কোয়ারেন্টিন: ফিরিয়ে নিচ্ছে ছাদ আড্ডfর পুরোনো দিনে

প্রকাশিত: ১১:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০২০

কোয়ারেন্টিন: ফিরিয়ে নিচ্ছে ছাদ আড্ডfর পুরোনো দিনে

মাকসুদা লিসা, ঢাকা : সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে রাজধানীসহ সারাদেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
যে কারনে শহুরে মানুষ ঘরবন্দি। বাড়ীর বাইরে বের হতে পারছেন না নগরবাসী ।
স্কুল কলেজ , অফিস, আদালত, কলকারখানা , সব বন্ধ হয়ে আছে ২৬মার্চ হতে। সরকারী ছুটি চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ।

এদিকে যারা ঘরবন্দি হয়ে আছেন। তারা টানা ঘরে থেকে হাপিত্যেশ করছেন নগরবাসী। হাপিয়ে উঠেছেন।
হঠাৎ করে এমন বন্ধী জীবন।করোনা ভাইরাসের কারনে স্বাভাবিক জীবন যাত্রায় এসেছে পরিবর্তন ।যেনো পরিবার – পরিজন নিয়ে কারাবাস।
অনেকেই প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে বেরিয়ে পড়ছেন বাইরে। প্রধান সড়কে লোক সমাগম  কম হলেও শহরের অলি-গলিতে ঠিকই চোখে পড়ছে তরুণ ও যুবকদের আড্ডা।
সামাজিক দূরত্ব কি ? এর মানে কি এটাই মনে হয় বুঝতে পারছে না সাধারণ মানুষ। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করছেন ছোট রাস্তায়। ভীড় লেগেই আছে মুদি দোকান ও চায়ের ট্রলে।

তবে সবাই যে বাইরে যাচ্ছেন তাও না। সচেতন নগরবাসীরা আছেন ঘরবন্দি। নিয়ম মেনে পালন করছেন হোম কোয়ারেন্টিন।

ঢাকা শহরে বিশাল বিশাল অট্রালিকা। অ্যাপার্টমেন্ট/ ফ্লাট। পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এই স্বল্প পরিসরে আসবাস সাজিয়ে দিনরাত্রি যাপন। আপন নীড়ে পরম আনন্দ।এঘর হতে ওঘর। ঘুরাঘুরি। হাটাহাটি। টেলিভিশন, গেমন্স নিয়ে মাতামাতি।

আরও পড়ুন  ১৪ এপ্রিল থেকে সাত দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা

তবে টানা ঘরবন্দি নগরবাসীর আনন্দ আর ঘরে আটকে থাকছে না। ঘর ছেড়ে উঠে এসেছে অট্ট্রলিকা ও বাসা বাড়ির ছাদে।
শহরের ছাদে ছাদে চলছে শিশু, কিশোর, তরুণ তরুণীদের খেলা ও আড্ডার জায়গা।
ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন কোন কিছু বাদ নেই। চলছে মহা উৎসবে। এমন দৃশ্য অনেক বছর দেখা যায়না শহরে।
একটি ছাদে ভিন্ন ভিন্ন ফ্লাটের বাচ্চা ছেলে মেয়ে, তরুণ তরূনী একসাথে। প্রায় ১৫/২০ জন একই ছাদে খেলছেন। কেউ হাটছেন। কেউ গল্প করছেন। পাশাপাশি হাটা। বসা। খেলার ছলে দূরত্ব ভুলে যাওয়া। মাস্ক ব্যবহারের বালাই নেই।
এক হাত ছুঁয়ে যায় অন্য হাত।এক শরীর ছুঁয়ে যায় অন্য শরীর।এভাবে ছাদে মেলা ও খেলা কতটা যুক্তি যুক্ত। সঠিক ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও হোম কোয়ারেন্টিন মানা হচ্ছে না।
ফলে ছাদে ছাদে খেলা আর আড্ডা বন্ধ না করতে পারলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার আশংকা তো থেকেই যাবে।

ছাদে ছাদে গল্প আড্ডার পুরানো কথাঃএকটা সময় ছিল যখন ঢাকা শহরের বাসা বাড়ীর ছাদে ছাদে আড্ডা চলতো। গল্প , খেলা সব চলতো। কাপড় নাড়তে  বিকেলে ছাদে উঠে ঘুরাঘুরি না করলে ভাল লাগতো না জেনো। এবাড়ীর ছাদ থেকে ওবাড়ীর ছাদে লাফালাফি করতো বাচ্চা ছেলে মেয়েরা। বাড়ীর মেয়ে, বৌ ঝি’ রা ছাদে মাদুর পেতে বসে গল্প করতেন। কাঁথা সেলাই করতেন। কিশোর কিশোরি, তরুণ-তরুণীদের কম বয়সের প্রেম চলতো বাসা বাড়ীর ছাদে ছাদে।
নব্বইয়ের শেষ ভাগে আসতে থাকে পরিবর্তন।সময়ের আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে যেতে থাকে নগর জীবন। গড়ে উঠতে থাকে বড় বড় দৃষ্টি নন্দন মারকেট, শপিংমল, হোটেল রেস্টুরেন্ট, কফি সপ, ফাষ্ট ফুডের দোকান।
রুচি পরিবর্তনে বাসা বাড়ীর ছাদ ছেড়ে গল্প আড্ডা স্থানান্তরিত হয়ে যায় কফি সপে।শপিং মলের ফাস্ট ফুড কর্নারে। তাছাড়া আধুনিক জীবন যাত্রায় ব্যস্ততা বেড়েছে। স্কুল কলেজগামী ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার চাপ বেড়েছে।
স্কুল কলেজের ক্লাস শেষ করে, ছুটতে হয় কোচিং সেন্টারে। পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন কোর্স। সুন্দর জীবন গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে কর্মক্ষেত্র বেছে নিতে সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করতে চান না। মিডিয়ার প্রসার বেড়েছে।তাই ছাদে ছাদে আড্ডা দেবার রেওয়াজ প্রচলনে আসে পরিবর্তন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ