প্রতিবাদ বয়কট মধ্যাহ্ন ভোজে সিলেট তথ্য অফিসের সেমিনার

প্রকাশিত: ১০:৫২ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০২৫

প্রতিবাদ বয়কট মধ্যাহ্ন ভোজে সিলেট তথ্য অফিসের সেমিনার

প্রভাতবেলা প্রতিবেদক : প্রতিবাদ, বয়কট, প্রবন্ধ পাঠ, উন্মুক্ত আলোচনা আর মধ্যাহ্ন ভোজের মধ্য দিয়ে সিলেটে অনুষ্ঠিত হয়েছে  এক ব্যতিক্রম সেমিনার। অনুষ্ঠান স্থলের পাশের কক্ষে প্রধান অতিথি ও সভাপতি উপস্থিত থাকলেও প্রধান অতিথি সেমিনারে অংশ নেননি। সভাপতি শেষ মূহুর্তে অংশ নিয়ে সমাপনি বক্তব্য প্রদান করেন।

২১ মে বুধবার সিলেট সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ব্যতিক্রম এই সেমিনারের আয়োজক আঞ্চলিক তথ্য অফিস সিলেট।  গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ২৪ এর ছাত্রজনতার অভ্যূত্থান ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা শীর্ষক এই সেমিনার ছিল নানা নাটকীয়তায় পূর্ণ।

সেমিনার কাঠামোর একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন ছাড়া কার্যত সেমিনারের কিছুই ছিলনা সরকারি এই আয়োজনে।

সেমিনারের প্রধান অতিথি সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো: রেজা উন- নবী সেমিনার হলের পাশের কক্ষে অবস্থান করলেও সেমিনারে অংশ নেননি।

সেমিনারের সভাপতি সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ সেমিনারের শেষ মূহুর্তে অংশ নিয়ে সমাপনি বক্তব্য রাখেন।

শুরুতেই প্রতিবাদ, বয়কট। সকাল ১১ টায় সেমিনার শূরুর কথা থাকলেও প্রতিবাদ বিতন্ডা শুরু হয় ১১ টা ৩৫ মিনিটে। সেমিনার শুরুর প্রাক্কালে দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক ও সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মূকতাবিস ঊন নূর সেমিনার বয়কটের আহবান জানান। সাথে সাথেই উপস্থিত সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানস্থল থেকে বেরিয়ে আসেন। এসময় উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মমিনুল হক মূকতাবিস ঊন নূরকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকেন, ‘ আমার ভুল হয়ে গেছে,  আপনি যাবেন না’- প্লিজ’। তার অনুরোধে গলেননি মূকতাবিস ঊন নূর।  এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ মূকতাবিস ঊন নূর সহ উপস্থিত সিনিয়র সাংবাদিকদের নিয়ে বসেন। সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবির, সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল কাদের তাপাদার, দৈনিক প্রভাতবেলা সম্পাদক কবীর আহমদ সোহেল, দৈনিক সিলেটের ডাক এর  প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের সহ উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দ বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক ও তথ্য কর্মকর্তা মমিনুল হক স্পষ্ট কোন বক্তব্য না দিয়ে শুধু,  ঠিক আছে,  ভুল হয়ে গেছে এরকম বলতে থাকেন।

আরও পড়ুন  যশোরে মরুর উত্তাপ, ৪৩.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড

সঙ্গতকারণে মূকতাবিস ঊন নূর তার অবস্থানে অনড় থাকেন।প্রায় ঘন্টাখানেক সিলেট সার্কিট হাউজে এই অচলাবস্থা বিরাজমান থাকে।  এক পর্যায়ে বরফ গলে কিছুটা। মূকতাবিস ঊন নূর তার সতীর্থদের সেমিনারে অংশ নেয়ার অনুমতি দেন। কিন্তু তিনি অংশগ্রহণ করবেন না সাফ জানিয়ে দেন।

১২ টা ৪০ মিনিটে সেমিনার শুরু করেন উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মমিনুল হক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের জন্য তিনি আবদুল কাদের তাপাদার কে আহবান করেন। আবারো প্রতিবাদ।  অডিয়েন্স থেকে আওয়াজ উঠে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সেমিনার শুরুর। কিছুটা ছন্দপতন। এবার কুরআন তেলাওয়াতের আহবান জানান মমিনুল।কুরআন তেলাওয়াত করেন আজকের সিলেট ডটকম এর খলিলুর রহমান।

এরপর নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাদের তাপাদার। অতঃপর মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন,সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবির ইকু, দৈনিক প্রভাতবেলা সম্পাদক কবীর আহমদ সোহেল,  অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গুলজার আহমদ হেলাল, সেক্রেটারি সাইফুর রহমান তালুকদার, সিলেটের ডাক এর প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের, বাসস সিলেট ব্যুরো প্রধান সেলিম আউয়াল, আমার দেশ এর সিলেট ব্যুরো প্রধান খালেদ আহমদ, বনিক বার্তার নূর আহমদ, দেশ টিভির খালেদ আহমদ, সিনিয়র সাংবাদিক ফয়ছল আহমদ, জামান মনির প্রমূখ।

আরও পড়ুন  এরশাদের শেষ ইচ্ছা

কি কারণে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ, বয়কট? রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে অনুষ্ঠিত এই সেমিনার।  সেমিনারে প্রকৃত সাংবাদিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের তালিকা দেয়ার জন্য মূকতাবিস ঊন নূর কে অনুরোধ জানান সপ্তাহ খানেক আগে। তাদের অনুরোধ ও চাহিদা অনুযায়ী মূকতাবিস ঊন নূর ৬০ জনের একটি তালিকা প্রদান করেন। এই তালিকার বাইরে কেউ যেন অংশ না নেয় তা-ও তিনি জানিয়ে রাখেন।

অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে অংশগ্রহণকারী সম্পর্কে মূকতাবিস ঊন নূর জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ ৮০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানান। এতে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কেন ২০ জন বাড়ানো হয়েছে জানতে চান।

তথ্য কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সদুত্তর না দিয়ে ‘ ভুল হয়ে গেছে ‘ ‘ বাদ দেন’ এসব কৌশলী কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত মূকতাবিস ঊন নূর সেমিনারে অংশগ্রহণ না করেই চলে যান। বিভাগীয় কমিশনারও প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান না সার্কিট হাউজ ত্যাগ করেন।

আঞ্চলিক তথ্য অফিসের সৌজন্যে মধ্যাহ্ব ভোজের মাধ্যমে ব্যতিক্রমী সেমিনার শেষ হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ