জলকেলীতে মাতোয়ারা মারমা তরুণ-তরুণী

প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

জলকেলীতে মাতোয়ারা মারমা তরুণ-তরুণী
প্রভাতবেলা ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রামে বর্ষবরণের মধ্য দিয়ে রাঙ্গামাটিতে মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই উৎসবে মেতেছে তরুণ-তরুণীরা।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে রাঙ্গামাটি চিং হ্লা মং চৌধুরী মারী স্টেডিয়ামে ‘মৈত্রী পানি বর্ষণ’ জলকেলি বা জল উৎসবের আয়োজন করা হয়।

রাঙ্গামাটির এ জল উৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলার সাতটি উপজেলা থেকে মারমা জনগোষ্ঠীর মানুষ অংশগ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে আয়োজক কমিটি।

সাংগ্রাই জল উৎসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি। প্রধান অতিথি হিসেবে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হওয়ার পরপরই শুরু হয় সাংগ্রাই জল উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। যদিও অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে ১০টায়। সাংগ্রাই জল উৎসবে গেস্ট অব অনার ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি এবং উদ্বোধক ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন- সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য জ্বরতী তঞ্চঙ্গ্যা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান ও পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মারমা সংস্কৃতি সংস্থার (মাসস) সাধারণ সম্পাদক মংসুইউ মারমা ও মাসস উপদেষ্টা চিংকিউ রোয়াজা।

আরও পড়ুন  হেফাজতের হামলায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু
আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা ‘মং’ ঘন্টা বাজিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এরপর জল ফিতা কেটে ও পানি বর্ষণ করে জলকেলি উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। পরে শুরু হয় মারমা নৃত্য শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জলকেলি উৎসবের উদ্বোধনের পর থেকেই চলছে মৈত্রী পানি বর্ষণ। মূলত পানি বর্ষণ করে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় পাহাড়ের এই জনগোষ্ঠীর মানুষ। পানি বর্ষণে অংশগ্রহণ করছে পাহাড়ে সাতটি উপজেলা থেকে আগত বিভিন্ন গ্রামের মারমা তরুণ-তরুণীরা। অনুষ্ঠান বিলম্বে শুরু হওয়ায় তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁসে ফুসেন দর্শনার্থীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত মারমা জাতিগোষ্ঠীর সাংগ্রাই জল উৎসবের মধ্য দিয়েই সাঙ্গ হতে যাচ্ছে পাহাড়ে বর্ষবরণ উৎসবের বর্ণাঢ্য আনুষ্ঠানিকতা। যদিও এই জল উৎসবের পরও বিভিন্ন গ্রামে মারমা পাড়ায় জল উৎসব হয়ে থাকে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বর্ষবরণের এই উৎসবকে সংক্ষেপে ‘বৈসাবি’ বলেও অভিহিত করে থাকেন অনেকে। মূলত ত্রিপুরাদের বৈসুর ‘বৈ’, মারমাদের সাংগ্রাইয়ের ‘সা’ এবং চাকমাদের বিজু, তঞ্চঙ্গ্যাদের বিষু, অহমিয়াদের বিহুর ‘বি’ আদ্যাক্ষরকে একত্রিত করে ‘বৈসাবি’ বলা হয়ে থাকে। বৈসাবি পাহাড়ের কোনো জাতিগোষ্ঠীর একক উৎসব নয়। মূলত নব্বইয়ের দশকের শুরুতে একত্রিতভাবে ‘বৈসাবি’ শব্দটির প্রচলন শুরু হয় রাজনৈতিক দলগুলোর হাত ধরেই।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।

সর্বশেষ সংবাদ