মোহরানা পরিশোধেে টালবাহানা, নারীর প্রতি অমানবিকতা

প্রকাশিত: ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২০

মোহরানা পরিশোধেে টালবাহানা, নারীর প্রতি অমানবিকতা

এম. রাজু আহমেদ♦ বিবাহবিচ্ছেদের সালিশ-বৈঠকে স্ত্রী’র মোহরানা কাটছাঁট করতে যতসব টালবাহানা আর যুক্তি টানা হয়, সেটা অমানবিক, নারীর প্রতি নিষ্ঠুরতা ও লজ্জাজনক বিষয়।

একজন নারী একজন পুরুষকে স্বামী হিসাবে গ্রহণ (কবুল) করার সাথে-সাথেই স্ত্রী হিসাবে ওই নারীকে তাঁর মোহরানা তাঁকেই বুঝিয়ে দেয়া স্বামীর জন্য আবশ্যক।
কবুলের সাথে-সাথে স্ত্রী’র ন্যায্য পাওনা দেনমোহর পরিশোধ না করে, কোনো যুক্তি, কোনো ধরনের নিয়ম-নীতির বাণী সামনে এনে টানাহ্যাঁচড়া করা পবিত্র বিবাহবন্ধনের সাথে চরম প্রতারণা ও অনিয়ম।

স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া দেনমোহর, স্ত্রী তাঁর নিজের প্রয়োজনে ব্যয় করলে, কোথাও দান করলে, এমনকি বাবার বাড়ীতে দিয়ে দিলেও স্বামী কোনো ভাবেই কোনো আপত্তি করিতে পারবেন না। কেননা, দেনমোহরের মালিক শুধুমাত্র স্ত্রী’ই। স্ত্রীর দেনমোহরে স্বামীর কোনো লোভ-লালসা থাকাটাও বিবাহবন্ধনের সাথে সাংঘর্ষিক।

কোনো কারণে যখন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। তখন দেখা যায়, স্ত্রী ও তাঁর বাবার বাড়ীর লোকজন নিরুপায় হয়ে দেনমোহরের জন্য আদালত ও গ্রাম্য মাতব্বরদের
দ্বারে-দ্বারে ঘুরতে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

আরও পড়ুন  দেশের গণতন্ত্র আজ মৃত: মঈন খান

গ্রাম্য সালিশ-বৈঠকে স্ত্রীর বিভিন্ন দোষত্রুটি খোঁজাখুঁজি করে, কাটছাঁট করা হয় দেনমোহর।

মূল বিষয়, স্ত্রী যদি স্বামী ও স্বামীর পরিবার-পরিজনের সাথে চূড়ান্ত অন্যায় করে ফেলে, অথবা যেকোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে,
তাহলে অপরাধী হিসাবে সে তাঁর অপরাধের শাস্তি পাবে। এজন্য তাঁর অপরাধের জন্য তাঁর পাওনা দেনমোহর থেকে তাঁকে কোনো ভাবেই বঞ্চিত করা যুক্তিযুক্ত নয়। সেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এমনকি তাঁর অন্যায়ের কারণে তাঁর মোহরানা কাটছাঁট করার প্রসঙ্গও মুখে আনা অমানবিক। কেননা, দেনমোহরতো তাঁর আগেই পাওয়ার কথা।
দেনমোহরের সম্পর্ক তালাকের সাথে নয়, দেনমোহরের সম্পর্ক বিবাহের সাথে।

তালাকের সময় দেনমোহর পরিশোধ করা হলে,সময়মত স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ না করার জন্য, দেনমোহর পরিশোধের পাশাপাশি ওই স্বামীকে জরিমানা করা ও শাস্তি দেয়া যৌক্তিক।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ