অপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ৪:১১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০১৬

সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার :   মৌলভীবাজার জেলায় আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন, নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও জঙ্গি তৎপরতা বন্ধে বিশেষ নিরাপত্তা ও বিশেষ গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার মত যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

১৮ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন। এসব শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল পাওয়া গেলেই পুলিশ ওইসব সামগ্রী জব্দ করে থানায় নিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের মার্কেট, রেল স্টেশন, বাস স্টেশন ও অলিগলিতে অযথা ঘোরাঘুরি করতে পারবে না বলেও জানায় জেলা প্রশাসন।এ বিষয়টি নিশ্চিত করে মৌলভীবাজার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মাদ শাহীন বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধসহ বাড়িতেও এ ব্যাপারে দেখভাল করতে অভিভাবকদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। মোবাইলের পাশাপাশি ফেসবুকেও আসক্তি বাড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। এগুলো শিক্ষার ওপর বিরূপ ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অভিভাবকরা মনে করছেন, সন্তানকে মোবাইল দিয়ে কখন কোথায় আছে খোঁজ নেবেন। সে তাদের মুঠোবন্ধি হয়ে আছে। অভিভাবকরা ভুল মনে করছেন। বরং মোবাইল দিয়ে সন্তানকে তাদের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছেন। তারা একটু খেয়াল করলে দেখতে পাবেন, তার সন্তান যখন মোবাইল ব্যবহার করে সে উদাসীন হয়ে যায়, সে কোথায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করছে পরিবারের কেউ ভাবতেও পারছেন না। হয়তো অভিভাবকরা মনে করছেন, তাদের সন্তানরা মোবাইলে গেম খেলছে। তারা একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবে সে কিসে ডুবে আছে। সে শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, ইমো তে নেই, একটু খেয়াল করলেই দেখবেন সে ইউটিউব, গুগল ইত্যাদি মাধ্যমে প্রবেশ করে। এতে পরিবারের সন্তানরা নিজেদের অজান্তে ভুল পথে পা বাড়ায়, তখন সে পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন  নবীগঞ্জে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৮

তিনি আরও বলেন, মোবাইলের অপব্যবহারের কারণে ছাত্ররা ইভটিজিং, বখাটেপনাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাই সমাজের পরিবেশ শান্ত রাখতে ১৮ বছরের নিচে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহার থেকে দূরে রাখুন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া,রাজনগর, কমলগঞ্জ, জুড়ী, বড়লেখাউপজেলাগুলোতে বিশেষভাবে এনিরাপত্তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।পুলিশের পাশাপাশি, র্যাব, গোয়েন্দা কার্যক্রমে পারদর্শী, ডিএসবি কাজে অভিজ্ঞ ও মেধাবী অফিসারদের নিযুক্ত করে গোপনভাবে জঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অফিসার বা ফোর্স বদলির ক্ষেত্রেও এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাস ও মেসগুলোতে বহিরাগত কোনো ব্যক্তি পাওয়া গেলে তাদের পরিচয় যাচাই বাছাই (পিসিপিআর) করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জামায়াতে ইসলামীর নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংগঠগুলোর ওপরও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রত্যেক রিকশাচালক, সিএনজি চালক, ভাড়াটিয়া, স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক, প্রভাষক, অধ্যাপক, অধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন এলাকায় ওয়ার্ডে বাসা বা বস্তির মালিক তাদের ভাড়াটিয়াদের আইডি কার্ড, মোবাইল নম্বর, ছবিসহ স্থানীয় ইউপি সদস্য, পৌর কাউন্সিলরের মাধ্যমে থানায় জমা দেয়ার জন্য। মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, মোটরসাইকেলের মূল কাগজপত্র চালকের সঙ্গে রাখতে হবে। স্থানীয় এলাকায় মোটরসাইকেলসহ যেকোনো গাড়িতে অপরিচিত লোকের গতিবিধি তাৎক্ষণিক পুলিশকে খবর দেয়ার জন্য।
মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, ‘জঙ্গি দমনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলার সকল উপজেলায় গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিতভাবে সর্বস্তরের জনসাধারণের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ