ধুরা মিলে খেলার ছলে স্কুলে সুলতান সুলেমানের অভিনয় করে। কিন্তু তাঁর মেয়ের বন্ধুরা কেউই জানত না, সুলতান সুলেমানে কণ্ঠ তাঁর দেওয়া। একদিন এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তাঁর বাসায় মেয়ের বন্ধুর মায়েরা এসে যখন সুলতান সুলেমান সিরিয়ালের প্রশংসা শুরু করেন, তখন তাঁর স্ত্রী নাকি বলেই ফেলেন, ‘তোমাদের সুলতান সুলেমান এখানেই আছে। সুমন সুলতান সুলেমানের কণ্ঠ দিচ্ছে।’ আর তখনই সবাই নাকি তাঁর সেলফি আর অটোগ্রাফ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
অন্যদিকে, মেহবুবা মিনহাজ জানান, তিনি হুররাম সুলতানের কণ্ঠ দিচ্ছেন, এটা তাঁর বন্ধুরা প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন। তবে সেটা কণ্ঠ শুনে নয়, তাঁরা নাকি বুঝতে পেরেছিলেন হাসির শব্দ শুনে। একদিন তাঁর এক বন্ধু ফোন করে বলেছিলেন, ‘কীরে হুররাম সুলতানের হাসি আর তোর হাসির মধ্যে এত মিল কেন? ঘটনা কী?’ বন্ধুর কথা শুনে অনেক মজা পেয়েছিলেন মেহবুবা। সঙ্গে সঙ্গে সত্যি কথাটাও বন্ধুকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। আর সিরিয়ালে ‘সুলেমান…’ ডাকার সংলাপটাই নাকি বেশি প্রিয় মেহবুবার। বন্ধুরা এটা নিয়েও মাঝেমধ্যে তাঁকে খেপায়।
ডাবিং রুমে কণ্ঠ দেওয়ার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে দীপক সুমন আরো বলেন, ‘একটি দৃশ্যে সুলতান সুলেমান হুররাম সুলতানকে চুমু দেন। এখন চুমুর শব্দটা আমরা কীভাবে রেকর্ড করব, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরে আমি আমার নিজের হাতে চুমু দিয়েছিলাম। সেই চুমুর শব্দটাই রেকর্ড করা হয়। মেহবুবাও তাই করেছে। কণ্ঠ দিতে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে আমাদের।’ অন্যদিকে, হুররাম সুলতানের কণ্ঠ যথাযথভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারার জন্য দীপক সুমনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মেহবুবা মিনহাজ, কারণ নির্দেশনা দীপক সুমনের দেওয়া ছিল।
সুলতান সুলেমান
Muhteşem Yüzyıl (তুর্কি)
সুলতান সুলেমান শিরোনামে প্রচারিত বাংলা ডাবিং সংস্করণের পোষ্টার
রচনা: মেরাল ওকেয়
ইয়িল্মায শাহিন
পরিচালক : ইয়াগমুর তাইলান
দুরুল তাইলান
মার্ত বাইকাল
ইয়াগিজ আল্প আকাইদিন
অভিনয়ে:
খালিদ এরগেঞ্চ
মারিয়াম উজারলি
ভাহিদে পারচিন
নুর ফেত্তাহগুলু
ওকান ইয়ালাবিক
নেবাহাত চেহ্রে
কম্পোজার:
ফাখির আতাকগলু
আইতেকিন আতাস
সোনার আকালিন
প্রস্তুতকারক দেশ: তুরস্ক
মূল ভাষা: তুর্কি
মৌসুমের সংখ্যা: ৪
পর্বের সংখ্যা: ১২৯
নির্মাণ:
প্রযোজক: তাইমুর সাভসি
অবস্থান: ইস্তাম্বুল, এদ্রিন, মারমারিস
দৈর্ঘ্য: ৯০-১২০-১২৬ মি.
প্রোডাকশন কোম্পানি: টিমস প্রডাকশন্স
সম্প্রচার:
মূল চ্যানেল: শো টিভি (২০১১)
স্টার টিভি : (২০১২-২০১৪)
ছবির ফরম্যাট ৪৮০আই (এসডিটিভি)
৭২০পি (এইচডিটিভি)
অডিও ফরম্যাট: স্টেরিও
মূল প্রদর্শনী : জানুয়ারি ৫, ২০১১ – জুন ১১, ২০১৪
ক্রমধারা:
উত্তরসূরী মুহতেশেম ইউযিয়েল: কোসেম সুলতান
বহিঃসংযোগ:
(ইংরেজি) ওয়েবসাইট
(ইংরেজি) নির্মাতার ওয়েবসাইট
দৃশ্যপট:
২৬ বছর বয়সে শাসনকালের সূচনালগ্নে সুলাইমান (খালিদ এরগেঞ্চ) মহামতি আলেক্সান্ডারের থেকে শক্তিশালী সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে অটোমান জাতিকে অপরাজেয় জাতি হিসেবে গেেড় তোলার সংকল্প করেন। তার ৪৬ বছরের শাসনকাল জুেেড়, পূর্ব ও পশ্চিমে সমসাময়িক মহান যোদ্ধা ও শাসক হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পেেড়। তার সঙ্গী ইব্রাহিম পাশাকে (ওকান ইয়ালাবিক) সাথে নিয়ে সুলেমান অগণিত যুদ্ধাভিযান জয় করেন। তিনি ইব্রাহিমকে তার ভাই, বন্ধু এবং উপদেষ্টা হিসেবে সম্মানিত করেন। ধারাবাহিকটিতে সুলায়মানের রাজনৈতিক শক্তি একীভূতকরণকে প্রদর্শন করা হয়েছে: ইব্রাহিম পাশাকে রাষ্ট্রের উজির হিসেবে নিযুক্তকরণ, সমস্ত সাম্রাজ্য জুড়ে আইনি শাসন পুনর্বহাল করা, বৈদেশিক কূটনৈতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, এবং যুদ্ধাভিযানের জন্য সেনাবাহিনী প্রস্তুতকরণ, এই সকল ঘটনাই রোমান সাম্রাজ্য এবং অটোমান সাম্রাজ্যের পারস্পারিক সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে ঘটে।
ধারাবাহিকটিতে সম্রাট পরিবারের সদস্যদের পারস্পারিক সম্পর্ক, বিশেষ করে প্রণয়ী দীর্ঘসূত্রিতা এবং দ্বন্দ্বকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। হুররেম সুলতান (মারিয়াম উজারলি) এবং সুলতানের বয়োজ্যেষ্ঠ পুত্রের মাতা মাহিদেরভান সুলতানের (নুর ফেত্তাখগুলু) শত্রুতা এবং ওয়ালিদা হাফসা সুলতানের (নেবাহাত চেহরে) ভূমিকা; সুলতানের সন্তান গর্ভে ধারণ করে সুলতানের প্রিয়পাত্র হওয়ার মাধ্যমে হুররেম সুলতানের উত্থান, এবং সন্তান জন্মের পর প্রিয়পাত্রের অবস্থান হতে পতন এবং পরিণামস্বরূপ করুণার অবস্থানে ফেরত; সুলতানের ভগ্নি হেতিজা সুলতানের (সেলমা এরগেচ) সঙ্গে ইব্রাহিম পাশার প্রণয়, এবং আরও অনেক কিছু।
চরিত্র:
প্রধান চরিত্রসমূহ: অভিনেতা হালিত এরগেঞ্চ মুখ্য চরিত্র সুলেমানের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
অভিনেত্রী নেবাহাত চেহরে অভিনয় করেছেন সুলায়মানের মা হাফসা সুলতানের ভূমিকায়।
শিল্পীর নাম | চরিত্রের নাম | বিবরণ |
খালিদ এরগেঞ্চ | প্রথম সুলাইমান | উসমানীয় সাম্রাজ্যের দশম সম্রাট |
মারিয়াম উজারলি | হুররেম সুলতান (রোক্সেলানা/আলেকজান্দ্রা রুসলানা লিসোভস্কা) | সুলায়মানের বৈধ স্ত্রী হাসেকি সুলতান, এবং সুলতানের পাঁচ সন্তানের মাতা |
ওয়াহিদে পারচিন | ||
নুর ফেত্তাখগ্লু | মাহিদেভ্রান সুলতান | সুলায়মানের স্ত্রী এবং সম্রাটপুত্র মুস্তফার মাতা |
ওকান ইয়ালাবিক | পারগালি ইব্রাহিম পাশা | অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রধান উজির (উজিরে আজম), সুলতান সুলায়মানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু |
নেবাহাত চেহরে | আয়শা হাফসা সুলতান | সুলতান সুলায়মানের মাতা, প্রথম সেলিমের বিধবা স্ত্রী |
সেলমা এরগেচ | হেতিসা (খাদিজা) সুলতান | সুলতান সুলায়মানের বোন, পারগালি ইব্রাহীম পাশার স্ত্রী, উসমান ও হুরিচিহানের মাতা |
মেহমেত গুনসুর | শাহজাদা মুস্তফা | সুলতান সুলায়মানের বয়োজ্যেষ্ঠ ও মাহিদেভরান সুলতানের একমাত্র পুত্র, সিংহাসনের ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারী |
বেরাক তুযুনাতাচ | মেহেরুন্নেসা সুলতান | মুস্তাফার স্ত্রী ও তার সন্তাবের মাতা, বারবারোস হায়রুদ্দীন পাশার কন্যা |
গুরবেয় ইলেরি | শাহজাদা মেহমেদ | সুলায়মান ও হুররেমের প্রথম সন্তান, ইস্মিহান সুলতান‘র স্বামী |
আয়দা আচার মেলিস মুলতুচ পেলিন কারাহান |
মিহরিমা সুলতান | সুলায়মান ও হুররেমের একমাত্র কন্যা, রুস্তম পাশার স্ত্রী |
ওযান গুভেন | রুস্তম পাশা | মিহরিমাহ সুলতানের স্বামী ও অটোম্যান সাম্রাজ্যের প্রধান উজির |
এঙ্গিন ওযতুর্ক | দ্বিতীয় সেলিম | সুলায়মান ও হুররেমের তৃতীয় সন্তান ও পরবর্তীকালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের ১১তম সুলতান, তৃতীয় মুরাদ‘র পিতা |
মেরভে বলুঘুর | নুরবানু সুলতান | শাহজাদা সেলিমের বৈধ স্ত্রী, পরবর্তীতে তৃতীয় মুরাদের মাতা |
আরাস বুলুত ইয়েনেমলি | শাহজাদা বায়জিদ | সুলায়মান ও হুররামের চতুর্থ সন্তান |
তোগলা সারিতাস | শাহজাদা চিহাঙ্গির (জাহাঙ্গীর) | সুলায়মান ও হুররেমের পঞ্চম ও শেষ সন্তান |
দেনিয সাকির | শাহ সুলতান | সুলায়মানের বোন, লুতফি পাশার স্ত্রী, ইস্মিহান সুলতানের মাতা |
মেলতেম চুম্বুল | ফাতিমা সুলতান | সুলায়মানের বোন, কারা আহমেদ পাশার স্ত্রী |
বুরাক অজসিভিত | মাল্কচগ্লু বালি বে | মাজরদমো, আয়বিগে হাতুনের একপাক্ষিক প্রেমী, মিহরিমার একপাক্ষিক প্রেম |
তুঞ্চেল কুরতিয | এবুসসুদ এফেন্দি | ইস্তাম্বুলের কাজি, পরবর্তীতে শায়খুল ইসলাম এফেন্দি |
ফিলিয আহমেত | নিগার কালফা | হারেমের দাসী ও তত্ত্বাবধায়ক, ইব্রাহীমের প্রেমিকা ও সহচর এবং তার কন্যা ইস্মানুরের মাতা |
সেরকান আলতুনরাক | তাস্লিকালি ইয়াহিয়া বে | সমসাময়িক অন্যতম খ্যতিমান কবি, শাহজাদা মুস্তফার বন্ধু ও সমর্থক |
সারপ আক্কায়া | আতমাচা | শাহজাদা মুস্তফার বন্ধু ও সমর্থক এবং পরবর্তীতে শাহজাদা বায়েজিদের |
সেলিম বায়রাক্তার | সুম্বুল আগা | হারেমের প্রধান খোজা ও হুররেম সুলতানের নিকটতম সহচর |
পার্শ্ব চরিত্রসমূহ:
অভিনয়শিল্পীর নাম | চরিত্রের নাম | চরিত্রের বিবরণ | |
সেলেন ওযতুর্ক | গুলফাম খাতুন | সুলায়মানের দ্বিতীয় স্ত্রী, হেতিজা সুলতানের সহচর | |
সেরদার অরচিন | সিনান পাশা | অটোম্যান অ্যাডমিরাল, রুস্তম পাশার ভাই। | |
তোলগা তেকিন | হাইরেদ্দীন বারবারোসা | নৌবাহিনীর প্রধান সেনাপতি হিসেবে অটোম্যান সাম্রাজ্যের একজন অ্যাডমিরাল এবং প্রধান অধিনায়ক পাশা, মুস্তফার সমর্থক, মিহিরুন্নিসার পিতা। | |
মেহমেত ওজঘুর | লুতফি পাশা | শাহ সুলতানের স্বামী এবং আয়াস পাশার মৃত্যুর পর অটোম্যান সাম্রাজ্যের উজিরে আজম ইস্মিহানের পিতা। | |
ইয়েতকিন দিকিঞ্চিলার | কারা আহমেদ পাশা | ফাতমা সুলতানের স্বামী এবং পরবর্তীতে অটোম্যানদের প্রধান উজির। | |
পিনার চাগ্লার গেঞ্ছতুরক | বেয়হান সুলতান | সুলায়মানের বোন, ফেরহাদ পাশার স্ত্রী। | |
সেবিনা তোজিয়া | আফিফা খাতুন | হাজনেদার, হারেমের প্রধান চাকরানী | |
ফেহমি কারারস্লান | আয়াস পাশা | পরিষদের উজির, ইব্রাহীম পাশার মৃত্যুর পর প্রধান উজির। | |
আরিফ এরকিন গুযেলবেয়গ্লু | পিরি মেহমেদ পাশা | পারগালি ইব্রাহীম পাশার পূর্বে উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান উজির | |
মুরাত শাহান | মুস্তফা পাশা | বারবারসের পূর্বের নৌবাহিনীর সেনাপ্রধান, পরবর্তীতে পরিষদের উজির | |
বুরচু ওযবারক | হুরিচিহান সুলতান | হেতিজা ও ইব্রাহীমের কন্যা। বায়াজিদের প্রেমিকা। | |
ইয়াসেমিন আলেন | দাফনা সুলতান | বায়াজিদের স্ত্রী ও তার সন্তানের মা। | |
এচেম চালিক | ইস্মিহান সুলতান | শাহ সুলতান ও লুতফি পাশার কন্যা, মুস্তফার স্ত্রী | |
ফাতিহ আল | মাত্রাকচি নাসুহ | গণিতবিদ, ইতিহাসবিদ, ভূগোলবিদ, ক্ষুদ্র-নকশা নির্মাতা, এবং উদ্ভাবক ও ইব্রাহীমের সহচর | |
আল্মেদা আবাযি | নাজেনিন হাতুন (ভ্যালেরিয়া) | সুলায়মানের উপপত্নী, রাজিয়া সুলতানের মা, নুরবানু সুলতানের প্রাক্তন দাসী। | |
এলিফ আতাকান | রুমাইসা সুলতান | মুস্তফার স্ত্রী | |
সেরানায় আক্তাশ | আয়শা সুলতান | শাহজাদা মুস্তফার উপপত্নী ও তার কন্যা নার্গিসাহর মাতা | |
চান্সু দেরে | ফিরুজা হাতুন (হুমায়রা) | হারেমের রাজকন্যা, সুলায়মানের প্রেমিকা | |
মালিকা আইপেক ইয়ালোভা | ইসাবেলা ফরচুনা | ক্যাসিলের রাজকন্যা, সুলায়মানের প্রেমিকা | |
এফি মেহমেত গুনুস | সুলতানজাদা উসমান | হেতিজা সুলতান ও ইব্রাহিম পাশার পুত্র | |
হাসান কুসুকসেতিন | ইস্কান্দার চেলেবি | অটোম্যান অর্থমন্ত্রী যিনি নিজ অর্থসম্পদের জন্য সুপরিচিত, ইব্রাহিম পাশার অন্যতম শত্রু | |
গোকান চেলেবি | ফেরহাদ পাশা | বেহান সুলতানের স্বামী | |
কিভাঞ্ছ কিলিঞ্ছ | |||
এযগি আইউবুগ্লু | আয়বিগে হাতুন | বেগম হাফসা সুলতানের ভাইঝি, ক্রিমিয়ান রাজকন্যা, বালি বের প্রেমিকা। |
|
আল্প ওইকেন | পোপ সপ্তম ক্লিমেন্ট | রোমান ক্যাথলিক গির্জার সমসাময়িক পোপ | |
সেমা কেচিক | দায়া হাতুন | বেগম হাফসা সুলতানার পরিচারিকা | |
নিহান বুয়ুকাগাচ | গুলশাহ সুলতান | মাহিদেভ্রান সুলতানের পরিচারিকা, পরবর্তীতে হুররেম সুলতানের পরিচারিকা | |
বুরচু গুনার | ফাহ্রিয়া কালফা (ডায়না) | মাহিদেভ্রান সুলতানের পরিচারিকা, পরবর্তীতে হুররেম সুলতানের | |
সাআদেত অকসয় | ভিক্টোরিয়া (সাদিকা হাতুন) | হাঙ্গেরীয় কাউন্টপত্নী, সুলায়মানের শত্রু | |
সায়গিন সয়সাল | মেরচান আগা | শাহ সুলতানের সহচর | |
এনগিন গুনায়দিন | গুল আগা | হুররেম সুলতানের সহচর | |
ইয়ুকসেল ওনাল | শাকের আগা | প্রাসাদের রান্নাঘরের প্রধান বাবুর্চি | |
গুরকান অয়গুন | মিমার সিনান | সুলায়মানের প্রধান স্থপতি | |
ইলদিরিম ফিক্রেত উরাগ | সকল্লু মেহমেদ পাশা | সেমিজ আলী পাশার পর অটোম্যানদের প্রধান উজির। | |
দলুনায় সয়সারত | গ্রাসিয়া মেন্ডেস নাসি | অটোম্যান সাম্রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা এক ইহুদি ধনাঢ্য মহিলা। | |
বুরচু তুনা | গুলনিহাল হাতুন (মারিয়া) | হুররেম সুলতানের বাল্যবন্ধু | |
মেলিসা সোযেন | এফসুন হাতুন (নরা) | হুররাম সুলতানের দাসী, মুস্তফার প্রেমিকা। | |
সেচকিন ওযদেমির | লিও | হুররেম সুলতানের প্রাক্তন বাগদত্তা | |
গামজে দার | ফিদান হাতুন | হুররেমের দাসী, পরবর্তীতে মাহিদেভ্রানের পরিচারিকা। | |
মুজদে উজমান | আরমিন হাতুন | বালি বের প্রথম প্রেম, জশুয়া এফেন্দির কন্যা। | |
বেরগুজার কোরেল | মনিকা তেরেসা | সেনর গ্রিতির বোন। |
বাংলা ভাষায় সম্প্রচার :
বাংলাদেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভি ২০১৫ সালের ১৮ই নভেম্বর থেকে ধারাবাহিকটি বাংলা ভাষায় ডাবিং করে সুলতান সুলেমান নামে সপ্তাহে ৬দিন ব্যাপী সাপ্তাহিক সম্প্রচার শুরু করে। সম্প্রচারের পর থেকে ২০১৫-এর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ নাগাদ এটি দর্শকদের টিআরপি ভোটে বাংলাদেশের টিভি অনুষ্ঠানমালার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে আসে এবং তার দুই সপ্তাহ পর ২০১৬-এর দ্বিতীয় সপ্তাহে এটি সকল অনুষ্ঠানকে পেছনে ফেলে দর্শক জনপ্রিয়তায় প্রথম শীর্ষস্থান দখল করে নেয়।
বাংলা ভাষায় কে কার কণ্ঠ দিয়েছেন:
চরিত্র | বাচিকশিল্পী |
সুলতান সুলেমান | দীপক সুমন[৯] + শিমুল মুস্তাফা |
পারগালি ইব্রাহীম পাশা, আহমেদ পাশা, গুল আগা, নিকো, পুলাক মুস্তফা পাশা, ফার্নিনান্দ, কিরাজ আগা | মরু ভাস্কর |
হুররাম সুলতান, বেহান সুলতান, এলেনি, হেলেনা, এসমা নূর, শিরীন, উসমান (শিশু) | মেহবুবা মিনহাজ বিপা[৯] |
হাফসা সুলতান, মাহিদেভ্রান সুলতান, বায়জিদ (শিশু) | সেজুতি সাগুফতা |
লিও, মাল্কোচগ্লু বালি বে, জশুয়া এফেন্দি, হাসানজান | সামির আহমেদ |
পিরে পাশা, রুস্তম, এবুসসুদ এফেন্দি, বার্বোরাস, কালান্দার,রাজা লুই, পীরে মেহমেত পাশা, ফেরহাত পাশা, মুস্তাফা পাশা, ভ্যাটিকান পোপ | তাপস মৃধা |
শেখর আগা, পোপ ক্লিমেন্ট, টমাসো মচিনিগো, আয়াস পাশা | অরূপ কুণ্ডু |
দায়া হাতুন, হেতিজা সুলতান, ফিরুজা হাতুন | রুবাইয়া মাতিন গীতি |
নিগার কালফা, ভিক্টোরিয়া, আরমিন | জয়শ্রী মজুমদার |
মারিয়া, মিহরিমা সুলতান (শিশু), গুলফাম, জাহাঙ্গীর (শিশু) | নাহিদ আক্তার ইমু |
সুম্বুল আগা, মেহমেত (বড়) | শাহরিয়ার রানা |
মাত্রাকচি নাসুহ | আহমেদ খান হীরক |
বিতর্ক:
কিছু দর্শক ধারাবাহিকটির উপর তুর্কি সুলতানকে “অসম্মানিত”, “অশ্লীল” এবং “ফুর্তিবাজ” হিসেবে চিত্রায়িত করার অভিযোগ তোলেন। তুরস্কের সর্বোচ্চ বেতার ও টেলিভিশন পরিষদ আরটিইউকে দাবি করে যে তারা সিরিজটির বিরুদ্ধে ৭০ হাজার অভিযোগ পেয়েছে এবং একজন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের গোপনীয়তাকে ভুলভাবে প্রদর্শনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সিরিজটিকে সতর্ক করে। তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী রেসেপ তায়্যিপ এরদোয়ান ধারাবাহিকটিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তাদের ইতিহাসকে নেতিবাচক আলোকে প্রদর্শন করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে নিন্দা করেন। ক্ষমতাসীন একে পার্টির একজন সংসদ সদস্য “ওকতায় সারাল” আরও একধাপ এগিয়ে সুলতান সুলেমানের মত সিরিজে “ঐতিহাসিক ব্যক্তিগণকে ভুলভাবে তুলে ধরার” কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবার হুমকি দেন। ইসলামপন্থী এবং জাতীয়তাবাদীদের কিছু ক্ষুদ্র দল স্টুডিওর সামনে প্রতিবাদ মিছিল করে কিন্তু তবুও সিরিজটি আশানুরূপ উচ্চমানের রেটিং সহ সফলভাবে চলমান থাকে।
এলিফ বাতুমান “দ্য নিউ ইয়র্কার” পত্রিকায় লেখেন, “বাহ্যিকভাবে, ‘ম্যাগ্নিফিসেন্ট সেঞ্চুরি’ (সুলতান সুলেমানের ইংরেজি নাম) কে এরদোয়ানের শাসনকালের একটি অন্যতম মৌলিক উৎপাদন বলে মনে হয়। ধন্যবাদ এরদোয়ানের গৃহীত অর্থনৈতিক নীতিকে। তুরস্কের একটি বিকশিত টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে, যা বিস্তৃত সময়ের পরিসর নিয়তে নাটক মঞ্চস্থ করতে সক্ষম, এবং সচেতন মুসলিমদের মাঝে উন্নয়নশীল পরিবারমুখী একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণী রয়েছে যারা ঐতিহাসিক রাজকীয় কোন সাজসজ্জায় তাদের নিজস্ব মূল্যবোধের প্রতিফলন দেখতে উন্মুখ থাকে। আর, এরদোয়ানের পররাষ্ট্র নীতি যেমন প্রাক্তন অটোম্যান অধীন দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করেছে, তেমনিভাবে এই ধারাবাহিকটির বলকান, ককেশিয়া এবং আরব দেশগুলোতেও বিপুল দর্শক অর্জন করেছে যেগুলো সাধারণত অটোম্যান শাসনের প্রতি খুব একটা সন্তুষ্ট বলে পরিচিত নয়। বায়ান্নটি দেশের বিশ কোটিরও বেশি দর্শকের নিকট সম্প্রচারিত ‘ম্যাগ্নিফিসেন্ট সেঞ্চুরি’ এরদোয়ানের প্রধান লক্ষ্যসমূহের একটিতে সাফল্য বয়ে এনেছে। তুরস্কের একটি শক্তিশালী, ধর্মীয় অনিরপেক্ষ, বৈশ্বিকভাবে সম্পৃক্ত সংস্করণ যা একইসাথে আনন্দদায়ক এবং আকর্ষণীয়… এবং এতকিছুর পরেও এরদোয়ান নিজেই এতে সন্তুষ্ট নন। ২০১২ সালের শেষের দিকে, একটি প্রাদেশিক বিমানবন্দর উদ্বোধনকালে তিনি ধারাবাহিকটিতে সুলায়মানের চিত্রায়নের সমালোচনায় কিছু সময় ব্যয় করেন এবং এর পরিচালক ও সম্প্রচারকারীদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বড়মাপের আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেন।
সম্পাদক : কবীর আহমদ সোহেল
নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ আব্দুল হক
ঢাকা অফিস : ২৩৪/৪ উত্তর গোড়ান, খিলগাঁও, ঢাকা ।
সম্পাদক কর্তৃক প্রগতি প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং লিঃ, ১৪৯ আরামবাগ, ঢাকা থেকে মুদ্রিত ও প্রকাশিত।
সিলেট অফিস: ২৩০ সুরমা টাওয়ার (৩য় তলা)
ভিআইপি রোড, তালতলা, সিলেট।
মোবাইল-০১৭১২-৫৯৩৬৫৩, ০১৭১২-০৩৩৭১৫
E-mail: provatbela@gmail.com,
কপিরাইট : দৈনিক প্রভাতবেলা.কম
আমাদের সর্ম্পকে গোপনীয়তা যোগাযোগ
Design and developed by ওয়েব হোম বিডি